গাজায় ফিলিস্তিনি গণহত্যার ঘটনায় ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করে ইসরায়েলি পাসপোর্টধারীদের নিজের ভূ-খণ্ডে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মালদ্বীপ।
সারাবিশ্বের পর্যটকদের কাছে প্রিয় দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির প্রেসিডেন্ট কার্যালয় বুধবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে বলে সিএনএনের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার সংসদে পাস হওয়ার পর মালদ্বীপের অভিবাসন আইনে একটি সংশোধনী অনুমোদন করেছেন প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জু।
এই সংশোধনী দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির অভিবাসন আইনে নতুন বিধান যুক্ত করেছে, যাতে স্পষ্টভাবে ইসরায়েলি পাসপোর্টধারীদের মালদ্বীপে প্রবেশে নিষেধের কথা বলা আছে।
প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর কার্যালয় থেকে পাঠানো ওই বিবৃতিতে বলা হয়, “ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের চলমান নৃশংসতা ও গণহত্যার অব্যাহত কার্যকলাপের বিরুদ্ধে মালদ্বীপ সরকারের দৃঢ় অবস্থান এই সংশোধনীর মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়।”
মুইজ্জু সরকারের এই পদক্ষেপের বিষয়ে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং কলম্বোয় দেশটির কনস্যুলার কার্যালয় কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েলে হামলার প্রতিক্রিয়ায় দেশটি সেদিনই গাজায় যে সামরিক অভিযান শুরু করে, তা আজও চলছে।
তাদের অভিযানে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছে ৬৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি, যাদের মধ্যে রয়েছে অনেক শিশু।
এই ১৮ মাসে গাজায় ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর থেকে শুরু করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, শরণার্থী শিবিরে বোমা হামলা করে পুরো জনপদ ধুলায় মিশিয়ে দিয়েছে ইসরায়েল।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগ আনলেও তা অস্বীকার করে যাচ্ছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
তার সরকারের ভাষ্য, ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলছে এবং ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর আত্মরক্ষার অধিকার তাদের রয়েছে।
গাজায় নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে নৃশংস কর্মকাণ্ড সংঘটিত করার অভিযোগে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মামলা করে দক্ষিণ আফ্রিকা।
এছাড়া গত বছরের ডিসেম্বরে গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা পরিচালনার ঘটনায় ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
বুধবার দেশের অভিবাসন আইনে সংশোধনী অনুমোদন দেওয়ার আগে ২০২৪ সালের জুনে মন্ত্রিসভার সুপারিশের ভিত্তিতে ইসরায়েলি পাসপোর্টধারীদের মালদ্বীপে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার প্রস্তাব দেন প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু।
এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের নাগরিকদের অপরূপ সমুদ্র সৈকত ও রিসোর্টের জন্য পরিচিত দেশটিতে না যাওয়ার পরামর্শ দেয়।