Beta
বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫
Beta
বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫

মামলার যবনিকাপাত, হদিস মিলল না কল্পনা চাকমার

কল্পনা চাকমা
কল্পনা চাকমা
[publishpress_authors_box]

পার্বত্য চট্টগ্রামের হিল উইমেন্স ফেডারেশন নেত্রী কল্পনা চাকমা অপহরণ মামলাটি ২৮ বছরে তার কোনও হদিস না মেলার মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত হয়ে গেল।

পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে বাদীপক্ষের নারাজির আবেদন মঙ্গলবার নামঞ্জুর করে দিয়েছেন রাঙ্গামাটির জ্যেষ্ঠ বিচার বিভাগীয় হাকিম ফাতেমা বেগম মুক্তা।

আট বছর আগে জেলা পুলিশ সুপার মামলাটিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে বলেছিলেন, কল্পনা চাকমা অপহৃত হলেও কে বা কারা করেছে, তার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

আদালত শুনানির পর বাদীর আবেদন নাকচ করে পুলিশের সেই প্রতিবেদনটিই গ্রহণ করেছে বলে বলে বাদীপক্ষের আইনজীবী জুয়েল দেওয়ান জানান।

এখন উচ্চ আদালতে যাবেন জানিয়ে তিনি বলেন, “এ মামলায় পুলিশ সুপারের তদন্ত প্রতিবেদনে প্রকৃত আসামিদের নাম উল্লেখ না করে আড়াল করে সন্দেহভাজন অভিযুক্তদের দায়মুক্ত করা হয়েছে। আমরা উচ্চতর আদালতে যাব।”

কল্পনা চাকমার বড় ভাই ও মামলার বাদী কালিন্দী কুমার চাকমাও বলেন, তিনি আদালতের আদেশে সন্তুষ্ট নন। উচ্চতর আদালতে গিয়ে পুনরায় আবেদন করবেন তিনি।

১৯৯৬ সালের ১১ জুন মধ্যরাতে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা লাইল্যাঘোনার বাড়ি থেকে কল্পনা চাকমা অপহৃত হন। পাহাড়ি নেত্রী অপহরণের ঘটনাটি দেশজুড়ে ছিল আলোচিত। বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনও এনিয়ে সরব হয়েছিল। 

পরদিন বাঘাইছড়ি থানায় কালিন্দী চাকমা বাদী হয়ে অপহরণের মামলা করেন। পরে মামলাটি রাঙ্গামাটির আদালতে তোলা হয়। সিআইডিকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

পরে আদালত মামলার অধিকতর তদন্তের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে রাঙামাটি পুলিশ সুপারকে দায়িত্ব দেন। এ মামলার ৩৯তম তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে ২০১৬ সালে রাঙামাটির পুলিশ সুপার তদন্তের চুড়ান্ত প্রতিবেদন দেন।

তখন কালিন্দী চাকমা চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে নারাজি আবেদন দেন। তিনি অধিকতর তদন্তের দাবি জানান।

আদালতে এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে বহু দিন শুনামি হয়। শেষে মঙ্গলবার শুনানির নির্ধারিত দিনে নারাজি আবেদন নাকচ করে পুলিশ প্রতিবেদনই গৃহীত হলো।

আদালতের এ আদেশে ক্ষোভ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে পাহাড়ি সংগঠন ইউপিডিএফের সহযোগী সংগঠন হিল উইমেন্স ফেডারেশন।

ফেডারেশনের সভাপতি নীতি চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক রিতা চাকমা বিবৃদিতে বলেন, “পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত আওয়ামী লীগ সরকার আদালতসহ সকল গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহকে দলীয়করণ করেছেন। এ সরকারের অধীনে চিহ্নিত অপরাধীদের বিচার আশা করা যায় না।

“জনগণের কাঠগড়ায় চিহ্নিত অপহরণকারী লেফটেন্যান্ট ফেরদৌস গং এবং বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারকে জবাবদিহি করতে হবে।”

হিল উইমেন্স ফেডারেশন কল্পনা চাকমাকে অপহরণের জন্য পাহাড়ে কর্মরত তৎকালীন সেনাকর্মকর্তা ফেরদৌসকে দায়ী করে আসছেন।

কল্পনা চাকমা অপহরণের ঘটনা তদন্তে তৎকালীন সরকার বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটিও গঠন করেছিল। তবে কোনও হদিস বের করতে পারেনি। সেই তদন্ত প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশও করা হয়নি।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত