Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

চুল বড় রাখতে পারবেন জাপানি সেনারা

ছবি : বিবিসি
ছবি : বিবিসি
Picture of সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে প্রতিরক্ষায় সংযত নীতি নিয়েছে জাপান। তবে সম্প্রতি আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়ায় সামরিক খাতে ব্যয় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। এর অংশ হিসেবে সেনার সংখ্যা বাড়ানো হবে। তরুণদের সেনাবাহিনীতে আকৃষ্ট করতে চুুল কাটার নিয়ম শিথিল করা হয়েছে, এমনকি ট্যাটু থাকলেও দেওয়া হবে ছাড়।

এখন থেকে জাপানের সেনারা চাইলে বড় চুল রাখতে পারবেন, এমনই ঘোষণা দিয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

চীন ও উত্তর কোরিয়া নিয়ে জাপানের উদ্বেগ বেড়েই চলছে। প্রতিবেশি দেশ দুটির সেনার সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সেই পাল্লায় হিমশিম খাচ্ছে জাপান। আর তাই দেশটির সেনাবাহিনীতে লোকবল বাড়াতে এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি।

এর আগে জাপানের সেনাবাহিনীর পুরুষ সদস্যদের চুলে বাজ কাট (একেবারে ছোট) এবং নারীদের ছোট চুল রাখার নিয়ম ছিল। আগামী এপ্রিল থেকে এই নিয়ম শিথিল হতে যাচ্ছে। নতুন নিয়ম অনুসারে, পুরুষ সেনারা পেছনে ও দুই পাশে ছোট চুল রেখে মাঝের চুলগুলো বড় রাখতে পারবেন।

নারীরাও রাখতে পারবেন বড় চুল। তবে শর্ত হচ্ছে, চুল বেঁধে রাখতে হবে। এছাড়া ইউনিফর্ম পরা অবস্থায় চুল কোনোভাবেই কাঁধের ওপর পড়তে পারবে না। পাশাপাশি লম্বা চুল হেলমেট পড়ার ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা তৈরি করতে পারবে না।

জাপানের বার্তাসংস্থা কিয়োডো নিউজ এজেন্সির বরাত দিয়ে বিবিসি বলছে, জানুয়ারিতে জাপানের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (জেএসডিএফ) সদস্য বাড়ানো নিয়ে বিশেষজ্ঞ প্যানেলের এক বৈঠক হয়। সেখানেই প্রথম চুল ছোট রাখার নিয়ম শিথিলের ব্যাপারে আলোচনা হয়।  

ওই বৈঠকে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী মিনোরু কিহারা বলেন, জাপান কর্মক্ষেত্রে মারাত্মক কর্মী ঘাটতির মুখোমুখি হচ্ছে। এজন্য নতুনদের নিয়োগের ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতসহ অন্যদের সঙ্গে সামরিক বাহিনীর প্রতিযোগিতাও তীব্র হচ্ছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই জাপান নিজেদের শান্তিবাদী সংবিধান অনুযায়ী চলছে। দেশটির সামরিক বাহিনী একচেটিয়াভাবে আত্মরক্ষামূলক অবস্থানে রয়েছে।

তবে পাশ্ববর্তী দুই দেশ চীন ও উত্তর কোরিয়া দ্রুত সময়ে সৈন্য সংখ্যা বাড়ানোয় তাদের সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না দেশটি।

চীন দ্রুত সমরাস্ত্র বাড়াচ্ছে করছে। অন্যদিকে উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক কর্মসূচির সম্প্রসারণ করছে। এই দুইয়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে দেশটির তরুণদের সেনাবাহিনীতে আকৃষ্ট করতে পদক্ষেপ নিয়েছে জাপান।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর জাপান ঘোষণা করেছিল যে তারা আগামী পাঁচ বছরে প্রতিরক্ষা ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াবে।

কিন্তু জাপানের প্রতিরক্ষা বাহিনীর কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, নতুনদের নিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে হিমশিম খাচ্ছে তারা। দেশটির সেনাবাহিনী নিজেদের সক্ষমতার চেয়ে ১০ শতাংশ কম সদস্য নিয়ে কাজ করছে।

জাপান টাইমসের এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিবিসি বলছে, জাপানে জন্মহার কমে যাওয়া এবং বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক জনগোষ্ঠী থাকায় দেশটিতে সেনাবাহিনীতে লোকবলের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি কম বেতন ও যৌন হয়রানির মতো অভিযোগের কারণে সামরিক বাহিনীতে যোগ দিতে অনুৎসাহী হচ্ছেন তরুণরা।

এই সমস্যা এড়াতে ২০২৩ সাল থেকে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, ট্যাটু থাকা ব্যক্তিদেরও সামরিক বাহিনীতে যোগদানে অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে।  

জাপানে দীর্ঘদিন ধরেই ট্যাটুকে ট্যাবু ভাবা হয়। কারণ সেখানে মনে করা হয়, ট্যাটু থাকা ব্যক্তিদের বেশিরভাগই দেশটির ইয়াকুজা (মাফিয়াদের অপরাধী সংগঠন) সংগঠিত অপরাধ চক্রের সঙ্গে যুক্ত।

তবে প্রশাসনিক কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন, জাপানে অনেক লোকই আছে যাদের ট্যাটু থাকলেও তারা গ্যাংস্টার কিংবা অপরাধী নয়। আর সামরিক বাহিনীতে ট্যাটু নিষিদ্ধর ব্যাপারটি নিয়োগের ক্ষেত্রেও বাধা তৈরি করছে। এ কারণে কর্মকর্তারা এই নিয়ম শিথিল নিয়েও ভাবছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত