Beta
বৃহস্পতিবার, ১ মে, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ১ মে, ২০২৫
জন্মাষ্টমী পালিত

আমরা যেন সম্প্রীতির ইতিহাস না ভুলি : নাহিদ ইসলাম

ss-janmastami-nahid-26-8-24
[publishpress_authors_box]

সম্প্রীতির ইতিহাস ভুলে গেলে নতুন বাংলাদেশ তৈরি করা সম্ভব হবে না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, যদি সবাইকে অন্তর্ভূক্ত না করা যায় তাহলে নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নষ্ট হয়ে যাবে।

সোমবার বিকালে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে ঢাকার ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে শোভাযাত্রার উদ্বোধন করে একথা বলেন নাহিদ ইসলাম। প্রতিবারের মতো এবারও শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথিতে এই শোভাযাত্রার আয়োজন করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা । এসময় তারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যায় আক্রান্তদের জন্য প্রার্থনা করেন।

সোমবার সকাল ৮টায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় গীতাযজ্ঞের মাধ্যমে জন্মাষ্টমীর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। ৯টার দিকে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা ও মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ড. তাপস চন্দ্র পালসহ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নেতারা গুরুবরণ করেন।

এরপর বেলা ৩টায় ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রা উদ্বোধন করে নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা নতুন যে বাংলাদেশ গড়তে চাই, সেই বাংলাদেশে যদি সবাইকে অন্তর্ভূক্ত না করা যায় তাহলে আমাদের এই স্বপ্ন নষ্ট হয়ে যায়। নতুন বাংলাদেশে আমরা সবার মানবিক মর্যাদা এবং সম্মান নিশ্চিত করতে চাই।”

আমাদের ইতিহাস অসাম্প্রদায়িকতার ইতিহাস একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমাদের ইতিহাস আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতির ইতিহাস। হিন্দু মুসলিমসহ সকল মানুষের যে সংমিশ্রণ এখানে হয়েছে তা বাদ দিয়ে এখানকার সংস্কৃতির ব্যাখা কেউ দিতে পারবে না। আমরা যেন সেই সম্প্রীতির ইতিহাস ভুলে না যাই। এই ইতিহাস ভুলে গেলে আমাদের নতুন বাংলাদেশ তৈরি সম্ভব হবে না।”

দেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্যায় অনেক মানুষ দুর্ভোগে থাকায় বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে জন্মাষ্টমী উদযাপনের খরচ কমিয়ে বন্যার্তদের জন্য দান করা হয়।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর বলেন, “আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম প্রতি বছরের মতো এবারও জন্মাষ্টমী উদযাপন করব। এরইমধ্যে আকস্মিক বন্যায় জনগণের দুঃখ-দুর্দশা দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নিই, পূজার বাইরেও এমন কিছু আনুষ্ঠানিকতা থাকে, যেগুলো না করলেও চলে। যেমন অতিরিক্ত আলোকসজ্জা, ধর্মীয় আঙ্গিক বজায় রেখে শোভাযাত্রার অনেক কিছু বাদ দেওয়া যায়। এতে বেঁচে যাওয়া অর্থের সেই অংশটা আমরা বন্যার্তদের জন্য পাঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।”

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বছর আগে দ্বাপর যুগে ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সনাতন ধর্মের অবতার হিসেবে প্রেম, সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার ব্রত নিয়ে পৃথিবীতে আবির্ভূত হন। শ্রীকৃষ্ণ অত্যাচারী ও দুর্জনের বিরুদ্ধে শান্তিপ্রিয় ভালো মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ব্রতী হন।

সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, দুষ্টের দমন করতে একইভাবে যুগে যুগে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ পৃথিবীতে আসেন। এসে সত্য, সুন্দর ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করেন। পাপমোচন ও পুণ্যলাভের আশায় জন্মাষ্টমীতে উপবাস পালন করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

দিনটিতে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সংগঠনও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বাণীও দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বাণীতে তিনি বলেছেন, শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ ও শিক্ষা এ দেশের হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত