রাঙ্গামাটি জেলার কৃত্রিম জলাধার কাপ্তাই হ্রদের পানি এখনই ছাড়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোশারফ হোসেন খান, যিনি হ্রদটির ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি।
তবে ৫ এমএসএল (মিন সি লেভেল) পানি যোগ হলেই হ্রদের জলকপাট খুলে দেওয়া হতে পারে। তাতে কর্ণফুলী নদীতে পানি বেড়ে বড়ইছড়ি, রাঙ্গুনিয়া এলাকা প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোশারফ হোসেন খান বলেন, “কাপ্তাই হ্রদে পানি ধারণ ক্ষমতা ১০৯ এমএসএল। হ্রদে বর্তমানে পানি আছে ১০৪ এমএসএল (মিন সি লেভেল)।
“জলাধারটিতে পানি এখনও ধারণ ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। এ কারণে এখনই কাপ্তাই হ্রদের পানি কাপ্তাই বাঁধ দিয়ে ছাড়া বা নির্গমণ করানো হচ্ছে না।”
টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা ঢলের কারণে বাংলাদেশের আট জেলা- সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ফেনী, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও খাগড়াছড়ি জেলা বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে।
ভারি বৃষ্টি আর উজানের ঢল থেকে মুক্ত নয় রাঙ্গামাটিও, যার ফলে বাড়ছে কাপ্তাই হ্রদের পানি। ধস দেখা দিয়েছে পাহাড়ে।
বৃহস্পতিবার সকালে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার মারিশ্যা-বাঘাইহাট সড়কের প্রশিক্ষণ টিলা এলাকায় পাহাড়ধস হয়। একই সময়ে এ জেলার কুতুকছড়ি এলাকার সড়ক পানিতে ডুবে যায়। এতে রাঙ্গামাটির সঙ্গে খাগড়াছড়ি জেলার যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ষাটের দশকে পাকিস্তান আমলে রাঙ্গামটির কাপ্তাই উপজেলায় কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ দিয়ে নির্মাণ করা হয় কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্র। বাঁধের ফলে রাঙ্গামাটির ৫৪ হাজার একর কৃষিজমি ডুবে গিয়ে কাপ্তাই হ্রদের সৃষ্টি হয়।
কাপ্তাই হ্রদে বাঁধ দেওয়া অংশে ১২ দশমিক ২ মিটার দীর্ঘ ও ১১ দশমিক ৩ মিটার চওড়া ১৬টি জলকপাট বা স্লুইসগেট রয়েছে। এসব জলকপাট দিয়ে একসঙ্গে প্রতি সেকেন্ডে ৫ লাখ ২৫ হাজার কিউসেক পানি নির্গমন করানো যায়।
কাপ্তাই হ্রদ ১০৯ এমএসএলের বেশি পানিতে পূর্ণ হলে জলকপাট দিয়ে পানি নির্গমন করানো হয়। অর্থাৎ বৃষ্টি বা উজানের ঢলের কারণে মাত্র ৫ এমএসএল পানি যোগ হলেই জলকপাট খুলে দেওয়া হতে পারে।