লক্ষ্য মাত্র ১১৯ রান। নিউইয়র্ক স্টেডিয়ামের পিচেও কোনও জুজু ছিল না। অথচ অল্প রানের এই লক্ষ্যটা তাড়া করতে পারল না পাকিস্তান। ব্যাটিং ব্যর্থতায় হেরে গেল ৬ রানে। স্বাভাবিকভাবেই রোহিত-বুমরাদের এমন পারফরম্যান্সে উচ্ছ্বসিত সুনীল গাভাস্কার-শচীন টেন্ডুলকাররা। বিপরীতে জেতা ম্যাচ হারায় ক্ষোভে ফুঁসছেন পাকিস্তানি সাবেকরা।
সুনীল গাভাস্কার সম্প্রচারকারী চ্যানেলে বললেন, ‘‘এই জয়ের আসল কৃতিত্ব বুমরার। জেতার সম্ভাবনা যখন কমে আসছিল, তখন লড়াইয়ে ফেরায় ও। তবে আমাদের ব্যাটারদের অহংকারী আর বেপরোয়া মনে হয়েছে। আয়ারল্যান্ডকে সম্মান করেই বলছি, পাকিস্তানের বোলিং আর আয়ারল্যান্ডের বোলিং এক নয়। অথচ ওরা প্রতিটা বলে শট নিচ্ছিল।’’ মানে পাকিস্তানি বোলারদের বিপক্ষে বেশি শট খেলতে যাওয়াটাই কাল হয়েছে ভারতীয় ব্যাটারদের জন্য।
ভারতীয় কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার বলেছেন, ‘‘ভারত-পাকিস্তান, আলাদা মহাদেশ তবে ফলাফল একই। টি-টোয়েন্টি ব্যাটারদের খেলা। কিন্তু এই ম্যাচে আমাদের মধ্যমণি বোলাররা।’’
সম্প্রচারকারী চ্যানেলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন পাকিস্তানি সাবেক অধিনায়ক ও কোচ ওয়াকার ইউনিস, ‘‘এই রান করতে না পারলে সুপার এইটের স্বপ্ন দেখা কেন? বুমরা অসাধারণ বল করেছে। ও সত্যিকারের কিংবদন্তি। গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপে আহমেদাবাদে একই জায়গায় নিখুঁত বল রেখেছিল। মাঠ বদলে গেলেও একই নিখুঁত লাইন লেংথে বল করেছে ও।’’
বুমরার বলে রিজওয়ানের বোল্ড হওয়া নিয়ে পাকিস্তানি সাবেক অধিনায়ক ওয়াসিম আকরাম জানালেন, ‘‘ ১০ বছর ধরে ক্রিকেট খেলছে ওরা। আমি ওদের শেখাতে পারব না। রিজওয়ানের মধ্যে কোনো গেম অ্যাওয়ারনেসই নেই। তার জানার কথা বুমরার হাতে বল তুলে দেওয়া হয়েছে উইকেটের জন্য। এ ক্ষেত্রে বুমরাকে সতর্কতার সঙ্গে খেলাটাই হতো বুদ্ধিমানের কাজ। কিন্তু রিজওয়ান বড় শট খেলতে গেল আর আউট হলো।’’
শোয়েব আখতারও মর্মাহত,‘‘সারা দেশ মর্মাহত। দেশের জার্সি পরে নামা মানে দেশকে গর্বিত করার সুযোগ পাওয়া। এই সুযোগ হেলায় হারাল পাকিস্তান।’’
ইংলিশ সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন বলেছেন, ‘কখনও কখনও বাজে পিচও সেরা ম্যাচ উপহার দেয়, এটা সেগুলোরই একটি। পাকিস্তানের এই বিশ্বাসই নেই যে তারা জিততে পারে। আসল কথা এটাই।’’
টানা দুই হারের পরও অবশ্য সুপার এইটের সুযোগ শেষ হয়ে যায়নি পাকিস্তানের। এজন্য তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য দলগুলোর ফলের দিকেও। সবার আগে শেষ দুই ম্যাচে আয়ারল্যান্ড ও কানাডাকে বড় ব্যবধানে হারাতে হবে তাদের।
এরপর প্রার্থনা করতে হবে ভারত যেন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাকে হারায়। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আয়ারল্যান্ডের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের হার। এই অঙ্ক মিলে গেলেই খুলবে পাকিস্তানের সুপার এইটের দুয়ার।
পিসিবি প্রধান মহসিন নাকভি অবশ্য এই দলের উপর আস্থা পাচ্ছেন না। তিনি সরাসরিই জানালেন, ‘‘ভাবছিলাম ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য ছোট খাট সার্জারি করতে হবে দলে। এখন দেখছি বড় সার্জারি করা ছাড়া উপায় নেই।’’
মানে বিশ্বকাপের পর দলে আমূল পরিবর্তন আনতে চান তিনি।