জাতীয় দলে ২০১৫ সালে অভিষেকের পর থেকে অপরিহার্য হয়ে উঠেছেন লিটন দাস। তামিম ইকবালের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটির সমাধান হিসেবে তৈরি করা হয় তাকে। সেই লিটন গত কিছুদিনে আছেন বিরাট সমস্যায়। ব্যাটে রান না থাকায় প্রথমবারের মতো ওয়ানডে দল থেকে বাদ পড়েছেন।
লিটনের ব্যাটে শুধু জাতীয় দলের জার্সিতেই যে রান খরা এমন না। ঘরোয়া লিগে খেলতে নেমে আবাহনীর জার্সিতে এক ম্যাচে করেছেন ১৯ বলে মাত্র ৫ রান। এমন লিটনকে আগে দেখেনি কেউই। পাশাপাশি জাতীয় দলে তাকে নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা বিতর্ক। কিছুদিন আগে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপনও লিটনের ব্যাপারে বলেছিলেন, “অন্য কিছু সমস্যা আছে।”
সব সমস্যা কাটিয়ে উঠতে আবারও ছুটিতে গিয়েছেন লিটন। বিশ্বকাপের পর পরিবারকে সময় দিতে ছুটি নিয়েছিলেন তিনি। এবার ঢাকা লিগে আবাহনীর কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনের কাছ থেকে ছুটি নিয়েছেন মানসিক চাপ কাটিয়ে উঠতে। সুজনও বারণ করেননি, লিটনকে তাই ঢাকা লিগে ঈদের পর সুপার লিগ পর্বের আগে দেখা যাচ্ছে না।
তবে বিশ্রামই কি লিটনের জন্য আসল সমাধান? সুজন এমনটা মনে করেন না তার মতে লিটনকে ফিরে আসতে হলে “মনখোলা” হতে হবে। মিশতে হবে সবার সঙ্গে, ক্রিকেট নিয়ে-ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথাও বলতে হবে, “যে লিটন ছোটবেলা থেকে যেমন ছিল, আমার মনে হয় যে একটু সিনিয়র ক্রিকেটার হয়ে গেছে, একটু রিজার্ভ হয়ে গেছে, ওগুলো থেকে বের হতে হবে আসলে। ওর আচরণগত সমস্যা এটা বলতে চাই না, আমি বলতে চাই সবার সঙ্গে একটু মেশা, আরও একটু সময় দেয়া ক্রিকেটকে। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।”
সুজন আরও যোগ করেন, “আমি জানি সবার ব্যক্তিগত জীবন আছে, লিটনের আছে। এখন সে বিয়ে করেছে, কিন্তু ক্রিকেট তার রুটি-রুজি, পেশা। সুতরাং এখানে আরেকটু সময় দেয়া দরকার। লিটন অনূর্ধ্ব-১৩ থেকে এসেছে, এত বছর তাকে আমরা ক্যারি করেছি এখন বাংলাদেশ তার কাছ থেকে সেরাটা চায়। আমার মনে হয় লিটনও সেটা চায়। কিন্তু কিছু সময় খারাপ আসে, ওই খারাপ সময়টায় একাকী থাকার পাশাপাশি শেয়ার করাটাও দরকার আছে।”
লিটনের সঙ্গে সামনা-সামনি দেখা করার অপেক্ষায় আছেন সুজন। তখন চাপ কাটিয়ে উঠতে কিছু পরামর্শ দেবেন। ২০০৬ সালে নিজের কোচিং শুরুর সময়ে অনূর্ধ্ব-১৩ দলের ক্রিকেটার হিসেবে লিটনকে দেখেছেন। এখন শিষ্যর বাজে সময়ে মন খারাপ সুজনেরও।
তবুও পেশাদারিত্বের জায়গা থেকে সরতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন সুজন, “আবাহনীতে এখন আর সহজে সুযোগ নেই। আবাহনী জাতীয় দল থেকেও শক্তিশালী এখন। লিটন বিশ্রাম থেকে ফিরে পারফর্ম না করলে একাদশে জায়গা পাওয়ার তার জন্য কঠিন। অবশ্যই সে এত বছর আবাহনীর হয়ে পারফর্ম করেছে তার জন্য আলাদা সুযোগ থাকবে। কিন্তু দিন শেষে আমি চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। আমি প্রচণ্ড পেশাদার। যখন দলের ব্যাপার আসবে, সেখানে আবাহনী প্রথম।”