স্পেন ১ : ০ ইতালি
ছেলেদের টেনিস র্যাঙ্কিংয়ে এখন ১ নম্বরে ইতালির ইয়ানিক সিনার আর দুইয়ে স্পেনের কার্লোস আলকারাজ। ইতালি-স্পেন ম্যাচের আগে সেই সিনার মজা করে বলেছিলেন, ‘‘ইউরোয় ইতালি যদি স্পেনকে হারায় তাহলে প্রিয় বন্ধু আলকারাজকে একটা চিঠি লিখব আমি।’’
নিশ্চয়ই সেটা খোঁচা দিয়ে। সেই চিঠি আর লেখা হল না সিনারের। রিকার্দো ক্যালাফিওরির আত্মঘাতী গোলে ১-০ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্পেন। সে সঙ্গে টানা দুই জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শেষ ষোলোর টিকিটও পেল তারা।
গত ইউরোর সেমিফাইনালে স্পেনকে টাইব্রেকারে হারিয়েছিল ইতালি। এবার স্পেন নিল প্রতিশোধ। ম্যাচটা মহাযুদ্ধ বলা হলেও একচ্ছত্র রাজত্বই করেছে স্পেন।
সবশেষ ১১ ম্যাচে স্পেনের বিপক্ষে নির্ধারিত ৯০ মিনিটে কেবল একটি জয়ই পেয়েছিল ইতালি। এই পরিসংখ্যানের মতোই ম্যাচ জুড়ে বিবর্ণ ছিল ইতালি। প্রথম ৪৪ মিনিট পর্যন্ত পোস্টে শট নেওয়া দূরে থাক, স্পেনের বক্স থেকেও শট নিতে পারেনি ইতালি।
৪৫তম মিনিটে ফেদরিকো কিয়েসার একটা শট যায় অনেক বাইরে দিয়ে, বর্তমান ইউরো চ্যাম্পিয়নদের প্রচেষ্টা বলতে এটুকুই। বাকি গল্পটা স্পেনের। বিরতির আগে যে তারা ৩-৪ গোলে এগিয়ে যায়নি, এটা তাদের দুর্ভাগ্য।
দ্বিতীয় মিনিটেই গোল পেতে পারত স্পেন। নিকো উইলিয়ামসের ক্রস ভালো জায়গায় ফাঁকায় পেয়েও দুর্বল হেডে সুযোগ নষ্ট করেন পেদ্রি। দশম মিনিটে এর চেয়েও ভালো জায়গায় বল পেয়েও সুযোগ নষ্ট করেন নিকো উইলিয়ামস। আলভারো মোরাতার ক্রসে নেওয়া উইলিয়ামসের হেড অবিশ্বাস্যভাবে যায় বাইরে দিয়ে।
২৪ ও ২৫ এই দুই মিনিটে জিয়ানলুইজি দোন্নারুমার অসাধারণ সেভ বাঁচায় ইতালিকে। লামিনে ইয়ামালের পাস ছয় গজ বক্সে পেয়ে শট নিলেও পা দিয়ে ঠেকান দোন্নারুমা। বয়স ১৬ বছর হলেও পরিপক্ক মস্তিষ্কে ইতালির অর্ধে ত্রাস হয়েই ছিলেন ইয়ামাল।
পরের মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া ফাবিয়ান রুইজের বুলেট শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে সেভ করেন গত ইউরোর সেরা এই খেলোয়াড়। ৪১ মিনিটে আবারও রুইজকে হতাশ করেন এই গোলরক্ষক।
স্পেন অবশেষে গোলের দেখা পায় ৫৫ মিনিটে। গোলটা রিকার্দো ক্যালাফিওরির আত্মঘাতি হলেও স্পেনের যে ক্রমাগত চাপ, তার ফসল। নিকো উইলিয়ামসের ক্রসে হেড করেছিলেন আলভারো মোরাতা, যা দোন্নারুমার হাত ছুঁয়ে আসে রিকার্দোর সামনে। এরপর তার হাঁটুতে বল লেগে জড়িয়ে যায় জালে।
৬০ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া ইয়ামালের শট অল্পের জন্য যায় বাইরে দিয়ে। পিছিয়ে পড়া ইতালি তখনও ছন্নছাড়া এক দল, যাদের রক্ষণ-মাঝমাঠ কিংবা আক্রমণ বলে ছিল না কিছু। ৭০ মিনিটে নিকো উইলিয়ামসের শট বারে না লাগলে ব্যবধান ২-০ হতেই পারত স্পেনের। এরপর সমতা ফেরাতে স্পেনের বক্সে আক্রমণ শানাতে থাকে ইতালি।
৭৪ মিনিটে ফ্রিকিক থেকে পোস্ট উদ্দেশ্য করে দ্বিতীয় শট নিতে পারে তারা। তবে লরেঞ্জোর শট পরীক্ষা নিতে পারেনি স্প্যানিয়ার্ড গোলরক্ষক উনাই সিমিওনির। ৮৫ মিনিটে প্রথম কর্নার পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি সেটা।
ইনজুরি টাইমের প্রথম ও দ্বিতীয মিনিটে পেরেস একা পেয়ে গিয়েছিলেন ইতালিয়ান গোলরক্ষক দোন্নারুমাকে। দুইবারই অসাধারণ সেভে ব্যবধান বাড়াতে দেননি তিনি। ম্যাচ জুড়ে পোস্টে ২০টা শট নিয়ে লক্ষ্যে ৯টা রেখেছিল স্পেন। সেখানে ইতালির লক্ষ্যে শট কেবল ১টি। দোন্নারুমা সেভ করেছেন ৮টি আর এমেরি ১টি।
প্রথম ম্যাচে স্পেন ছিন্ন ভিন্ন করে দিয়েছিল ক্রোয়েশিয়াকে। স্পেনকে হারাতে ‘কাতানেচিও’ ফুটবল খেলার কথা বলেছিলেন ইতালিয়ান কোচ লুসিয়ানো স্পালোত্তি। প্রয়োজনে ময়লা করতে চেয়েছিলেন ‘জর্জিও আরমানি স্যুট’। স্পেন শুধু কাপড় ময়লাই করে দেয়নি, ছিড়েও দিয়েছে ইতালির!