নিউজিল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আডার্ন অবশেষে বিয়ে করেছেন। নিজের দীর্ঘদিনের সঙ্গী ক্লার্ক গেফোর্ডয়ের সঙ্গেই শনিবার গাঁটছড়া বেঁধেছেন তিনি। ৪৭ বছর বয়সী গেফোর্ড পেশায় টেলিভিশন উপস্থাপক। এই দম্পতির নেভ টে আরোহা আডার্ন গেফোর্ড নামে পাঁচ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে।
২০১৯ সালের মে মাসে ক্লার্কের সঙ্গে বাগদান সেরেছিলেন জাসিন্ডা। ২০২২ সালের প্রথম দিকে বিয়ের সময়ও নির্ধারণ করেছিলেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি বাধ সাধে বিয়েতে। একসঙ্গে ১০০ জনের বেশি মানুষ জড়ো হতে পারবে না— তার সরকারের করা এমন নিয়মের কারণেই সেবার বিয়ে পিছিয়ে দিতে বাধ্য হন তিনি। সে সময় তিনি বলেছিলেন, ‘‘জীবন এমনই। নিউজিল্যান্ডে অন্য মানুষের থেকে ভিন্ন কেউ নই আমি।’’
কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলায় জাসিন্ডা ‘গো হার্ড, গো আর্লি’ নীতি অবলম্বন করেছিলেন। এই নীতির ব্যাখ্যায় তিনি বলেছিলেন, ‘‘যখনই নিউজিল্যান্ডে করোনা ফিরে আসবে, তখনই একে নির্মূল করতে হবে।’’ জাসিন্ডার এই নীতির কারণে বিশ্বে কোভিডে মৃত্যুর হার সবচেয়ে কম ছিল নিউজিল্যান্ডে।
৪৩ বছর বয়সী জাসিন্ডা ২০১৭ সাল থেকে ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে নেতৃত্বের ক্ষেত্রে নারীদের জন্য বিশ্বের আইকনে পরিণত হন। এমনকি দ্বিতীয় নারী হিসেবে তিনি নিজের মেয়েকে নিয়ে জাতিসংঘের বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন।
২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন জাসিন্ডা। পার্লামেন্টে দেওয়া নিজের শেষ বক্তৃতায় গেফোর্ডের উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, ‘‘অবশেষে চলো আমরা বিয়ে করি।’’ এতে শিগগিরই তার বিয়ের পিঁড়িতে বসার ইঙ্গিত মেলে। তবে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব ছাড়ার বছরখানেক পর অবশেষে নিজের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারলেন জাসিন্ডা।
রাজধানী ওয়েলিংটন থেকে প্রায় ৩১০ কিলোমিটার উত্তরে নিউজিল্যান্ডের উত্তর দ্বীপের পূর্ব উপকূলে ক্র্যাগি রেঞ্জ ওয়াইনারিতে হকের বে-তে এই দম্পতি বিয়ে সম্পন্ন করেন। জাসিন্ডার এক মুখপাত্র ই-মেইলের মাধ্যমে রয়টার্সকে এই তথ্য জানান।
বিয়ের ছবিতে দেখা যায় হাস্যোজ্জ্বল জাসিন্ডাকে। তিনি বিয়েতে সাদা হ্যাল্টার নেল ড্রেস পরেন। অন্যদিকে গেফোর্ড পরেন কালো রঙের স্যুট।
নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, বিয়েতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দেশটির বর্তমান বিরোধী দলীয় নেতা ক্রিস হিপকিন্স।