Beta
মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪

মুক্তি পেলেন উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ

কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের বিমানে ওঠার ঠিক আগের মুহূর্তের ছবি।
কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের বিমানে ওঠার ঠিক আগের মুহূর্তের ছবি।
[publishpress_authors_box]

দীর্ঘ আইনী লড়াই শেষে যুক্তরাজ্যের কারাগার থেকে সোমবার মুক্তি পেলেন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে তিনি মুক্তি পেয়েছেন বলে জানিয়েছে একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। এই চুক্তির আওতায় অ্যাসাঞ্জ ফৌজদারি অপরাধের দোষ স্বীকার করে নিয়েছেন।

৫২ বছর বয়সী অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র তাদের জাতীয় প্রতিরক্ষামূলক তথ্য সংগ্রহ ও প্রকাশের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছিল। যুক্তরাষ্ট্রের যুক্তি ছিল, উইকিলিকস ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধ সংক্রান্ত যে তথ্য প্রকাশ করেছিল, এতে বহু মানুষের জীবন বিপন্ন হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের কারাগারে গত পাঁচ বছর বন্দী ছিলেন অ্যাসাঞ্জ। সেখান থেকেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে আইনী লড়াই করেন।

মঙ্গলবার উইকিলিকস এক বিবৃতিতে জানায়, “জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ মুক্তি পেয়েছেন। ২৪ জুন সকালে তিনি লন্ডনের বেলমার্শ কারাগার থেকে মুক্তি পান। ১৯০১ দিন কারাগারে থাকার পর লন্ডনের হাইকোর্ট তার জামিন মঞ্জুর করে। দুপুরে তিনি স্ট্যানস্টেড বিমানবন্দর পৌঁছান এবং বিমানে করে যুক্তরাজ্য ত্যাগ করেন।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “অ্যাসাঞ্জের মুক্তি বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টার ফল। এই প্রচেষ্টায় সামাজিক আন্দোলনকারী, গণমাধ্যমকর্মী, আইনপ্রণেতা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব, এমনকি জাতিসংঘ পর্যন্ত অংশগ্রহণ করেছে।

“এই সম্মিলিত চাপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আলোচনা চূড়ান্তভাবে শেষ হয়নি। তকে এটি একটি চুক্তির দিকে এগিয়েছে। আমরা যত দ্রুত সম্ভব আরও তথ্য প্রকাশ করব।”

অ্যাসাঞ্জের স্ত্রী স্টেলা মরিস অ্যাসাঞ্জ সোশাল মিডিয়া এক্সে এক পোস্টে সমর্থকদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, “সমর্থকরা বছরের পর বছর একত্রিত থেকে এই দিনটিকে বাস্তবে পরিণত করেছেন।”

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর মারিয়ানা দ্বীপের ফেডারেল আদালতে অ্যাসাঞ্জের মামলায় শুনানি নির্ধারণ করা হয়েছে বুধবার সকালে।

দেশটির বিচার বিভাগের কাছ থেকে পাওয়া এক চিঠিতে জানা যায়, অভিযুক্তরা আদালতের কাছে আবেদন করেছিলেন যাতে অ্যাসাঞ্জের দোষ স্বীকারোক্তিও সাজা নির্ধারণ একই দিনে হয়। কারণ অ্যাসাঞ্জ যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে পা রাখতে চান না।

যুক্তরাষ্ট্রে বিবিসির অংশীদার সিবিএস বলছে, চুক্তি অনুসারে অ্যাসাঞ্জকে আর যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারে থাকতে হবে না। এমনকি যুক্তরাজ্যের কারাগারে থাকার মেয়াদকে তার সাজা ভোগের মেয়াদ হিসেবে গণ্য করা হবে।

২০১০ ও ২০১১ সালে ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের লাখ লাখ গোপন সামরিক-কূটনৈতিক নথি ফাঁস করে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন অ্যাসাঞ্জ। আর তিনি ওই কাজ করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক গোয়েন্দা বিশ্লেষক চেলসি ম্যানিংয়ের সহায়তায়।

তথ্য ফাঁসের ঘটনায় অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে ১৮টি মামলার তদন্ত করছে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ। এর জন্য তার সর্বোচ্চ ১৭৫ বছরের জেল হতে পারে।

উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠা সাল ২০০৬। জন্মলগ্ন থেকেই অ্যাক্টিভিস্ট এই সংস্থাটি হাজার হাজার গোপন নথি ফাঁস করেছে। সংস্থাটির ফাঁস করা নথিগুলোর মধ্যে রয়েছে, ইরাকের বাগদাদে যুক্তরাষ্ট্রের হেলিকপ্টার থেকে চালানো হামলার বেসামরিকদের নিহত হওয়ার ঘটনা, ইরাকি সেনাদের হাতে বন্দী নির্যাতন, নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটনের প্রচার বিষয়ক প্রধান জন পোডেস্টারের ই-মেইলে অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে কয়েক হাজার ইমেইল ফাঁসের মতো বহু ঘটনা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত