“গলায় চকচকে চেইন, পরনে নিয়ন শার্ট, গোলাপি হেড ব্যান্ড, সামার ক্যাম্পের নাচ, খসে পড়া তারা দেখে ইচ্ছে পূরণে বিড়বিড় করা, বাস্কেটবল খেলতে গিয়ে জোচ্চুরি, বন্ধুত্ব থেকে ভালোবাসার এসব চরিত্র বেঁচে থাকে কালের গভীরে আর সময়কে ছাড়িয়ে।”
ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে করণ জোহরের এই মন্তাজ বলে দিচ্ছে, নিজের প্রথম পরিচালনার সিনেমা ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ নিয়েই কথা বলছেন তিনি।
১৬ অক্টোবর ২৬ বছর পার করছে প্রেম, দুষ্টুমি, আবেগ আর নাচগানে ভরপুর হিন্দি সিনেমা ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’।
১৯৯৮ সালে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমায় ছিলেন শাহরুখ খান, কাজল, এবং রানি মুখার্জি। সালমন খান অভিনয় করেছিলেন বিশেষ চরিত্রে। মায়ের চরিত্রে কাজ করেছিলেন ফরিদা জালাল।
এত বছর পরেও রাহুল-অঞ্জলির সেই প্রেম কাহিনি সিনেমাপ্রেমীদের মনে জায়গা করে রেখেছে।
স্মৃতিকাতর করণ জোহর লিখেছেন, “ সব চরিত্রে সেরা নির্বাচন আর সেরা ক্রু নিয়ে কাজ হয়েছিল। সেটে প্রথম দিনের অনুভূতি বেঁচে থাকবে চিরদিন…২৬ বছর পেরিয়ে গেলো!”
করণ জোহরের সেই পোস্টে এক অনুরাগী একই আবেগে লিখেছন, “কিছু মানুষের কাছে এই সিনেমা কোনোদিনই পুরনো হবে না।
“আপনার পরিচালিত ‘কাভি আলবিদা না কেহে না’ কিংবা হালের মুক্তি পাওয়া সিনেমার চাইতে ওটাই সেরা ছিল।”
আরেকজন অনুরাগী লিখেছেন, “অ্যানিভার্সারির শুভেচ্ছা জানাই; এই সিনেমা দেখে বড় হয়েছে পুরো একটি প্রজন্ম।”
করণ জোহর এই সিনেমায় টিনা চরিত্রে অভিনয়ের জন্য টুইঙ্কেল খান্নার কাছে প্রস্তাব রাখেন। টুইঙ্কেলকে ভেবেই নাকি সিনেমায় চরিত্রের নাম টিনা রাখা হয়।
কিন্তু টুইংকেল খান্না সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। এরপর একে একে ঊর্মিলা মার্তণ্ডকার, টাবু, শিল্পা শেঠি, রাভিনা ট্যান্ডন, এমনকি কারিশমা কাপুরকেও রাজি করানো যায়নি।
আর ওই সময় রানি মুখার্জিকে এই চরিত্রে নিতে করণ জোহরের কাছে প্রস্তাব রেখেছিলেন আদিত্য চোপড়া; যিনি যশরাজ ফিল্ম কর্ণধার এবং এখন রানির স্বামী।
শেষ পর্যন্ত টিনা হয়ে দর্শকের মনে এত বছর পরে জায়গা করে রয়েছেন রানি মুখার্জি।
ত্রিভুজ প্রেমের গল্প ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ মুক্তির পর ইতিহাস গড়ে হয়ে ওঠে ১৯৯৮ সালের সবচেয়ে ব্যবসাসফল হিন্দি সিনেমা।
ধর্মা প্রোডাকশনের প্রায় ৯ কোটি রুপি বাজেটের এই সিনেমা আয় করেছিল ১০৩ কোটি রুপি।
‘হাম আপকে হ্যায় কৌন…!’ এবং ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’ সিনেমার পর তৃতীয় হিন্দি সিনেমা হিসেবে ১০০ কোটি রুপি আয়ের রেকর্ড গড়ে ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’।
পরিচালনার পাশাপাশি এই সিনেমার চিত্রনাট্য লিখেছিলেন করণ জোহর নিজেই।
এই সিনেমার গান লেখার কথা ছিল জাভেদ আখতারের। কিন্তু সিনেমার নাম তার কাছে শ্লীল মনে হয়নি বলে তিনি কাজ করেননি। পরে সামির হলেন এই সিনেমার গানের গীতিকার।
সামিরের লেখা এবং যতিন-ললিতের সুর করা ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’, ‘কোই মিল গায়া’, ‘লাড়কি বড়ি আনজানি হ্যায়’ এবং বাকি গানগুলোও এখনো মানুষের মুখে মুখে ফেরে।