Beta
শনিবার, ১৫ মার্চ, ২০২৫
Beta
শনিবার, ১৫ মার্চ, ২০২৫

সেরা করদাতা কাউছ মিয়ার জীবনাবসান

কাউছ মিয়ার হাতে প্রতিবারই উঠত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মাননা স্মারক। ফাইল ছবি
কাউছ মিয়ার হাতে প্রতিবারই উঠত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মাননা স্মারক। ফাইল ছবি
[publishpress_authors_box]

প্রতিবছর ব্যবসায়ীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি করদাতা হিসাবে যিনি সংবাদের শিরোনাম হতেন, সেই কাউছ মিয়া আর নেই।

সোমবার মধ্যরাতে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। তার বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর।

হাকিমপুরী জর্দার মালিক কাউছ মিয়া শুধু করদাতা হিসাবেই নয়, দানশীল ব্যক্তি হিসাবেও পরিচিত ছিলেন।

বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি। সেখানেই তার মৃত্যু হয় বলে কাউছ মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর মিয়া জানিয়েছেন।

কাউছ মিয়া স্ত্রী, ৮ ছেলে ও ৮ মেয়ে রেখে গেছেন।

জাহাঙ্গীর বলেন, “আব্বা বার্ধক্যের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন। সম্প্রতি সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসার পর তাকে দেশে আনা হয়েছিল। এরপর পুরান ঢাকার বাসভবনে শয্যাশায়ী ছিলেন।

“শনিবার বিকেলে আব্বার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আজগর আলী হাসপাতালে নেওয়া হয়। দুদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে আব্বা দুনিয়া থেকে চিরবিদায় নেন।”

জাহাঙ্গীর জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বাদ জোহর আরমানীটোলা মাঠে জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে তার বাবাকে দাফন করা হবে।

কাউছ মিয়ার জন্ম চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নে ১৯৩১ সালে। তিনি দীর্ঘদিন চাঁদপুর জেলা শহরের পুরান বাজারে ব্যবসা করেন। পরে হাজিগঞ্জে, সেখান থেকে নারায়ণগঞ্জ এবং পুরান ঢাকার আরমানীটোলায় ব্যবসা চালু করেন।

বাইশ বছর বয়সে ব্যবসায় নেমে মৃত্যু পর্যন্ত এককভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। হাকিমপুরীর জর্দার পাশাপাশি তার বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা ছিল।

কাউছ মিয়া স্বাধীনতার আগে একবার এবং পরে যতবার এনবিআর সেরা করদাতার সম্মাননা দিয়েছে প্রতিবারই অর্থাৎ টানা ২০ বার তিনি শীর্ষ করদাতার সম্মাননা পান। গত বছর অসুস্থ শরীর নিয়ে হুইল চেয়ারে করে এসে নিজ হাতে তিনি সেরা করদাতার সম্মাননা নিয়েছিলেন। মুজিববর্ষেও তাকে করদাতা হিসাবে সম্মাননা দেওয়া হয়।

পারিবারিকভাবে বিত্তের মালিক হয়েও নিজে ব্যবসা শুরুর পর সাধারণ জীবন যাপন করতেন কাউছ মিয়া। তার পুরান ঢাকার ব্যবসায়িক কার্যালয়টিও ছিল খুবই সাধারণ।

ব্যবসার প্রয়োজনে কখনও ব্যাংক ঋণও তিনি নেননি। কখনও রাজনীতিতেও জড়াননি।

এনিয়ে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “ব্যাংক থেকে আমার পূর্ব পুরুষরাও কখেনও ঋণ নেননি। আমারও প্রয়োজন হয়নি। আমার পূর্বপুরুষরা রাজনীতি করেনি, আমিও করিনি।

“আর ছেলেদেরও করতে দিই না। ছেলেদের বলেছি, তোমরাও ব্যবসা করবা। নিজের পরিশ্রম করবা, গরিব মানুষকে সহযোগিতা করবা।”

ওই সাক্ষাৎকারে তিনি ধারণা দিয়েছিলেন, বিভিন্ন ব্যবসা আর জায়গাজমি মিলিয়ে তার মোট সম্পদের মূল্যমান প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত