ছোট্ট এক কামরার ভাড়া বাসায় প্রতিবন্ধী সন্তান নিয়ে গার্মেন্টস শ্রমিক জুলেখার বসবাস। নেই স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট, থাকেনা রান্নার গ্যাস, উদ্বিগ্ন সন্তানের নিরাপত্তা-শিক্ষা-স্বাস্থ্য নিয়ে। এরই মধ্যে প্রতিদিন জুলেখাকে কর্মক্ষেত্রে যেতে হয়, মুখোমুখি হতে হয় নানা বাধা-বিপত্তির। জুলেখার মতো লাখো গার্মেন্টস শ্রমিকের প্রতিদিনকার দুঃখ কষ্ট ও চাহিদার কথা তুলে ধরা হয় একটি নাটকের মাধ্যমে।
দর্শক হিসেবে আগত গার্মেন্টস শ্রমিক মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, এই নাটকের সাথে তাদের বাস্তব জীবন অনেক ক্ষেত্রে মিলে যায়। অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, “যেকোনও সেবা নিতে গেলে অতিরিক্ত টাকা খরচ হয়।”
শুক্রবার বিকেলে সাভার উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই নাট্য প্রদর্শনীটি হয় নাগরিক প্রত্যাশা তুলে ধরার কর্মসূচি ‘আমিও জিততে চাই’ ক্যাম্পেইন এর আওতায়। নাটকটি উপভোগ করেন সাভার এলাকার দেড়শরও বেশি শ্রমিক। এসময় তারা তাদের বাসস্থানের সমস্যা ও বিভিন্ন দাবির বিষয়ে মতামত তুলে ধরেন।
ইউএসএআইডি এর অর্থায়নে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল এর উদ্যোগে পরিচালিত ‘আমিও জিততে চাই’ ক্যাম্পেইনে নামে যে ওয়েবসাইট (amiojittechai.com) রয়েছে সেখানেও তারা তাদের মতামত তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তা তৈরি করার সুযোগ পেয়ে শ্রমিকরা তাদের প্রাত্যহিক সমস্যার সমাধান দাবি জানান কর্তৃপক্ষের কাছে।
অনুষ্ঠানে আগত গার্মেন্ট কর্মী মার্জিয়া বলেন, সন্তানদের জন্য তিনি আরও ডে কেয়ার সেন্টার এবং অগ্নি দুর্ঘটনা রোধে সব কারখানায় কার্যকর ব্যবস্থা চান।
নাট্য প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের এসপিএল প্রজেক্টের ডেপুটি চিফ অব পার্টি (অপারেশন) লেসলি রিচার্ডস, ডেপুটি চিফ অব পার্টি (প্রোগ্রামস) আমিনুল এহসান এবং অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার আশরুপা হক চৌধুরী।
‘আমিও জিততে চাই’ ক্যাম্পেইন দেশব্যাপী বিভিন্ন জেলা ও ক্যাম্পাসে নাট্য প্রদর্শনী ও আলোচনার মাধ্যমে নাগরিক প্রত্যাশা তুলে ধরার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। এতে করে তরুণসহ সমাজের নানা শ্রেণী-পেশা ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রত্যাশা পূরণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে আয়োজকরা মনে করেন।