আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ট এস আলম গ্রুপকে ঋণ দেওয়ার সঙ্গে জড়িত ইসলামী ব্যাংকের ছয় ডিএমডিসহ মোট আট জন শীর্ষ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
সোমবার (১৯ আগস্ট) ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বরখাস্তের আদেশ দিয়ে চিঠি ইস্যু করে।
বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন- অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক জে কিউ এম হাবীবুল্লাহ, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মো. আকিজ উদ্দিন, মোহাম্মদ সাব্বির, মিফতাহ উদ্দিন, মো. রেজাউল করিম, ড. মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ক্যামেলকো প্রধান তাহের আহমেদ চৌধুরী।
এছাড়া ইসলামী ব্যাংক ট্রেইনিং অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিটের (আইবিটিআরএ) প্রিন্সিপাল মো. নজরুল ইসলামকে বরখাস্ত করে চিঠি দেওয়া হয়।
এখন পর্যন্ত কেবল ইসলামী ব্যাংক থেকেই এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ৭৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ইসলামী ব্যাংকসহ এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন ছয় ব্যাংকের ঋণ বিতরণে সীমা আরোপ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সোমবার এসব ব্যাংককে ৫ কোটি টাকার বেশি ঋণ বিতরণের সীমা আরোপ করে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর বেশি ঋণ দিতে হলে প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে।
যেসব প্রতিষ্ঠানের কাছে মেয়াদোত্তীর্ণ ও সীমাতিরিক্ত ঋণ আছে, তা নগদ আদায় ছাড়া নবায়ন করা করতে পারবে না এই ছয় ব্যাংক।
ইসলামী ব্যাংক ছাড়া অন্য যে ব্যাংকগুলোকে ঋণ বিতরণে সীমা আরোপ করা হয়েছে, সেগুলো হলো- সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও কমার্স ব্যাংক।
তবে এই সীমা আরোপের আগেই ব্যাংকগুলো থেকে মাত্রাতিরিক্ত ঋণ নিয়েছিল এস আলম গ্রুপ।
গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার পদত্যাগ করলে এ পদে বসেছেন অর্থনীতির গবেষক ড. আহসান এইচ মনসুর। এরপরই এস আলমের নিয়ন্ত্রিত ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণের সীমা আরোপের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
ব্যাংকগুলোর কাছে পাঠানো চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, ব্যাংকের সার্বিক আর্থিক অবস্থার অবনমন রোধ ও আমানতকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনাগুলো হলো- কৃষি বিনিয়োগ, চলতি মূলধন ও সিএমএসএমই খাতে ঋণ, প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় দেওয়া ঋণ, নিজ ব্যাংকে রক্ষিত স্থায়ী আমানতের বিপরীতে ঋণ সুবিধা ও শতভাগ নগদ মার্জিনের বিপরীতে ঋণ ও অন্যান্য পরোক্ষ ঋণসুবিধা ছাড়া অন্য কোনও ঋণ সুবিধা দেওয়া যাবে না। এসব ঋণ ও ঋণ সুবিধা ৫ কোটি টাকার বেশি হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন নিতে হবে। মেয়াদোত্তীর্ণ বা সীমাতিরিক্ত বকেয়া ঋণের স্থিতি নগদ আদায় ছাড়া কোনও গ্রাহকের বিদ্যমান ঋণ সুবিধা নবায়ন বা বর্ধিত করা যাবে না। অন্য ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান বিনিয়োগ অধিগ্রহণ করা যাবে না। এছাড়া প্রতিটি ব্যাংককে শীর্ষ ২০ ঋণ গ্রাহকের ঋণ আদায়ের তথ্য মাসিক ভিত্তিতে জমা দিতে হবে।