ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধের এক বছর পূর্তিতে হামাসের ক্ষয়ক্ষতির চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি নিজেদের অর্জন ও সেনা হতাহতের হিসাব দিয়েছে ইসরায়েল।
দেশটির সেনাবাহিনীর বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, গত এক বছরে গাজায় ৪০ হাজারের বেশি লক্ষ্যবস্তুতে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ধ্বংস করেছে হামাসের ১ হাজার রকেট নিক্ষেপন কেন্দ্র।
এই সময়ে তারা গাজায় হামাসের ৪ হাজার ৭০০টি সুড়ঙ্গের সন্ধান পাওয়ার কথা জানিয়েছে।
ইসরায়েলি সেনবাহিনী জানিয়েছে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে এখন পর্যন্ত তাদের ৭২৬ জন সেনা নিহত হয়েছে। তবে এর মধ্যে ৩৮০ জন ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে চালানো হামাসের হামলায় প্রাণ হারায়। বাকি ৩৪৬ জন নিহত হয় ২৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি স্থল অভিযান শুরুর পর।
এছাড়া গাজায় সামরিক অভিযান চলাকালে দুর্ঘটনায় নিহত হন ৫৬ জন সেনা। তবে কী ধরনের দুর্ঘটনায় এই সেনারা প্রাণ হারায়, তা খোলাসা করা হয়নি।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলছে, গাজায় যুদ্ধ করতে গিয়ে এক বছরে তাদের ৪ হাজার ৫৭৬ জন সেনা আহত হয়েছে।
যুদ্ধ শুরুর পর রিজার্ভ ফোর্স থেকে (যারা সেনাবাহিনীর নিয়মিত সেনা নন, তবে যখনই প্রয়োজন পড়বে, সেনাবাহিনীর ডাকে সাড়া দেবেন) ৩ লাখ সদস্য নিয়মিত বাহিনীতে যোগ দিয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। এই ৩ লাখ সৈন্যের ৮২ শতাংশ পুরুষ ও ১৮ শতাংশ নারী। তাদের প্রায় অর্ধেকের বয়স ২০-২৯ এর মধ্যে।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গত এক বছরে গাজা থেকে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে এক বছরে ১৩ হাজার ২০০টি রকেট ছোড়া হয়। এই সময়ে লেবানন থেকে আরও ১২ হাজার ৪০০টি, সিরিয়া থেকে ৬০টি, ইয়েমেন থেকে ১৮০টি ও ইরান থেকে ৪০০টি রকেট নিক্ষেপ করা হয়।
লেবাননে হামলার বিষয়ে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে, লেবাননে আটশর বেশি ‘সন্ত্রাসীকে’ হত্যা করেছে তারা। ৪ হাজার ৯০০টি লক্ষ্যে আকাশপথে এবং প্রায় ৬ হাজার লক্ষ্যে স্থলপথে হামলা চালানো হয়।
আর এক বছরে পশ্চিম তীর ও জর্ডান উপত্যকা থেকে ৫ হাজারের বেশি সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করে ইসরায়েল।
তারা জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর গাজায় হামাসের ৮ জন ব্রিগেড কমান্ডার, প্রায় ৩০ জন ব্যাটালিয়ন কমান্ডার ও ১৬৫ জন কোম্পানি কমান্ডার ইসরায়েলের হাতে প্রাণ হারান।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালায় হামাস। এতে ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। জিম্মি করা হয় প্রায় আড়াইশো ইসরায়েলিকে। এর প্রতিক্রিয়ায় সেদিনই গাজায় আক্রমণ করে ইসরায়েল। শুরু হয় যুদ্ধ, যা এখনও চলছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব বলছে, ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর এখন পর্যন্ত প্রায় ৪২ হাজার ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে।
