Beta
মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Beta
মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

শেখ হাসিনার বিবৃতির খবরটি মিথ্যা : জয়

গত ৫ অগাস্ট গণভবন থেকে হেলিকপ্টারে সরিয়ে নেওয়া হয় শেখ হাসিনাকে।
গত ৫ অগাস্ট গণভবন থেকে হেলিকপ্টারে সরিয়ে নেওয়া হয় শেখ হাসিনাকে।
Picture of সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

ক্ষমতাচ্যুতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে শেখ হাসিনার যে বিবৃতির খবরটি ভারতের সংবাদ মাধ্যম দিয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্য বলে দাবি করেছেন তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।

যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী জয় শনিবার এই খবরের প্রতিক্রিয়ায় এক্স-এ লিখেছেন, “পদত্যাগ নিয়ে আমার মায়ের বরাতে যে খবর একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছি, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও অতিরঞ্জিত। আমি মাত্রই তার কাছ থেকে নিশ্চিত হলাম যে ঢাকা ছাড়ার আগে-পরে কোনও বিবৃতি তিনি দেননি।”

ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা হারিয়ে গত ৫ অগাস্ট ভারতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনার একটি বিবৃতির খবর শনিবারই প্রকাশ করে ভারতের অনলাইন পোর্টাল দ্য প্রিন্ট।

তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে একটি বিবৃতি দিয়েছেন শেখ হাসিনা, যা তারাও দেখেছে, সেই বিবৃতিতে বাংলাদেশে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করা হচ্ছে।

দেশ ছাড়ার আগের দিন শেখ হাসিনার নামে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে একটি বার্তা এসেছিল। সেখানে আন্দোলন দমনে কঠোর হওয়ার নির্দেশনা ছিল।

পরদিন ভারতে যাওয়ার পর থেকে শেখ হাসিনার কোনও বিবৃতি কিংবা বক্তব্য আর আসেনি। ছন্নছাড়া আওয়ামী লীগের কোনও বক্তব্যও পায়নি সাংবাদিকরা। তবে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা জয় দল ও মায়ের পক্ষে সোশাল মিডিয়া ও সংবাদমাধ্যমে বক্তব্য দিয়ে আসছেন।

এরমধ্যেই দ্য প্রিন্ট শনিবার ওই সংবাদ প্রকাশ করে, যার শিরোনাম ছিল- “নীরবতা ভেঙেছেন শেখ হাসিনা, দায়ী করেছেন যুক্তরাষ্ট্রকে, অন্তর্বর্তী সরকারকেও ব্যবহৃত না হতে হুঁশিয়ার করেছেন।”

বাংলাদেশের অভ্যুত্থানে ভারত সরকার ‘বিদেশি হাত’ থাকার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার কথা জানানোর কয়েকদিন বাদেই এই সংবাদটি আসে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই বার্তায় শেখ হাসিনা বলেন- “সেন্ট মার্টিন ও বঙ্গোপসাগর আমেরিকার হাতে ছেলে দিলে আমি ক্ষমতায় থাকতে পারতাম।

এই ধরনের কথা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকার সময়ও বলেছেন। গত মে মাসে ১৪ দলের এক সভায় তিনি বলেছিলেন, এক ‘শ্বেতাঙ্গ’ ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি একটি প্রস্তাব পেয়েছিলেন, যেখানে তাকে বলা হয়, একটি বিমানঘাঁটি করতে দিলে সহজে তিনি ক্ষমতায় থাকতে পারবেন।

এর আগে ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হেরে যাওয়ার পর বিভিন্ন সময়ে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, দেশ বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় তাকে ক্ষমতা যেতে দেওয়া হয়নি।

তার যে বক্তব্যকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মিছিল থেকে যে ‘আমি কে তুমি কে, রাজাকার-রাজাকার’ স্লোগান উঠেছিল, তাও বিকৃতভাবে তুলে ধরার কথা শেখ হাসিনা বলেন বলে প্রিন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়।

এই কথাও শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়ই বলেছিলেন।

তবে প্রিন্টে প্রকাশিত বার্তায় শেখ হাসিনা নিজের পদত্যাগের কথা বলেছিলেন, যা তার ছেলে জয়ের কথার সঙ্গে মেলে না।

শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, “আমাকে যেন লাশের মিছিল দেখতে না হয়, সেজন্য আমি পদত্যাগ করেছি। তারা আপনাদের (শিক্ষার্থীদের) লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল। আমি সেটা হতে দিইনি।”

জয় কয়েকদিন আগেই রয়টার্সকে বলেন, তার মা দেশ ছাড়ার আগে পদত্যাগ করেননি। পদত্যাগপত্র লেখার সময়ই পাননি। কারণ তড়িঘড়ি করে তাকে দেশ ছাড়তে হয়েছিল।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর সর্বপ্রথম দিয়েছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়ারকার-উজ জামান। বিকালে তিনি ওই খবর দেওয়ার আগেই শেখ হাসিনা ভারতে পৌঁছে যান।

পরে রাতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেন, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন এবং এখন একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হবে।

তিনদিন পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ নেওয়ার পরই জয় দাবি করেন যে তার মা এখনও প্রধানমন্ত্রী পদে বহাল রয়েছেন।

শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর জয় প্রথমে বলেছিলেন, তার মা আর রাজনীতিতে থাকবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দেশেও ফিরছেন না।

পরিবারের কেউ আর রাজনীতিতে আসছেন না বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। তবে তার সেই বক্তব্য এরই মধ্যে পরিবর্তিত হয়েছে।

পরে তিনি জানান, শেখ হাসিনা দেশে ফিরবেন এবং দলেরও দায়িত্ব নেবেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত