Beta
শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫
Beta
শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫

খৎনা : ঘুম ভাঙেনি আয়হামেরও 

জেএস ডায়াগনস্টিক সেন্টার।
জেএস ডায়াগনস্টিক সেন্টার।
[publishpress_authors_box]

খৎনা করাতে গিয়ে আবার মৃত্যু। ঢাকার সাঁতারকূলের ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আয়ান আহমেদের মৃত্যুর রেশ কাটতে না কাটতেই একই ঘটনা ঘটল মালিবাগের জেএস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে।

মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আহনাফ তাহমিন আয়হামের (১০) মৃত্যুর পর বুধবার রোগ নিরূপণ কেন্দ্রটিতে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।     

অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আবু হোসেন মো. মইনুল আহসান সাংবাদিকদের বলেছেন, জেএস ডায়াগনস্টিকের হাসপাতাল পরিচালনার অনুমোদনই ছিল না।

অর্থাৎ খৎনা করার কাজটি এই রোগ নিরূপণ কেন্দ্রটি বেআইনিভাবে করেছিল।

মঙ্গলবার রাতে আয়হামের খৎনা করা হয় জেএস ডায়াগনস্টিকে। পরিবারের অভিযোগ, লোকাল অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার কথা থাকলেও ফুল অ্যানেস্থেসিয়া অর্থাৎ পুরোপুরি অজ্ঞান করা হয়েছিল শিশুটিকে। পরে আর তার জ্ঞান ফেরেনি।

বুধবার সকালে আয়হামের বাবা ফখরুল আলম বাদী হয়ে মামলা করেছেন হাতিরিঝিল থানায়। তাতে অবহেলায় মৃত্যুর অভিযোগ আনা হয়। ওই মামলায় হাসপাতালটির চিকিৎসক ডা. এস এম মুক্তাদির ও ডা. মাহবুব মোরশেদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

খবর পেয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও তৎপর হয়। জেএস ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যান অধিদপ্তরের পরিচালক মইনুল আহসান।

তিনি সেখানে সাংবাদিকদের বলেন, “হাসপাতালটির সব তথ্য আমাদের হাতে এসেছে। আমরা সেগুলো পর্যবেক্ষণ-পর্যালোচনা করছি। যতটুকু পেয়েছি, প্রতিষ্ঠানটির হাসপাতাল কার্যক্রম চালানোর কোনো অনুমোদন ছিল না। শুধু ডায়াগনস্টিক কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন রয়েছে।

“সুতরাং তারা যদি কোনো রোগীকে অ্যানেস্থেসিয়া দিয়ে থাকে, সেটি অন্যায় করেছে। আমরা আরও তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেব।”

চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথা বলে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করার ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও তিনি বলেন।

গত ৩১ ডিসেম্বর ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খৎনার জন্য সম্পূর্ণ অজ্ঞান করা হয়েছিল শিশু আয়ানকে। খৎনা করানোর পর ১১ ঘণ্টায়ও তার সংজ্ঞা না ফিরলে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে এনে লাইফসাপোর্টে রাখা হয়। সাত দিন সেখানে থাকার পর গত ৭ জানুয়ারি আয়ানকে মৃত ঘোষণা করা হয়। 

ওই ঘটনা ইতোমধ্যে আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তদন্ত করলেও তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে আবার তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।

আয়হামের ঘটনায় মামলার পরপরই দুই চিকিৎসক মুক্তাদির ও মাহবুবকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান হাতিরঝিল থানার ওসি শাহ মো. আওলাদ হোসেন।

পুলিশ জানায়. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অর্থোপেডিক সার্জন মুক্তাদির এই ডায়াগনিস্টক সেন্টারের মালিক। মাহবুব অ্যানেসথেসিওলজি বিভাগের চিকিৎসক।

দুজনকে ঢাকার আদালতে পাঠানো হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের সাত দিন হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদনও করেছেন আয়হামের বাবার করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাতিরঝিল থানার এসআই রুহুল আমিন। ঢাকার মহানগর রাজেশ চৌধুরীর আদালতে এই আবেদনের শুনানি হবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত