Beta
সোমবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
সোমবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫

খালেদা জিয়ার বিদেশ গমনে আরও অপেক্ষা  

zahid-bnp
[publishpress_authors_box]

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছুদিন। কারণ, তিনি উড়োজাহাজের যাত্রী হওয়ার মতো শারিরীক অবস্থায় আছেন কি না, তা পর্যালোচনা চলছে।

শারীরিকভাবে সক্ষম হলেই দ্রুত তাকে বিদেশে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, উড়োজাহাজে উঠতে হলে নেগেটিভ প্রেসার সহ্য করার মতো সুস্থতা থাকতে হয়। সেটাই বিবেচনা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন একথা বলেন।

তিনি বলেন, “গত সাড়ে ৪ বছরে বিভিন্ন সময়ে তিনি (খালেদা জিয়া) ৪৭৯ দিন এভারকেয়ার হাসপাতালে ছিলেন। গত ২১ আগস্ট আমরা তাকে বাসায় নিয়েছিলাম, গতকাল আবার উনাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে।”

‘কথা আসবে আপনারা উনাকে দেশের বাইরে নিচ্ছেন না কেন?’ এবিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে জাহিদ হোসেন বলেন, “একজনকে দেশের বাইরে নিতে হলে শারীরিক সুস্থতা প্রয়োজন। উড়োজাহাজে উঠতে হলে নেগেটিভ প্রেসার সহ্য করার মতো সুস্থতা থাকতে হয়। ফ্লাই করার বা ল্যান্ড করার সময়ে নেগেটিভ প্রেসার কতটুকু উনি সহ্য করতে পারবে? সেসব গল্পের বিষয় না, সেটি একাডেমিক, প্রফেশনাল ও সায়েন্টিফিক বিষয়।”

সেই বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে মেডিকেল বোর্ডের দেশি-বিদেশী সদস্যরা আলোচনা করছেন এবং শারীরিকভাবে উনি একটু সুস্থ হলেই দ্রুততম সময়ের মধ্যে উনাকে বাইরে নেওয়ার চেষ্টা চলছে বলেও জানান বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য।

বিগত সরকারের আমলে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে জাহিদ হোসেন অভিযোগ করেন, জেলে নেওয়ার পর খালেদা জিয়ার একাকীত্ব, তার চিকিৎসা না করানো এবং সংকটাপন্ন অবস্থায় রেখে দেওয়া বিগত সরকারের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার অংশ।

“হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলো বিএসএমএমইউতে। সেখানে যে চিকিসা হওয়া দরকার ছিল তার কিছুই সঠিকভাবে হয়নি। তাই ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা এই পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, উনাকে কয়দিন পরপরই হাসপাতালে নিতে হচ্ছে।”

বুধবার রাত ২টায় গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’ থেকে বিএনপি চেয়ারপারসনকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসাধীন আছেন খালেদা জিয়া।

জাহিদ জানান, মেডিকেল বোর্ড বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে দিয়েছেন। সেগুলোর কাজ চলছে।

৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস ও কিডন জটিলতা, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন।

লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসনের রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত বছরের ২৭ অক্টোবর। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে খালেদা জিয়ার রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল।

তার স্বাস্থ্য কিছুটা স্থিতিশীল হলেও পাঁচ মাসের বেশি সময় হাসপাতালে তাকে টানা চিকিৎসা নিতে হয়েছিল। গত ২৫ জুন এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বাসানো হয়।

দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে দুই বছরের বেশি সময় কারাগারে কাটানোর পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে তাকে মুক্তি দেয়।

এরপর থেকে ছয় মাস পরপর সরকার তার মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছিল সরকার। মুক্তি পাওয়ার পর থেকে গুলশানে নিজের বাসভবনেই অবস্থান করছেন খালেদা জিয়া।

ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতন হওয়ার পরদিনই রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করেন।

এছাড়া আওয়ামী লীগ শাসনামলে করা মানহানির পাঁচটি মামলায়ও খালাস পান তিনি।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত