চ্যাটজিপিটি, গোর্ক ও মেটা এআইয়ের মধ্যকার চলমান প্রতিযোগিতা কয়েক মাসের মধ্যেই নতুন মোড় নিতে পারে। আর এর কারণ, চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইয়ের নিজস্ব সোশাল মিডিয়া প্লাটফর্ম চালুর পরিকল্পনা।
ধারণা করা হচ্ছে, এটি এক্স (সাবেক টুইটার), ইন্সটাগ্রাম ও ফেইসবুকের মতো জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মগুলোর বিকল্প হতে পারে।
বিভিন্ন টেক ম্যাগাজিন সূত্রে জানা গেছে, ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্যাম অল্টম্যান বিষয়টি নিয়ে তার কোম্পানির বাইরের কয়েকজন বিশেষজ্ঞের মতামত চেয়েছেন।
তবে এটি অবশ্য একেবারে নতুন কিছু নয়। কারণ স্যাম অল্টম্যান আগে থেকেই একটি নিজস্ব সোশাল মিডিয়া প্লাটফর্ম তৈরির আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। মেটা যখন তাদের এআই মডেলের জন্য একটি আলাদা অ্যাপ চালু করে, তখনই তিনি এক্সে নিজস্ব সোশাল মিডিয়ার আগ্রহের কথা জানিয়েছিলেন।
ওপেনিএআই সত্যিই এমন একটি অ্যাপ তৈরি করলেও সেটি এখনও প্রাথমিক পরিকল্পনা পর্যায়ে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখনও জানা যায়নি এই অ্যাপটি চ্যাটজিপিটিতে যুক্ত হবে কি না। অবশ্য এটা বলা যায়, নতুন ইমেজ জেনারেশন মডেল ও জিবলি ট্রেন্ডের কারণে চ্যাটজিপিটি সম্প্রতি সবচেয়ে বেশি ডাউনলোড হওয়া অ্যাপে পরিণত হয়েছে।
ওপেনএআই নতুন একটি সোশাল মিডিয়া চালু করলে এটি স্যাম অল্টম্যান ও এক্সের প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্কের মধ্যকার প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে আরও তীব্র করতে পারে। কারণ মাস্ক সম্প্রতি ওপেনএআই কিনতে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যা অল্টম্যান প্রত্যাখ্যান করেন।
ধারণা করা হচ্ছে, ইলন মাস্ক যখন এক্স প্ল্যাটফর্মে গোর্কএআই যুক্ত করেন এবং এটি ভাইরাল হতে থাকে। তখন ওপেনএআইয়ের পক্ষ থেকে বিষয়টি পর্যবেক্ষন করা হয়।
অনেকেই মনে করছেন, নিজস্ব একটি অ্যাপ তৈরির পেছনে চ্যাটজিপিটির অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে—নিজস্ব ডেটার উৎস তৈরি করা। প্রতিষ্ঠানটিকে ইতোমধ্যেই অন্য প্ল্যাটফর্মের ডেটা ব্যবহার করে মডেল প্রশিক্ষণের অভিযোগের মুখে পড়তে হয়েছে। তাই তারা হয়তো একটি নতুন অ্যাপের মাধ্যমে নিজস্ব ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ করতে চায়, যা ভবিষ্যতে চ্যাটজিপিটিকে আরও উন্নত করতে সাহায্য করবে।
এই মুহূর্তে এই নতুন অ্যাপ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। কবে এটি চালু হবে, তাও অনিশ্চিত। তবে এটি বাস্তবায়িত হলে, অনেকেই হয়তো আগ্রহ নিয়ে ব্যবহার করে দেখতে চাইবেন।
এমন এক সময় ওপেনএআইয়ের সোশাল মিডিয়া প্লাটফর্মের খবর বাজারে এসেছে, যখন মেটাকে অ্যান্টিট্রাস্ট মামলা সামলাতে হচ্ছে। যদি আদালত রায় দেয় যে, মেটা প্রতিযোগিতা আইন ভঙ্গ করেছে, তাহলে কোম্পানিকে ইন্সটাগ্রাম বিক্রি করতে বাধ্য করা হতে পারে। আর এমন ঘটনা ওপেনএআইয়ের জন্য মেটার বিরুদ্ধে সোশাল মিডিয়া বাজারে প্রতিযোগিতা করা সহজ করে দিতে পারে।
ওপেনএআই ইতোপূর্বে সার্চজিপিটি নামের একটি টুলের মাধ্যমে সার্চ বাজারে প্রবেশ করেছিল। গত বছর ওপেনএআই ওই সার্চ ইঞ্জিনটি স্বতন্ত্র সেবা হিসেবে কিছুদিন প্রদান করার পর সেটিকে চ্যাটজিপিটির সঙ্গে একীভূত করে নেয়।
তথ্যসূত্র : সিলিকন অ্যাঙ্গেল।