Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪

মিয়ানমারের কায়িনে জান্তার সেনা দপ্তর ও থানা দখল বিদ্রোহীদের

কারেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (কেএনএলএ) শনিবার থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী জান্তার পদাতিক ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তর দখল করে।
কারেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (কেএনএলএ) শনিবার থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী জান্তার পদাতিক ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তর দখল করে।
[publishpress_authors_box]

তিন দিনের লড়াই শেষে মিয়ানমারের থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী একটি শহরে জান্তা বাহিনীর পদাতিক ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তর ও একটি পুলিশ স্টেশন দখল করেছে দেশটির সশস্ত্র সংগঠন কারেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (কেএনএলএ) ও তাদের মিত্ররা।

দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় কায়িন রাজ্যের মিয়াবতী শহরের থিঙ্গানিনাং গ্রামের ওই দুই স্থাপনা শনিবার বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।

সংবাদ সংস্থা ইরাবতী জানিয়েছে, মিয়ানমারের রাজনৈতিক সংগঠন কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়নের সশস্ত্র অঙ্গসংগঠন কেএনএলএ ও তাদের মিত্ররা বৃহস্পতিবার সকাল থেকে থিঙ্গানিনাং গ্রামে আক্রমণ চালাতে থাকে।

একপর্যায়ে শনিবার ওই গ্রামে অবস্থিত জান্তার ৩৫৫ পদাতিক ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তর বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। একই দিন গ্রামটির একটি থানাও নিজেদের দখলে নিয়ে নেয় জান্তার বিরুদ্ধে লড়াইরত সশস্ত্র সংগঠনগুলো।

কায়িন (আগে এর নাম ছিল কারেন) রাজ্যের সীমান্তবর্তী মিয়াবতী ও কাওকারেক শহরের মাঝে অবস্থিত থিঙ্গানিনাং। এই গ্রামে আছে থাইল্যান্ডে যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক।

জান্তার ৩৫৬ ও ৩৫৭ পদাতিক ব্যাটালিয়নের সদরদপ্তর থিঙ্গানিনাং গ্রামের কাছেই অবস্থিত। সে দুটিতেও হামলা চলছে বলে কারেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির এক যোদ্ধা জানিয়েছেন।         

ওই যোদ্ধা বলেন, “জান্তার ৩৫৬ পদাতিক ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তর দখলে লড়াই করে যাচ্ছি আমরা। ওই সদর দপ্তরের বেশিরভাগ সেনা ঘাঁটি ছেড়ে পালিয়েছে। এখন মাত্র কয়েকজন সেনা সেখানে অবস্থান করছে।

“৩৫৫ ও ৩৫৬ পদাতিক ব্যাটালিয়নের সেনারা পালিয়ে ৩৫৭ পদাতিক ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তরে গিয়ে পাল্টা হামলা চালাচ্ছে।”     

কায়িন রাজ্যের গ্রামটিতে বিদ্রোহীদের হামলার জবাবে বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ করে জান্তা বাহিনী। তিন দিনের লড়াইয়ে তারা প্রায় একশ’র মতো বোমা থিঙ্গানিনাং গ্রাম লক্ষ্য করে ছোড়ে। এতে ৬০টির মতো বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে যায়।

থিঙ্গানিনাং গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, শুক্রবার প্রায় ৬০টি বোমা তাদের গ্রামের ওপর পড়ে। জান্তা বাহিনীর মুহুর্মুহু বোমা হামলায় সেখানে এখন মাত্র ৬০ জন বাসিন্দা আছে।

ওই বাসিন্দা বলেন, “গ্রামে বলতে গেলে এখন কেউ নেই, সবাই চলে গেছে। কেবল কয়েকজন তাদের সম্পত্তি দেখাশোনার জন্য রয়ে গেছে।”

তিনি আরও জানান, থিঙ্গানিনাং গ্রামের প্রায় সাত হাজার বাসিন্দার বড় অংশই কায়িন রাজ্যের মিয়াবতীসহ নিকটবর্তী গ্রামগুলোতে পালিয়ে গেছে।

থিঙ্গানিনাংয়ের পার্শ্ববর্তী খিনগান নি নাং গ্রামে শুক্রবার জান্তা বাহিনীর বোমা হামলায় দুই বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে আট জন।

মিয়ানমারের কায়িন রাজ্যের থিঙ্গানিনাং গ্রামে জান্তা ও বিদ্রোহীদের লড়াইয়ে শনিবার দুপুর পর্যন্ত পাঁচ বিদ্রোহী যোদ্ধা নিহত হন ও দুজন আহত হন। লড়াইয়ে জান্তা বাহিনীর ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

২০২১ সালে অং সান সু চি সরকারকে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করার পরিপ্রেক্ষিতে সে বছর থেকে মিয়ানমারের লাখ লাখ মানুষ সামরিক সরকারের পতনের দাবিতে রাজপথে নামে। তাদের আন্দোলন থামাতে কঠোর পদক্ষেপ নেয় জান্তা সরকার।

মানবাধিকার সংস্থা অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের তথ্য অনুযায়ী, জান্তা সরকারের হাতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৪ হাজার ৬৫৪ জন বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছে। কারাবন্দি হয়েছে ২৬ হাজার ২২৮ জন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত