সংবিধান সংস্কারে নিজেদের প্রস্তাব তুলে ধরেছে জাতীয় পার্টি; যেখানে সরকারি দলের প্রধান ও সরকার প্রধান যাতে এক ব্যক্তি না হয়, সেই ব্যবস্থা সংযোজনের সুপারিশ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঢাকার বনানীতে দলীয় চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ প্রস্তাব তুলে ধরেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংবিধানে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। এলক্ষ্যে গঠিত হয়েছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। আলী রীয়াজ নেতৃত্বাধীন এই কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে প্রস্তাবও চেয়েছে।
সেই কারণেই নিজেদের সুপারিশমালা তৈরি করেছে জাতীয় পার্টি, যারা আওয়ামী লীগ শাসনের দেড় দশকে সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকায় ছিল।
বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থা যুক্তরাজ্যের ওয়েস্টমিনস্টার ধাঁচের। তা বিবেচনায় রেখেই সংবিধান সংশোধনে নিজেদের প্রস্তাব তৈরি করেছে জাতীয় পার্টি।
জি এম কাদের বলেন, বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্র ব্যবস্থা চালুর প্রথম থেকেই প্রধানমন্ত্রী বা সরকারের প্রধান নির্বাহীকে সংসদের ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দেওয়া আছে, যা সংবিধানে অনুচ্ছেদ ৭০ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে প্রয়োগের সুযোগ রয়েছে।
৭০ অনুচ্ছেদ যে কোনও সংসদ সদস্যকে নিজ দলের বিপক্ষে ভোট দিতে বাধা দেয়। এই বিধান প্রধানমন্ত্রীকে একতরফাভাবে যেকোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার এবং সংসদে তা পাস করানোর ক্ষমতা দেয় বলে তা বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছে জাতীয় পার্টি।
তার ওপর সরকারি দলের প্রধান এবং প্রধানমন্ত্রী এক ব্যক্তি হলে এক ব্যক্তির কর্তৃত্ব আরও বাড়ার সুযোগ তৈরি হয় বলে মনে করছে দলটি।
জি এম কাদের বলেন, “সরকারি দলের প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী যদি দুজন ভিন্ন ব্যক্তি হতেন, তাহলে প্রধানমন্ত্রীর সংসদ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও ভারসাম্য থাকত। ঐতিহ্যগতভাবে এটি কখনও ঘটেনি। এখন পর্যন্ত যখনই সুযোগ আসে, দলীয় প্রধানই প্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহণ করেন।”
সেই কারণে জাতীয় পার্টির সুপারিশ হলো, সরকারি দলের প্রধান এবং প্রধানমন্ত্রী যেন একই ব্যক্তি না হন।