Beta
মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Beta
মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

এআই দিয়ে সায়েন্স ফিকশন লিখে পুরস্কার    

টোকিও সিমপ্যাথি টাওয়ারের রচয়িতা রি কুদান।
টোকিও সিমপ্যাথি টাওয়ারের রচয়িতা রি কুদান।
Picture of সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

রি কুদান। জাপানি ঔপন্যাসিক। সম্প্রতি তার একটি বিজ্ঞান কল্পকাহিনী পাঠক মহলে বেশ সাড়া ফেলে। উপন্যাসটির নাম ‘টোকিও সিমপ্যাথি টাওয়ার’।

অদূর ভবিষ্যতের পটভূমিতে লেখা এই উপন্যাসে একটি সমাজের চিত্র তুলে ধরা হয়, যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ওপর নির্ভরশীল।

উপন্যাসটির অন্যতম প্রধান চরিত্র সারা মাকিনা। তিনি একজন স্থপতি। টোকিও শহরের কেন্দ্রস্থলে একটি উঁচু সরু ভবনের নকশার দায়িত্বে আছেন মাকিনা। ভবনটির নাম টোকিও সিমপ্যাথি টাওয়ার। এটি অপরাধীদের পুনর্বাসনকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে।

কাহিনী যত এগোতে থাকে, পাঠক উপলব্ধি করেন, ভবন নির্মাণ প্রকল্প সম্পর্কে শুরুতে মাকিনার যে ধারণা ছিল, তা আসলে ঠিক নয়।

এই নারী স্থপতির মাধ্যমে ঔপন্যাসিক রি কুদান এমন এক বিপজ্জনক সমাজের কথা বলেন, যেখানে মানুষের মধ্যে সহানুভূতি, সমবেদনা কাজ করে না।

পুরো কল্পকাহিনীটিই স্থপতি মাকিনার দৃষ্টিকোণ থেকে বলেছেন কুদান। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিভিন্ন দিকও এতে উঠে আসে।

জাপানের পাঠক সমাজে আলোচনায় থাকা কুদানের টোকিও সিমপ্যাথি টাওয়ার এ বছর আকুতাগাওয়া পুরস্কার পেয়েছে। এটি জাপানের অন্যতম সম্মানজনক সাহিত্য পুরস্কার।

উদীয়মান সাহিত্যিকদের এই পুরস্কার দেওয়া হয়ে থাকে। কুদানের উপন্যাসটি সম্পর্কে পুরস্কার কমিটি বলে, এটি ‘প্রায় নিখুঁত’।

মাত্র ৩৩ বছর বয়সে আকুতাগাওয়া পুরস্কার পেয়ে স্বাভবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত রি কুদান। পুরস্কারটি গ্রহণের সময় তিনি এক বিস্ফোরক তথ্য দেন।  

কুদান বলেন, “টোকিও সিমপ্যাথি টাওয়ার লেখার সময় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সাহায্য নিয়েছি। উপন্যাসটির ৫ শতাংশ আসলে এআই রচিত। সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে এআইয়ের সঙ্গে কাজ করতে আমার ভালো লাগে।”

জাপানি ঔপন্যাসিক কুদানের এই অকপট স্বীকারোক্তিতে ভ্রু কুঁচকে গেছে আকুতাগাওয়া পুরস্কার কমিটির। এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। বিভক্ত সোশাল মিডিয়া। কেউ কেউ কুদানের লেখালেখির অপ্রচলিত ধরনের সমালোচনা করছেন, কেউ বা সাধুবাদ জানাচ্ছেন।          

তবে এসব নিয়ে বিচলিত নন কুদান। অনেকের মতো তিনিও মনে করেন, প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে এআইয়ের সাহায্য নেওয়াই যায়।

অবশ্য কেবল লেখালেখির কাজে নয়, ব্যক্তিগত জীবনের নানা সমস্যা নিয়েও এআইয়ের সঙ্গে কথা বলতে পছন্দ করেন রি কুদান। সমস্যা কীভাবে মোকাবিলা করা যায়, সে সংক্রান্ত পরামর্শ চান এআইয়ের কাছে।

কুদান জানান, এআইয়ের সঙ্গে ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে যতটা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, তা আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধু-বান্ধবদের ক্ষেত্রে করেন না।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও নিজের রচিত বিজ্ঞান কল্পকাহিনী সম্পর্কে জাপানের এই লেখক বলেন, “আমার প্রত্যাশা অনুযায়ী যখন এআই প্রতিক্রিয়া দেখায় না, তখন কখনও কখনও আমার কল্পনা করা প্রধান চরিত্রের মধ্য দিয়ে আমি আমার অনুভূতি প্রকাশ করি। টোকিও সিমপ্যাথি টাওয়ারের প্রধান চরিত্রের ক্ষেত্রে এমনটা ঘটেছে।”

সৃজনশীল কাজে এআইয়ের সহায়তা নেওয়া, আবার সেই কাজকে না জেনে পুরস্কৃত করা স্বভাবতই বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

অবশ্য জাপানি ঔপন্যাসিক কুদানই যে কাজটি প্রথম করেছেন, তা নয়। গত বছর জার্মান আলোকচিত্রী বরিস এলদাগসেনের একটি ছবি নিয়েও বেশ শোরগোল হয়।

বিশ্বের অন্যতম আলোচিত আলোকচিত্র প্রতিযোগিতা সনি ওয়ার্ল্ড ফটোগ্রাফি অ্যাওয়ার্ডসের সৃজনশীল ছবি ক্যাটাগরিতে নিজের একটি ছবি জমা দিয়েছিলেন এলদাগসেন। ছবিটি পুরস্কারও পায়।

আলোকচিত্রী এলদাগসেন পরে স্বীকার করেন, প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া ছবিটি এআই প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে। এ নিয়ে সনির বিচারকরা বেজায় ক্ষুব্ধ হন। তারা প্রতারিত বোধ করেন। এলদাগসেনের সঙ্গে তাদের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হতে দেখা যায়।     

তথ্যসূত্র: স্মিথসোনিয়ান ম্যাগাজিন, দ্য ন্যাশনাল      

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত