Beta
শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫

লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় মধ্যপ্রাচ্যে বড় যুদ্ধের শঙ্কা

বৃহস্পতিবার রাতে লেবাননে ভয়াবহ বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল।
বৃহস্পতিবার রাতে লেবাননে ভয়াবহ বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল।
[publishpress_authors_box]

লেবাননে পরপর দুদিন বিভিন্ন ধরনের ডিভাইসে বিস্ফোরণের পর হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের অবস্থান লক্ষ্য করে দেশটিতে দফায় দফায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।

তারবিহীন যোগাযোগের যন্ত্র পেজার এবং ওয়াকিটকি রেডিও, ল্যাপটপ ও গাড়িতে গত মঙ্গল ও বুধবারের বিস্ফোরণে অন্তত ৩৭ জন নিহত এবং সাড়ে তিন হাজার আহত হয়।

আর সর্বশেষ ইসরায়েলি বিমান হামলায় হিজবুল্লাহ এক শীর্ষ কমান্ডারসহ ১৪ জন ও ৬৬ জন আহত হয়েছে। মাঝে হিজবুল্লাহর রকেট হামলায় নিহত হয় দুই ইসরায়েলি সেনা।

এই পরিস্থিতি হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েল সর্বাত্মক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে এর প্রভাব পড়তে পারে গোটা মধ্যপ্রাচ্যেই।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে চালানো এই অভিযানে তাদের যুদ্ধবিমানগুলো দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে দক্ষিণ লেবাননে শতাধিক রকেট-লঞ্চারে আঘাত হানে। ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গত প্রায় এক বছরের মধ্যে লেবাননে এটিই ছিল ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় বিমান হামলা।

লেবাননের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা এনএনএ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত ৯টার পর দক্ষিণ লেবাননে ৫২টিরও বেশি হামলা চালানো হয়েছে। দেশটির তিনটি নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, গত বছরের অক্টোবরে গাজায় সংঘাত শুরুর পর এটিই লেবাননে সবচেয়ে বড় বিমান হামলা।

বৃহস্পতিবার রাতের হামলার জবাবে শুক্রবার ভোর রাত ও সকালে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলে প্রায় দেড়শ রকেট ছুড়ে পাল্টা হামলা চালায়। এতে ইসরায়েলের দুই সেনা নিহত হয়।

এর জবাবে ইসরায়েল ফের শুক্রবার লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে হিজবুল্লাহর ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালায়।

লেবানন জানিয়েছে, এই হামলায় হিজবুল্লাহ একজন কমাণ্ডারসহ অন্তত ১৪ জন নিহত এবং প্রায় ৬৬ জন আহত হয়েছে।

ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, দক্ষিণ বৈরুতের দাহিয়া জেলার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এক হামলায় হিজবুল্লাহর অভিজাত রাদওয়ান ফোর্সের কমান্ডার ইব্রাহিম আকিল নিহত হয়েছেন।

হিজবুল্লাহও শনিবার সকালে নিশ্চিত করেছে যে আকিল নিহত হয়েছেন, তবে তার মৃত্যুর ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, ১৯৮৩ সালে লেবাননে যুক্তরাষ্ট্রের একটি মেরিন ব্যারাকে এক ভয়াবহ বোমা হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন আকিল। এজন্য যুক্তরাষ্ট্র তার মাথার দাম ঘোষণা করেছে ৭০ লাখ ডলার।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছেন, এই হামলা যুদ্ধের একটি নতুন পর্বের অংশ। “আমরা আমাদের নাগরিকদের রক্ষা করার জন্য শত্রুদের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে যাব, এমনকি বৈরুতের দাহিয়াতেও।”

হিজবুল্লাহ ও ইরানের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করেই ইসরায়েলের হামলা

মঙ্গলবার ও বুধবারের ডিভাইস হামলার পর হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসারুল্লহর হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করেই ইসরায়েল এই হামলা চালায়।

বৃহস্পতিবার টিভিতে এক ভাষণে হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ বলেছিলেন, ডিভাইস হামলার মাধ্যমে ইসরায়েল সব শেষ সীমা অতিক্রম করেছে। এই আক্রমণগুলোকে যুদ্ধাপরাধ বা যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।

তিনি আরও বলেন, “ইসরায়েল কড়া প্রতিশোধ ও ন্যায্য শাস্তির মুখে পড়বে। প্রত্যাশিত ও অপ্রত্যাশিতভাবেই এই শাস্তি তাদের ওপর নেমে আসবে।”

সরাসরি হুমকি দিয়ে নাসরুল্লাহ বলেন, “তোমরা আবার চ্যালেঞ্জ করেছ। আমরা আবার চ্যালেঞ্জ নিচ্ছি। আমি নেতানিয়াহু ও গ্যালান্টকে বলতে চাই, তোমরা কখনও লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে না।”

ইরানও বুধবার ইসরায়েলকে বিপর্যয়কর পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল। এতে মধ্যপ্রাচ্যে বড় আকারের আঞ্চলিক যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কা করা হচ্ছে।

লেবানন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেছে, জাতিসংঘ যেন ইসরায়েলকে এই প্রযুক্তি যুদ্ধ ও আগ্রাসন বন্ধ করতে আহ্বান জানায়। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ শুক্রবার এ বিষয়ে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।

কিন্তু বৃহস্পতিবার টিভিতে যখন হিজবুল্লাহ নেতার ভাষণ চলছিল, তখনই লেবাননে ইসরায়েলের যুদ্ধবিমান ঢুকে পড়ে।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে সামরিক কার্যকলাপ বজায় রাখবে ইসরায়েল।” হিজবুল্লাহকে ‘চড়া মূল্য দিতে হবে’ বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দেন।

গ্যালান্ট বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হল ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদে তাদের বাড়িঘরে ফিরে আসার ব্যবস্থা করা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হিজবুল্লাহকে আরও চড়া মূল্য দিতে হবে।”

লেবাননে হামলা চালাতে যাচ্ছে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান।

গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে নিয়মিত পাল্টাপাল্টি বিমান ও রকেট হামলা চলে আসছে। হিজবুল্লাহর হামলার কারণে লেবানন সীমান্তবর্তী ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চল থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ সরে যেতে বাধ্য হয়েছে।

ইসরায়েল এখন তাদের নিজ বাসস্থানে ফেরত পাঠাতে চায়। এজন্য অঞ্চলটিতে হামলা চালানো হবে না— হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে এমন নিশ্চয়তা চায় দেশটি। কিন্তু গাজা যুদ্ধ বন্ধ না হলে সেখানে হামলা অব্যাহত রাখা হবে বলে জানিয়েছে হিজবুল্লাহ।

এমন পরিস্থিতিতে গত মঙ্গল ও বুধবার লেবানন ও সিরিয়ায় হিজবুল্লাহর সদস্যদের ব্যবহার করা তারহীন যোগাযোগযন্ত্র পেজার ও ওয়াকিটকিতে একযোগে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

লেবানন সরকার ও হিজবুল্লাহর অভিযোগ, ইসরায়েলই এসব বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। তবে ডিভাইস হামলা নিয়ে এখনও মুখ খোলেনি ইসরায়েল। তারা অভিযোগ স্বীকার বা অস্বীকার কিছুই করেনি।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া ও জাতিসংঘের প্রতিক্রিয়া

সব পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউস বলেছে, সংকটের কূটনৈতিক সমাধান অর্জন সম্ভব এবং সেটিই জরুরি।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কারিন জ্যঁ-পিয়েরে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত ও উত্তেজনা বৃদ্ধির বিষয়ে ভীত ও উদ্বিগ্ন। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হলে অঞ্চলটির (মধ্যপ্রাচ্য) উত্তেজনা কমে আসবে।

কিন্তু ইরানের সহায়তাপুষ্ট যেকোনও হুমকির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ‘অবিচল’ রয়েছে বলেও জানান তিনি। এছাড়া যুক্তরাজ্যও হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন প্যারিসে বলেছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতির চলমান চেষ্টা আরও কঠিন হয়ে উঠুক তারা সেটা চান না। তাই এই সময় সংযম দরকার।

শুক্রবারের হামলার ব্যাপারে ইসরায়েল আমেরিকাকে কিছু জানায়নি বলে দাবি করেছেন হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে তার জানা নেই। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা যেন লেবানন এড়িয়ে চলেন। বাইডেন প্রশাসন এই অঞ্চলে আর সংঘাত চায় না।

এর আগে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, ‘ইসরায়েলের নিজেদের রক্ষার যে অধিকার রয়েছে, তার পক্ষে আমরা থাকব। তবে এই সংঘাত কোনো পক্ষ বাড়িয়ে দিচ্ছে- এমনটি আমরা দেখতে চাই না।’

বার্তা সংস্থা এপির খবরে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতার মধ্যে গত বছর থেকে এ অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মিত্রদের সুরক্ষা দেওয়া এবং নিজেদের ওপর হামলা ঠেকাতে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৪০ হাজার সেনা, অন্তত এক ডজন যুদ্ধজাহাজ ও বিমানবাহিনীর চার স্কোয়াড্রন যুদ্ধবিমান মোতায়েন করা রয়েছে।

জাতিসংঘ উভয় পক্ষকে ‘সর্বোচ্চ সংযম’ অবলম্বনের আহ্বান জানিয়ে শুক্রবার বলেছে, তারা এতে ‘খুবই উদ্বিগ্ন’।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তর থেকে এএফপি জানায়, জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেছেন, ‘আমরা অবশ্যই আজ বৈরুতে যে মারাত্মক হামলা দেখলাম তা-সহ ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন…। আমরা সব পক্ষকে অবিলম্বে উত্তেজনা প্রশমিত করার আহ্বান জানাচ্ছি। সবাইকে সর্বোচ্চ সংযম অবলম্বন করতে হবে।’

এদিকে, সেন্ট পিটার্সবার্গে ইউরেশিয়ান উইমেন্স ফোরামের সাইডলাইনে বিষয়টি নিয়ে নিজ দেশের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভাও।

তিনি বলেন, “লেবাননে বিশ্ব ইতিহাসে নজিরবিহীন সন্ত্রাসী সাইবার হামলা-পরবর্তী বিপজ্জনক ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে মস্কো গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। দেশটির জনগণের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছি।”

লেবাননে বড় আকারের সামরিক অভিযান শুরু হলে তা পুরো মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তার জন্য বিধ্বংসী পরিণতি ডেকে আনবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন মারিয়া জাখারোভা।

কোনদিকে যেতে পারে পরিস্থিতি

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৬ সালে যুদ্ধের পর থেকে এবারই ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উত্তেজনা বিরাজ করছে। সীমান্তের উভয় পাশে হাজার হাজার মানুষকে ঘরবাড়ি ছেড়ে যেতে হয়েছে।

এতদিন তাদের সংঘাত মূলত সীমান্তে বা তার কাছাকাছি অঞ্চলে সীমাবদ্ধ ছিল, কিন্তু এই সপ্তাহের সংঘাত উদ্বেগ বাড়িয়েছে যে তা আরও বেশি অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং আরও তীব্র হতে পারে।

ইসরায়েল বলেছে, হিজবুল্লাহর সঙ্গে তাদের বিরোধ, হামাসের বিরুদ্ধে গাজার যুদ্ধের মতোই, ইরানের সঙ্গে একটি বৃহত্তর আঞ্চলিক সংঘর্ষের অংশ। হামাস ও হিজবুল্লাহসহ সিরিয়া, ইয়েমেন ও ইরাকেও ইসরায়েলবিরোধী সশস্ত্র সংগঠনগুলোর পৃষ্ঠপোষকতা করে ইরান। দেশটি এর নাম দিয়েছে ‘প্রতিরোধের অক্ষ’।

এর আগে গত জুলাইয়ের শেষদিকে ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলের গুপ্ত হত্যার শিকার হন হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া। তার কয়েক ঘণ্টা আগে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে বিমান চালিয়ে ইসরায়েল সিনিয়র হিজবুল্লাহ কমান্ডার ফুয়াদ শুকুরকেও হত্যা করে।

সিরিয়ায় ইরানি দূতাবাসে গত এপ্রিলে ইসরায়েল বিমান হামলা চালিয়ে ১৩ ইরানিকে হত্যা করে। এরপর ইরান ও ইসরায়েলের শত্রুতা চরমে উঠে। ওই হামলার পর প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইসরায়েলে সরাসরি হামলা করে ইরান।

এরপর ইসমাইল হানিয়া ও ফুয়াদ শুকুরকে হত্যার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে বৃহত্তর আঞ্চলিক যুদ্ধ শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল। শুক্রবার লেবাননে ইসরায়েলের বিমান হামলায় সেই আশঙ্কা আরও বাড়ছে।

ওয়াশিংটন টাইমসের এক নিবন্ধে বলা হয়, পরিস্থিতি এখন বদলে যাচ্ছে; বিশেষ করে, লেবাননে ইলেকট্রনিক ডিভাইস হামলার পর সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা আরও তীব্রতর হয়েছে। উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

বর্তমান পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অবসরপ্রাপ্ত ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন, ইসরায়েল এখন যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। লেবানন সীমান্তে সামরিক বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি তারই প্রতিফলন। এরই মধ্যে সামরিক বাহিনীর একটি শক্তিশালী ডিভিশনকে সেখানে পাঠানো হয়েছে। এই ডিভিশনের সেনারা এর আগে গাজায় যুদ্ধ করেছে।

ওয়াশিংটন টাইমসের নিবন্ধে বলা হয়, ইসরায়েলের সাধারণ মানুষও হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে আরও আক্রমণাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণের পক্ষে। সাম্প্রতিক কিছু জরিপে দেখা গেছে, হিজবুল্লাহ প্রশ্নে বেশির ভাগ ইসরায়েলি উত্তরদাতা তীব্র সামরিক পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন। তারা চাইছেন, হিজবুল্লাহর বিষয়টি যত দ্রুত সম্ভব নিষ্পত্তি হোক।

হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি ২০০৬ সালের সংঘাতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। সেবার দুই পক্ষের মধ্যে ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের পর হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা তাদের নিরাপত্তার জন্য উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রকেট ও উন্নত ড্রোনের মজুত গড়ে তোলে। নিজেদের সামরিক সক্ষমতাও আগের চেয়ে অনেক বাড়িয়েছে তারা।

অন্যদিকে ইসরায়েলও আগ্রাসী।এই অবস্থায় যদি কোনও কূটনৈতিক সমাধানে পৌঁছানো না যায়, তবে উভয় পক্ষের মধ্যে আরেকটি বড় যুদ্ধ বেধে যেতে পারে। এতে পুরো মধ্যপ্রাচ্যেও যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে।

কারণ ইসরায়েল ও লেবানন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে ইরান হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকবে না বলেই অভিমত বিশ্লেষকদের।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত