Beta
শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫
Beta
শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫

বিচারপতি খিজির হায়াতকে অপসারণ

high court
[publishpress_authors_box]

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবির মুখে বিচার কাজ থেকে বিরত রাখা হাই কোর্টের বিচারপতি খিজির হায়াতকে অপসারণ করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে বুধবার এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ।

আইন ও বিচার বিভাগ সচিব শেখ আবু তাহের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, “গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেন ৯৬ এর দফা (৬) মোতাবেক বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগের বিচারক বিচারপতি জনাব খিজির হায়াতকে হাই কোর্ট বিভাগের বিচারকের পদ হইতে ১৮ মার্চ, ২০২৫ তারিখে অপসারণ করিয়াছেন।”

খিজির হায়াতের জন্ম ১৯৬৭ সালের ২৪ জানুয়ারি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র থাকাকালে তিনি ছাত্রলীগে যুক্ত ছিলেন।

পড়াশোনা শেষে আইনজীবী হিসাবে পেশাজীবন শুরু করেন খিজির হায়াত। ১৯৯৭ সালের ৬ আগস্ট তিনি ঢাকা জেলা জজ কোর্টে এবং ২০০১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন।

২০১৮ সালের ৩১ মে হাই কোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। দুই বছরের মাথায় উচ্চ আদালতে স্থায়ী হন তিনি। বয়স হিসাব করলে তার আরও নয় বছর পর অবসরে যাওয়ার কথা ছিল।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ১৬ অক্টোবর ‘ফ্যাসিস্ট’ বিচারপতিদের পদত্যাগ দাবিতে হাই কোর্ট ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা।

এরপর প্রধান বিচারপতি গত ২০ অক্টোবর থেকে হাই কোর্ট বিভাগে ১২ বিচারককে বিচার কাজ থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত নেন। তাদের মধ্যে খিজির হায়াতও ছিলেন।

গত ৭ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে জাননো হয়, কয়েকজন বিচারপতির বিষয়ে তদন্তের জন্য সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলকে নির্দেশনা দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

এরই মাঝে ৩০ জানুয়ারি হাই কোর্টের বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিন পদত্যাগ করেন। তার বিরুদ্ধে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলে অনুসন্ধান চলা অবস্থায় রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছিলেন তিনি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবির মুখে তাকেও বিচার কাজ থেকে বিরত রাখা হয়েছিল।

এর আগে গত ১৯ নভেম্বর হাই কোর্ট বিভাগের তিন বিচারপতি- সালমা মাসুদ চৌধুরী, কাজী রেজা-উল হক ও এ কে এম জহিরুল হক পদত্যাগ করেন। অনিয়ম ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ ওঠায় ২০১৯ সাল থেকে তাদের বিচারকাজ থেকে বিরত রাখা হয়েছিল।

গত বছরের ২০ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ের ফলে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনর্বহাল হয়। এ রায়ের মাধ্যমে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের পরিবর্তে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে ফিরে।

সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি এবং অন্য বিচারপতিদের মধ্যে থেকে কর্মে প্রবীণ আরও দুই বিচারপতির সমন্বয়ে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠিত হয়। সর্বোচ্চ আদালতের কোনও বিচারকের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ পাওয়ার পর সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল তা প্রাথমিক অনুসন্ধান করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রতিবেদন পাঠাবে।

রাষ্ট্রপতি এ প্রতিবেদন বিচার-বিবেচনা করার পর সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের কাছে ফেরত পাঠিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিবেন। এরপর সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে অসদাচরণের প্রমাণ পেলে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রতিবেদন পাঠাবে। এরপর গুরুতর অসদাচরণের জন্য কোনও বিচারক দোষী হলে রাষ্ট্রপতি আদেশের দ্বারা ওই বিচারককে তার পদ থেকে অপসারিত করবেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত