গ্যাটকো দুর্নীতি মামলার দায় থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং দলটির দুই স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে অব্যাহতির আদেশ দিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক আবু তাহেরের আদালত এই আদেশ।
এদিন মামলাটির অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য ছিল। খালেদা জিয়ার পক্ষের আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার, জয়নাল আবেদীন মেজবাহ, জাকির হোসাইনসহ প্রমুখ মামলাটির দায় থেকে অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম এর বিরোধিতা করেন।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত এই তিনজনকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতির আদেশ দেন। এছাড়াও ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। অভিযোগ গঠনের সময় নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার চেয়েছেন তারা।
খালেদা জিয়ার আরেক আইনজীবী আব্দুল হান্নান ভূঁইয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিচার শুরু হওয়া অপর আসামিরা হলেন– চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আলী, সাবেক মন্ত্রী কর্নেল আকবর হোসেনের (প্রয়াত) স্ত্রী জাহানারা আনছার, দুই ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন ও এ কে এম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, সাবেক নৌ সচিব জুলফিকার হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক সদস্য এ কে রশিদ উদ্দিন আহমেদ এবং গ্লোবাল এগ্রোট্রেড প্রাইভেট লিমিটেডের (গ্যাটকো) পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব, এ এম সানওয়ার হোসেন, সৈয়দ তানভীর আহমেদ, সৈয়দ গালিব আহমেদ ও এ এম এম শাহাদাত হোসেন।
আসামি ইসমাইল হোসেন (সায়মন) ও শাহজাহান এস হাসিব হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছে।
২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. গোলাম শাহরিয়ার ১৩ জনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোকে ঢাকার কমলাপুর আইসিডি ও চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পাইয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার ক্ষতি করেছেন।
২০০৮ সালের ১৩ মে মামলাটি তদন্ত করে চারদলীয় জোট সরকারের প্রভাবশালী ৯ জন সাবেক মন্ত্রী ও উপমন্ত্রীসহ মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক মো. জহিরুল হুদা অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
২৪ আসামির মধ্যে সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, আব্দুল মান্নান ভুইয়া, সাবেক মন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী, খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো, এম কে আনোয়ার, সাবেক মন্ত্রী এম শামছুল ইসলাম, বন্দরের প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা আহমেদ আবুল কাশেমসহ ৯ জনের মৃত্যুর পর মামলায় আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫ জনে। এদের মধ্যে খালেদা জিয়াসহ তিনজনকে বৃহস্পতিবার অব্যাহতি দিলেন আদালত।