রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে ‘ফিট’ কিলিয়ান এমবাপ্পে। কিন্তু ফ্রান্সের ম্যাচে ‘আনফিট’ তিনি! ক্লাব ফুটবলে শুরুর একাদশে থাকলেও নেশনস লিগে ফ্রান্সের স্কোয়াডে এই ফরোয়ার্ডকে রাখা হয়নি। কারণ খেলার মতো ‘ফিটনেস’ নেই এমবাপ্পের। রিয়ালে ‘ফিট’ থাকা এমবাপ্পেকে জাতীয় দলে না দেখে খেপেছেন ফরাসিরা।
গত মাসে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে দেপোর্তিভো আলাভেসের বিপক্ষে চোট পেয়েছিলেন এমবাপ্পে। লা লিগায় ৩-২ গোলে জেতার পর রিয়াল মাদ্রিদ থেকে জানানো হয়েছিল, বাঁ পায়ে চোট পেয়েছেন ফরাসি ফরোয়ার্ড। তিনি কতদিন মাঠের বাইরে থাকতে পারেন, ওই বিজ্ঞপ্তিতে সেটি উল্লেখ ছিল না। তবে স্প্যানিশ মিডিয়ার খবর ছিল, রিয়ালের তিনটি ম্যাচ মিস করতে পারেন এমবাপ্পে। একই সঙ্গে ফ্রান্সের দুটি ম্যাচ না খেলার সম্ভাবনার কথাও ভাসছিল বাতাসে।
কিন্তু মাত্র এক ম্যাচ মাঠের বাইরে থাকলেন চোটাক্রান্ত এমবাপ্পে। মাদ্রিদ ডার্বিতে আতলেতিকো ম্যাচ মিস করে লিলের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগে বদলি হয়ে মাঠে নামেন তিনি। এরপর ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে তো একাদশেই দেখা যায় এমবাপ্পেকে। ২-০ গোলে জেতা ম্যাচটিতে মাঠ ছিলেন ৭১ মিনিট পর্যন্ত।
অথচ এমবাপ্পেকে পাচ্ছে না ফ্রান্স। আন্তর্জাতিক ফুটবল বিরতিতে নেশনস লিগে লে ব্লুদের প্রতিপক্ষ ইসরায়েল ও বেলজিয়াম। ম্যাচ দুটির স্কোয়াডে ২৫ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডকে রাখেননি ফ্রান্সের কোচ দিদিয়ের দেশম। বৃহস্পতিবার দল ঘোষণার সময় ফরাসি কোচ এমবাপ্পেকে না রাখার কারণ হিসেবে জানিয়েছেন প্রস্তুতির ঘাটতির কথা।
কিন্তু শনিবার ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে খেলেছেন ৭১ মিনিট। রিয়াল মাদ্রিদে খেলা এমবাপ্পে জাতীয় দলে কেন নেই- এই প্রশ্ন তুলেছেন ফ্রান্সের ফুটবল সমর্থকরা। তাদেরই একজন ফ্রান্সের সাবেক ডিফেন্ডার মাক্সিম বোসিস। ফরাসি সংবাদ মাধ্যম লেকিপকে তিনি বলেছেন, “আপনি যদি চোটাক্রান্ত হন, তাহলে আপনি ক্লাবের হয়ে খেলবেন না এবং আপনাকে জাতীয় দলে ডাকা হবে না। কিন্তু আপনি যখন চ্যাম্পিয়নস লিগে বেঞ্চ থেকে উঠে আসেন এবং লিগ ম্যাচে একাদশে থাকেন, তখন বিষয়গুলো ধোঁয়াশা তৈরি করে।”
ফরাসি কিংবদন্তি মিশেল প্লাতিনিকে এখানে উদাহরণ হিসেবে সামনে এনেছেন সাবেক এই ডিফেন্ডার, “সে (এমবাপ্পে) বিশেষ খেলোয়াড়। মিশেল প্লাতিনির কথা আমরা সবাই জানি। তিনি যখন চোটে পড়তেন তখনও আমরা তাকে আমাদের সঙ্গে চাইতাম।”
এমবাপ্পের ওপর ফরাসিদের ক্ষুব্ধ হওয়ার আরেকটি কারণ হলো নেতৃত্ব। ফ্রান্স জাতীয় দলের অধিনায়ক এখন এমবাপ্পে। দিনকয়েক আগে আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানানো আঁতোয়ান গ্রিজমানকে বাদ দিয়ে তাকে অধিনায়ক করেছিল ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশন। অথচ জাতীয় দলে গ্রিজমানের নিবেদন এখনও প্রশংসা কুড়ায়।
আতলেতিকো মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড ২০১৭ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ফ্রান্সের জার্সিতে টানা ৮৪ ম্যাচ খেলেছেন। কিন্তু এমবাপ্পে অধিনায়ক হওয়ার পরও ফ্রান্সকে ‘উপেক্ষা’ করায় ক্ষুব্ধ সমর্থকরা। ফ্রান্স ফুটবলের মূল সমর্থকগোষ্ঠী ইরেসিসতিবেলস ফ্রান্সাইসের মুখপাত্র ফাবিয়েন বোনেত লেকিপকে বলেছেন, “অধিনায়ক হিসেবে এমবাপ্পেকে অবশ্যই ভক্তদের কাছে উদাহরণ হতে হবে। কিন্তু তিনি সেটি পারেননি। একজন সত্যিকারের অধিনায়ক কেমন হয়, আঁতোয়ান গ্রিজমান যেমন ছিলেন।”