হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেও খালেদা জিয়া সুস্থ নন বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফলে উন্নত চিকিৎসার জন্য এখনই বিদেশে পাঠানো হচ্ছে না।
খালেদা জিয়া হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরার দুদিন পর শনিবার ঢাকার গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে একথা জানান বিএনপি মহাসচিব।
৭৯ বছর বয়সী বিএনপি চেয়ারপারসন এভারকেয়ার হাসপাতালে ছয় দিন থাকার পর গত ১৮ সেপ্টেম্বর গুলশানের বাসায় ফেরেন।
তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে ফখরুল বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া খুব সুস্থ না। গতকাল (শুক্রবার) উনার টেম্পেরেচার (জ্বর) ছিল।”
গত মাসে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর মুক্ত খালেদা জিয়ার বিদেশ যেতে এখন কোনও বাধা নেই। এর আগে বন্দি থাকা অবস্থায় তাকে বিদেশ পাঠানোর দাবি জানিয়ে আসছিল বিএনপি।
খালেদা জিয়াকে কবে বিদেশে নেওয়া হবে- জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, “উনাকে ডাক্তাররা এখন পর্যন্ত ফিট টু ফ্লাইং … এটা মনে করছেন না। সেজন্য বিদেশে যেতে উনার বিলম্বটা হচ্ছে।”
গত রবিবার খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছিলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন চিকিৎসার জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিদেশে যাবেন। তবে কোথায় যাবেন, কোন হাসপাতালে চিকিৎসা নেবেন, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস ও কিডনির জটিলতা, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে ভুগছেন।
এভারকেয়ার হাসপাতালের গঠিত মেডিকেল বোর্ডের নিবিড় পর্যবেক্ষণেই বাসায় তার চিকিৎসা চলবে তার। অধ্যাপক সাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে এই মেডিকেল বোর্ড দীর্ঘদিন ধরে তার চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে।
দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ড নিয়ে দুই বছরের বেশি সময় কারাগারে কাটানোর পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়া শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পেয়েছিলেন।
এরপর থেকে ছয় মাস পরপর সরকার তার মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছিল। তবে তাকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছিল না।
এর মধ্যে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদার রক্তনালীতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত বছরের ২৭ অক্টোবর। এরপর গত ২৫ জুন তার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বাসানো হয়।
ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতন হওয়ার পরদিনই রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করেন।