ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই মারা গেছেন। শনিবার ভোরে থাইল্যান্ডের বামরুনদগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
থাইল্যান্ড থেকে আব্দুল হাইয়ের ব্যক্তিগত সহকারী শহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ৭১ বছর বয়সী আব্দুল হাই লিভার সিরোসিস ও নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে তাকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
তার জানাজা ও দাফনের বিষয়ে পরিবার পক্ষ থেকে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলেও জানান শহিদুল।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী আব্দুল হাইয়ের জন্ম ১৯৫২ সালের ১ মে, শৈলকুপা উপজেলার মহম্মদপুর গ্রামে। বাবা ফয়জুদ্দিন মোল্লা ও মা ছকিরন নেছা দম্পতির তিন ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন তিনি।
তার শিক্ষাজীবন শুরু পার্শ্ববর্তী মির্জাপুর গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেখানে শিক্ষা সমাপ্ত করে ভর্তি হন বসন্তপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। মাধ্যমিক পাস করার পর ঝিনাইদহ কেশবচন্দ্র কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকেই বিএ পাস করেন।
বসন্তপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত অবস্থায় তিনি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৬৮ সালে তৎকালীন মহকুমা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পান তিনি। ১৯৬৯ সালে সরকারি কেসি কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। একই বছর তিনি বৃহত্তর যশোর জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে ঝাপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। তিনিই ঝিনাইদহে স্বাধীন বাংলার পতাকা প্রথম উত্তোলন করেন।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আব্দুল হাই ঝিনাইদহ যুবলীগের আহ্বায়ক ও ১৯৭৩ সালে যুবলীগের মহকুমা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আশির দশকে জেলা আওয়ামী লীগের যুব ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন তিনি। ১৯৯৮ সালে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঝিনাইদহ-১ আসন থেকে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর পর থেকে এই আসনে টানা পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
২০০৫ সাল থেকে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করা আব্দুল হাই ২০১২ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।
