ঐতিহ্যবাহী লর্ডসে খেলাটাই সৌভাগ্যের। সেখানে ক্রিকেটের মর্যাদার এই ভেন্যুতে অভিষেক বিশেষ কিছু। জেমস অ্যান্ডারসনের মনিমুক্তোর মতো জ্বলজ্বলে ক্যারিয়ারের শুরুটা সেখানে। শেষটাও তাই। ২০০৩ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই ভেন্যুতে টেস্ট অভিষেক অ্যান্ডারসনের। ২১ বছর পর থামলেন সেখানেই।
অভিষেক ইনিংসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫ উইকেট নিয়ে জানান দিয়েছিলেন নিজের আগমনি বার্তা। শেষ টেস্টে দুই ইনিংসে ১২ উইকেট নিয়ে আলোটা কাড়েন গাস অ্যাটকিনসন। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বিদায় বেলাতেও নিজের জাতটা চেনালেন অ্যান্ডারসন। দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছেন ৩ উইকেট। প্রথম ইনিংসে শিকার ১ উইকেট।
অ্যান্ডারসনের বিদায়ী টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ইনিংস ও ১১৪ রানের বড় ব্যবধানেই হারাল ইংল্যান্ড। অধিনায়ক বেন স্টোকস আগেই জানিয়েছিলেন অ্যান্ডারসনকে বিদায়ী উপহার দিতে চান তারা। বড় জয়ে সেটাই দিল তারা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ইনিংসে ১২১ রানের জবাবে ইংল্যান্ড করেছিল ৩৭১। আজ ক্যারিবীয়রা দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট ১৩৬ রানে। অ্যান্ডারসন ফেরান অধিনায়ক ক্রেগ ব্রাথওয়েট, অ্যালিক আথানজে ও জোশুয়া ডা সিলভাকে।
বিদায়ী ম্যাচে অ্যান্ডারসনকে গার্ড অব অনার দিতে চেয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেই পরিকল্পনা থাকলেও অ্যান্ডারসন নামার সময় শোয়েব বশিরের রান আউটের জন্য খেলোয়াড়রা চলে গিয়েছিলেন বাউন্ডারি লাইনের কাছে। তাই গার্ড অব অনার দেওয়া হয়নি গতকাল।
আজ অবশ্য ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ দুই দলই গার্ড অব অনার দেয় তাকে। ম্যাচ শেষে দুই দলের খেলোয়াড়রা দাঁড়িয়ে জানায় অভিবাদন। গ্যালারিতে ছিলেন অ্যান্ডারসনের পরিবারের সদস্যরা। তাদের চোখ দিয়ে ঝড়ছিল পানি। দর্শকরাও অভিবাদন জানান এই কিংবদন্তিকে।
১৮৮ টেস্টের ক্যারিয়ারে অ্যান্ডারসনের উইকেট ৭০৪টি, টেস্ট ইতিহাসে যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। আর পেসারদের মধ্যে সর্বোচ্চ। মুত্তিয়া মুরালিধরনের উইকেট ৮০০টি ও শেন ওয়ার্নের ৭০৮টি।
চাইলে ওয়ার্নকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারতেন অ্যান্ডারসন। কিন্তু এই কিংবদন্তি থামতে চেয়েছিলেন লর্ডসে। ঐতিহ্যবাহী লর্ডসের মর্যাদাও হয়তো কিছুটা বাড়ল টেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়া এই পেসারের অবসরের ভেন্যু হিসেবে।