ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মুসলিম দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।
ইসলাম ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ কোরআনের নীতির ওপর ভিত্তি করে এই ঐক্য গড়ার কথা বলেন তিনি। খামেনি বলেন, ফিলিস্তিন, লেবানন এবং অন্যান্য মুসলিম দেশ আর ইরানের শত্রু একই।
শুক্রবার তেহরানের গ্র্যান্ড মোসাল্লা মসজিদে জুমার নামাজের ইমামতির আগে দেওয়া খোতবায় এই আহ্বান জানান তিনি।
এদিন তিনি প্রায় পাঁচ বছর পর জুমার নামাজের ইমামতি করলেন। এছাড়া এটি ২০২০ সালের পর কোনও জনসমাগমে দেওয়া তার প্রথম ভাষণ।
গত মঙ্গলবার রাতে ইসরায়েলে চালানো ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দিকে ইঙ্গিত করে খামেনি বলেন, ইসরায়েলের জন্য এটি ছিল ন্যূনতম শাস্তি।
ইরান ও তার আঞ্চলিক মিত্ররা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পিছপা হবে না বলেও জানান তিনি।
ভাষণে দুইবার তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের প্রশ্নে ইরান কোনও দ্বিধা বা বিলম্ব করবে না।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পরপরই ইসরায়েলে প্রায় ২০০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে হামলা চালায় ইরান। তার আগে সোমবার মধ্যরাতের পর থেকে লেবাননে স্থল হামলা শুরু করেছিল ইসরায়েল।
খামেনি বলেন, “ইসরায়েলের ওপর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ছিল সঠিক, যৌক্তিক এবং বৈধ।”
হিজবুল্লাহ, হামাস এবং ইরানের ইসলামিক বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) সিনিয়র নেতাদের হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে ওই হামলা চালানো হয় বলে জানান খামেনি।
খামেনি হুঁশিয়ারি দেন, ইসরায়েল মঙ্গলবারের হামলার জবাব দেওয়ার চেষ্টা করলে আবারও প্রতিশোধ নেবে ইরান।
তিনি বলেন, “যদি ভবিষ্যতেও তেমন করার প্রয়োজন হয়, আমরা আবারও তাই-ই করবো।” ইসরায়েল বেশি দিন টিকবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর ইসরায়েলের বিমান হামলায় মারা যান লেবাননের ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ। ওই হামলার পর খামেনিকেও গোপন স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
এরপর শুক্রবার জুমার নামাজের সময় তাকে প্রথম জনসমক্ষে দেখা গেল। প্রকাশ্যে হাজির হওয়ার মধ্য দিয়ে আত্মগোপনে থাকার খবরকে নাকচ করার একটা বার্তা দেয়ার চেষ্টাও করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইসরায়েল লেবাননে হামলা শুরু করায় আঞ্চলিক যুদ্ধের যে আশঙ্কা, তা বাস্তব বলে মনে করছেন খামেনি। তাই তিনি মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এই আহ্বান জানান।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, “এদিন খামেনি তার ভাষণে মুসলিমদের মধ্যে ঐক্যের উপর বিশেষ জোর দেন। কারণ, তিনি মধ্যপ্রাচ্যে একটি আঞ্চলিক যুদ্ধের সম্ভাবনা দেখছেন। সেজন্যই তিনি মুসলিমদেরকে একত্রিত হতে বলছেন। ঐক্যবদ্ধভাবে এই হুমকি মোকাবেলা করতে বলছেন, যাতে আঞ্চলিক যুদ্ধ না হয়।”
তথ্যসূত্র: বিবিসি, আল জাজিরা