ভারতশাসিত কাশ্মীরের পহেলগাম শহরে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহতের ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের সঙ্গে মূল সীমান্তপথ বন্ধ করে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
একই সঙ্গে দিল্লি থেকে পাকিস্তানের কূটনীতিকদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে এবং ঐতিহাসিক সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত করা হয়েছে।
বুধবার রাতে ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তাবিষয়ক কমিটির বৈঠকে নেওয়া এসব সিদ্ধান্ত এরই মধ্যে বাস্তবায়ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সের ভারত সফরের মধ্যেই মঙ্গলবার দুপুরে পহেলগামের বৈসরণ উপত্যকায় ঘুরতে যাওয়া পর্যটকদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে একদল বন্দুকধারী।
এতে দুই বিদেশিসহ ২৬ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয় ২০ জনের বেশি মানুষ।
এই হত্যাকাণ্ডের দায় নিয়েছে পাকিস্তানভিত্তিক সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবার শাখা দ্য রেজিট্যান্স ফ্রন্ট (আরটিএফ)।
ঘটনার পরদিন বুধবার সকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সৌদি আরব সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে আসেন এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেন।
এরপর এদিন রাতে বৈঠকে বসে ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তাবিষয়ক কমিটি।
বৈঠক শেষে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি জানান, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঁচটি পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বৈঠকে।
সেগুলো হচ্ছে- সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করা; দু’দেশের একমাত্র বাণিজ্য পথ আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া; দিল্লিতে পাকিস্তানের হাইকমিশনে নিযুক্ত কূটনীতিকদের বহিষ্কার ও ইসলামাবাদে ভারতের হাই কমিশনে নিযুক্ত ভারতীয় কর্মকর্তাদের ফেরত; দু’দেশের হাইকমিশনগুলোতে কর্মরতদের সংখ্যা ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ করা এবং পাকিস্তানিদের সার্ক ভিসা বাতিল করা।
পহেলগামে হামলার ঘটনায় ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করলেও তা নাকচ করে দিল্লির নেওয়া পদক্ষেপের জবাবের বিষয়ে বৃহস্পতিবার জাতীয় নিরাপত্তা বৈঠকে বসতে যাচ্ছে ইসলামাবাদ।
এদিকে কাশ্মীরে হামলার ঘটনায় পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করতে এদিন সব দলকে নিয়ে বৈঠক করবে মোদী সরকার।
এছাড়া বৃহস্পতিবার সর্বদলীয় বৈঠকের ডাক দিয়েছেন কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহও।