কথা ছিল বিএনপি আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ছয় বছর পর কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সরাসরি যোগ দেবেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
আগামী শনিবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল।
স্বাভাবিকভাবেই এই আয়োজন নিয়ে বিএনপিতে ছিল নানা আয়োজন। এই সমাবেশের মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়া রাজনীতিকে সক্রিয় হতে যাচ্ছেন বলেও মনে করছিলেন কেউ কেউ।
তবে শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত দিনে হচ্ছে না মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ। খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতার কারণে শনিবারের সমাবেশ স্থগিত করা হয়েছে। সেইসঙ্গে পিছিয়ে গেছে চিকিৎসার জন্য তার বিদেশ সফরের পরিকল্পনাও।
বৃহস্পতিবার সকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, “ম্যাডাম পরশু রাত থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। যে কারণেই চিকিৎসদের পরামর্শ অনুযায়ী সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন না তিনি।”
যেহেতু তিনি অংশ নিতে পারছেন না, তাই আপাতত স্থগিত করা হচ্ছে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত সমাবেশটিও।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আগামী শনিবার মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে যেতে পারছেন না। মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাৎ ভাই আজ দুপুর ১টা ২৫মিনিট আমাকে জানিয়েছেন ২১ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী তারিখ চূড়ান্ত হলে জানানো হবে।”
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন সকাল সন্ধ্যাকে জানান, গুলশানের বাসাতেই চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসা চলছে। এই অসুস্থতার কারণে তার বিদেশে যাওয়ার পরিকল্পনাও পেছানো হয়েছে।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ড থেকে মুক্ত হওয়ার পর গত ২৯ অক্টোবর খবর আসে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া।
শুরুতে জানা গিয়েছিল, চলতি মাসে প্রথমে তিনি লন্ডনে যাবেন ছেলে তারেক রহমানের কাছে। বিশেষায়িত এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে।
পরে লন্ডন থেকে অন্য একটি দেশে নিয়ে তাকে কোনও একটি ‘মাল্টি ডিসিপ্লিনারি মেডিকেল সেন্টারে’ ভর্তি করা হবে বলেও সেসময় জানিয়েছিলেন এজেডএম জাহিদ হোসেন। সেইসঙ্গে এর মধ্যে সৌদি আরবে ওমরাহ পালনেরও কথা ছিল খালেদা জিয়ার।
বিদেশে চিকিৎসার ক্ষেত্রে সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়া ও তার চিকিৎসা দলকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়া হবে বলেও আশ্বাস এসেছিল অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে।
সেই অনুযায়ী যুক্তরাজ্য, যুক্তরাজ্য ও সৌদি আরবের পাসপোর্ট ও ভিসার কাজও শেষ হয়েছে।