কুষ্টিয়ায় কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগকর্মীদের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় কোটাবিরোধীরা আটটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়; ভাঙচুর চালায় একটি ট্রেনে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা বুধবার বিকাল ৩টার দিকে জড়ো হয় শহরের মজমপুর গেটে। এক পর্যায়ে সেখানে ছাত্রলীগকর্মীদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা দেওয়া হয়। পরে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা চৌড়হাস স্টেডিয়ামের সামনে অবস্থান নেয়। সেখান থেকে তারা কিছুটা সরে চৌড়হাস মোড়ে সমাবেশ করে।
বিকাল ৫টার দিকে ছাত্রলীগকর্মীরা আবার মোটরসাইকেল নিয়ে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের সমাবেশের দিকে এগিয়ে যায়। পুলিশ এ সময় উভয়পক্ষকে থামানোর চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা ধাওয়া দিলে ছাত্রলীগের কয়েকজন মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে যায়। ফেলে যাওয়া সাতটি মোটরসাইকেলে আগুন দেয় শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা যোগ দেয় বলেও জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে, সন্ধ্যা ৬টার দিকে ছাত্রলীগকর্মীরা হাতবোমা ও ইট-পাটকেল ছুড়তে ছুড়তে কোটাবিরোধীদের দিকে এগিয়ে যায়। তাদের ইট-পাটকেলে স্থানীয় দুই বাসিন্দা আহত হলে এলাকাবাসী ছাত্রলীগকর্মীদের ধাওয়া দেয়। এ সময় ছাত্রলীগকর্মীদের ফেলে যাওয়া একটি মোটরসাইকেলে আগুন দেয় শিক্ষার্থীরা।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেও শিক্ষার্থীদের বাধায় ব্যর্থ হয়। সন্ধ্যা ৭টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে কুষ্টিয়া মজমপুর রেলগেট এলাকায় জড়ো হয়। এর এক পর্যায়ে রাজবাড়ী থেকে পোড়াদহগামী শাটল ট্রেন মজমপুর গেটের কাছাকাছি আসে।
তারা তখন ট্রেনটি আটকে ভাঙচুর চালায়। তারা ট্রেনে পাথর মারে এবং আগুন লাগানোর চেষ্টা করে। এতে ট্রেনের বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হয়। এ পর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখন তারা রেললাইনের পাথর ছোড়ে পুলিশের ওপর। পুলিশ ফাঁকা গুলি চালালে শিক্ষার্থীরা পালিয়ে যায়।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তিনাথ বলেন, “পুলিশ বিকাল থেকে অনেক ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। কিন্তু কোটাবিরোধীরা শেষ পর্যন্ত সব মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। আন্দোলনকারীরা ট্রেন আটকে ভাঙচুর চালায়। পাথর মেরে যাত্রীদের আহত করেন।”
তিনি বলেন, “সরকারি সম্পদ বিনষ্ট করার অধিকার কারও নেই। এ কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জের পাশাপাশি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।”