নাহিদ রানার গতি নিয়ে ইয়ান বিশপ বলেছেন ‘বাংলাদেশ এক্সপ্রেস’। আর জাকের আলির দৃঢ়তা, আগ্রাসন ও রক্ষণে ‘ক্যারিবিয়ান ক্রিকেট পডকাস্টের’ মনে হয়েছে ব্রায়ান লারার কথা।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটাররা যখন ফিরছেন, জাকের তখন পাল্টা আক্রমণে নাভিশ্বাস ছোটাচ্ছেন ক্যারিবিয় বোলারদের। দলের লিডটা বাড়িয়ে নিয়েছেন ৫ ছক্কা ৮ বাউন্ডারিতে ১০৬ বলে ৯১ রানের ইনিংসে। ব্রায়ান লারাও এরকম বিপদের সময় আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে হাল ধরতেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের।
জাকেরের মানসিকতাও ছিল একই রকম। শামার, আলজারি, রোচ, সিলসের মতো পেসারদের শাসন করেছেন জ্যামাইকায়। তাই লারার সঙ্গে মিলিয়ে ‘ক্যারিবিয়ান ক্রিকেট পডকাস্ট’ জাকের ৭৬ রানে অপরাজিত থাকার সময় লিখেছিল, ‘‘বাংলাদেশের হয়ে সেরা সময়ের লারার মতো ব্যাট করছে জাকের।’’
জাকেরকে ভাবা হতো টি-টোয়েন্টি বিশেষজ্ঞ। সেই জাকের টেস্টেও হয়ে উঠেছেন আস্থার প্রতীক। এমন মহাকাব্যিক কিছু যে তিনি করতে পারেন সেটাই বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম লিখেছেন ইনস্টাগ্রামে, ‘‘টেস্ট ক্যাপটা তোমাকে দেওয়ার সময় বলেছিলাম, দেশের প্রতিনিধিত্ব করার এই মূল্যবান ক্যাপটা তোমাকে দিয়ে আনন্দের সঙ্গে সম্মানবোধও করছি। আমি জানি তুমি মহাকাব্যিক কিছু করবে…। আশা করছি এটা ম্যাচ জেতানো ইনিংস হবে।’’
সেটাই হয়েছে। তার ইনিংসে অবিস্মরণীয় টেস্ট জয় পেয়েছে বাংলাদেশ, যা ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে বাংলাদেশের তৃতীয়। বিদেশে আর কারও মাটিতে এত বেশি টেস্ট জয়ের রেকর্ড নেই বাংলাদেশের। এর অন্যতম নায়ক সিরিজের সবচেয়ে বেশি ১৭৬ রান করা জাকেরের।
ওয়েস্ট ইন্ডিজে তাকে লারার মতো আগ্রাসী মনে করা হলেও দিন শেষে জাকের আবেগি। নিজের ফেইসবুকে সবার আগে প্রয়াত বাবাকে স্মরণ করলেন তিনি।
জাকের লিখেছেন, ‘‘তখন আমার বয়স ১১। ২০০৯ সালের সেই সিরিজ এর একটা ম্যাচও আমি মিস করি নাই,সারারাত জেগে বাংলাদেশ এর খেলা দেখতাম । আব্বা ভোর রাতে উঠে দেখে আমি খেলা দেখছি। অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো ,কিন্তু কোনো বকা দিলনা। ১৫ বছর পর একই সিরিজে আমি বাংলাদেশ এর হয়ে খেলছি। আব্বা বেঁচে থাকলে হয়তো রাতজেগে খেলা দেখতো।’’
এরপর নিজের ইনিংসটা উৎসর্গও করেছেন বাবাকে, ‘‘যাই হোক, এটা তোমার জন্য বাবা।’’