প্রতিবেশী মিয়ানমারে সামরিক জান্তার সঙ্গে বিদ্রোহীদের চলমান সংঘাতের রেশ পড়ছে বাংলাদেশে। সীমান্ত পেরিয়ে উড়ে আসছে গুলি, মর্টারের গোলা। এরই মধ্যে এক বাংলাদেশিসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে গোলার আঘাতে। আবার বিদ্রোহীদের হাত থেকে বাঁচতে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী, সেনাসদস্যরাও পালিয়ে ঢুকে পড়ছেন বাংলাদেশে।
এ পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলছেন, মিয়ানমার প্রসঙ্গে সৃষ্ট উদ্বেগের কথা জাতিসংঘকে জানাবে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যান্য প্রসঙ্গের পাশাপাশি মিয়ানমার ইস্যুতেও কথা বলেন তিনি।
মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতির কারণে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আশঙ্কা করা হচ্ছে কিনা, জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, “আমরা নেতিবাচক কথা বলতে চাই না, ইতিবাচক কথা বলব। জাতিসংঘ আছে, তাদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা আমরা করব। সবারই একটা ফোরাম আছে, সেই ফোরামে আমাদের উদ্বেগের কথা জানাব। জাতিসংঘেরও একটা ভূমিকা আছে। জাতিসংঘের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করব।
মিয়ানমারের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানোর কোনও কারণ নেই জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাত সীমান্ত পর্যন্ত গড়াচ্ছে। এটা এমন নয় যে বাংলাদেশ-মিয়ানমার যুদ্ধ চলছে। সীমান্ত থেকে ছিটকে পড়ছে মর্টার শেল, গোলা। আমাদের দুজন নাগরিক নিহত হয়েছেন। মিয়ানমারের কিছু সীমান্তরক্ষী বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন।”
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমাদের কনসার্ন আমরা জানাব এবং তাদের বক্তব্য শুনবেন আমাদের ফরেন অফিসের কর্মকর্তারা।”
সেন্টমার্টিন, বঙ্গোপসাগর নিয়ে কারও ভূ-রাজনৈতিক খেলা থাকলেও চলমান সংঘাতের সঙ্গে আন্তর্জাতিক কোনও চক্রান্তের সঙ্গে সম্পর্ক আছে বলে মনে করেন না আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, “আমরা মনে করছি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়, তাদের ৫৪টির মতো এথনিক কমিউনিটি আছে। এই কমিটিগুলো বিভিন্ন জায়গা দখলে নিয়েছে এবং সেনাবাহিনীর সঙ্গে তাদের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ। আমাদের সঙ্গে তাদের কোনও বিরোধ নেই। আমাদের রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে যে সমস্যা সেটা আন্তর্জাতিকভাবে সমাধানের প্রয়াস চলছে। তাদের সঙ্গে যুদ্ধের কোনও কারণ হয়নি। আমরা শুধু মিয়ানমার নয়, কারও সঙ্গেই যুদ্ধে জড়াতে চাইনা। আমরা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে আগে আমাদের কনসার্ন জানাব, তাদের কথা শুনব। যে কোনও সমস্যা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করব।”
১০ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা
আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি গণভবনে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের।
তিনি বলেন, “সেদিন গণভবনে আওয়ামী লীগের সকল জেলা,উপজেলা,মহানগর, সভাপতি সাধারণ, সিটি করপোরেশনের মেয়র, পৌরসভার মেয়র উপজেলা চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ,উপদেষ্টা কমিটি, এবং স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য এদের সমন্বয়ে বিশেষ বর্ধিত সভা হবে। সেখানে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।”
এসময় সংরক্ষিত মহিলা আসনে মনোনয়ন ফরম বিক্রি কার্যক্রমও পরিদর্শন করেন তিনি। বলেন, “আমরা আশা করছি নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণা করবে। তারপর আমরা আমাদের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করব, মনোনয়ন বোর্ড বসে ৪৮ জনের প্রার্থিতা চূড়ান্ত করবে।”
সংবাদ সম্মেলনে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান উপস্থিত ছিলেন।