বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর দেশে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক পালাবদল। চারদিকে পদত্যাগের মিছিল। ফুটবলেও টানা ১৬ বছরের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে পদত্যাগের দাবি উঠেছে। ফুটবল ফেডারেশনে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অগোছালো কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি সমালোচিত হচ্ছিলেন আগে থেকেই। কিন্তু সালাউদ্দিন পদত্যাগের দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন সকাল সন্ধ্যার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে।
প্রশ্ন : বাংলাদেশ ফুটবল আল্ট্রাস ও একদল ফুটবল সমর্থক আপনার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছে। আপনি নিশ্চয়ই শুনেছেন?
সালাউদ্দিন : আমি শুনেছি ওরা আন্দোলন করছে। কিন্তু ওরা আমার পদত্যাগ চাওয়ার কে, সেটা আমি জানতে চাই। ফুটবলে এভাবে কাউকে নিষিদ্ধ করার নিয়ম কোথায় আছে, তা আমি জানতে চাই। ওরা বললেই তো হবে না। ওরা কারা? ওরা সাইফ স্পোর্টিংয়ের (২০২২ সালে বিলুপ্ত ক্লাবের কর্ণধার তরফদার রুহুল আমিন) হয়ে কথা বলছে। ফুটবলে তাদের কতটুকু অবদান আছে?
প্রশ্ন : সাবেক ফুটবলাররাও বাফুফের নিয়মতান্ত্রিক সংস্কারের দাবি তুলে বাফুফে প্রাঙ্গনে জড়ো হয়েছিলেন।
সালাউদ্দিন : ওরা এসেছিল কিন্তু আমার পদত্যাগ চায়নি।
প্রশ্ন : একদল সমর্থক বারবার আপনার পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছে। আপনার জবাব কী ?
সালাউদ্দিন : তারা আমাকে বলছে, আমি যেন বলি আর নির্বাচন করব না। কিন্তু তারা বলার কে? আপনি তখনই আমার পদত্যাগের কথা বলতে পারতেন যদি ফেডারেশনে নির্বাচন না হতো। নির্বাচন হবে ২৬ অক্টোবর। আপনি নিজে নির্বাচন করেন। আমার বিরুদ্ধে আপত্তি করার কে?
আমি কিন্তু ২০০৮ সালে নির্বাচন করে চেয়ারে বসেছি। তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল। বাদল রায়, সালাম মুর্শেদী, হারুনুর রশীদ, এদের বিপক্ষে নির্বাচন করেছি। আমি নির্বাচন করেই এসেছি। আপনিও নির্বাচন করে আসুন।
প্রশ্ন : আপনি তো আওয়ামী লীগের খুব ঘনিষ্ঠ…
সালাউদ্দিন : অবশ্যই আমি আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ। কিন্তু আমি কি রাজনীতি করেছি? আমি আওয়ামী লীগের সবাইকে চিনি। আমি বিএনপি, জাতীয় পার্টির সবাইকে চিনি। আমি এই দেশেরই ছেলে। আমাকে বিএনপি আমলে স্বাধীনতা পুরস্কার দিয়েছে। শেখ হাসিনা আমাকে আজীবন সম্মাননা (শেখ কামাল পুরস্কার) দিয়েছেন। আই অ্যাম এ ন্যাশনাল ফিগার।
আমি রাজনীতি করি না। আমি ১৩ বছর জাতীয় দলে খেলেছি। জাতীয় দলে অধিনায়কত্ব করেছি। স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়েছি। আমি স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের খেলোয়াড়। কেউ এসে বললে তো আমি পদত্যাগ করব না।
প্রশ্ন : তাহলে আপনি পদত্যাগ করছেন না এবং পঞ্চমবারের মতো বাফুফে নির্বাচনও করবেন।
সালাউদ্দিন : আমি অবশ্যই নির্বাচন করব। কাউন্সিলর পরিবর্তন হলে হবে। তাতে আমার সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হবে না। পাস করলে করব। ফেল করলেও মেনে নেব।