লালন সাঁইজির স্মরণে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে চলছে তিন দিনব্যাপী লালন উৎসব। শুক্রবার দ্বিতীয় দিনের পরিবেশনা ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ অনুষ্ঠিত হয়েছে একাডেমির নন্দনমঞ্চে।
এই আয়োজনে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক মেহজাবীন রহমান। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেন “লালনের শিক্ষাই হলো অহিংস বাহাস আর সাধনা ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্র নির্মাণের মুলমন্ত্র। লালনের গান হলো- তত্ত্ব গান যা প্রয়োগের সাথে যুক্ত, সাধনার সাথে যুক্ত। তত্ব যা যে কোন সাধনার মূল খোঁজার প্রক্রিয়া।”
তিনি বলেন, “লালনের বাণী অনুসারে জ্ঞান অন্বেষিত হয় শিল্পকলার মাধ্যমে, এজন্য লালন সাঁইজি আমাদের প্রিয়। আমাদের রাষ্ট্র গঠনের নতুন পরিকল্পনায়, তিনি পথ দেখাতে সক্ষম। জ্ঞানভিত্তিক আত্মজীবন কি করে, রাষ্ট্র ও সমাজের কেন্দ্রে স্থাপিত হয় শিল্পকর্মের মাধ্যমে উনি তা দেখিয়েছেন।”
জুলাই অভ্যুত্থানে নিহতদের স্মরণ করে একাডেমির সঙ্গীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক মেহজাবীন রহমান বলেন, “লালন সাঁইজি বৈষম্যবিরোধী এবং মানবতার কথা বলে গেছেন।”
অনুষ্ঠানে আগত বাউল শিল্পীদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিবছর এই দিনে কুষ্টিয়ার ছেঁউরিয়ার মতো করেই আমরা লালন উৎসব আয়োজন করতে চাই।
সাংস্কৃতিক পর্বের শুরুতেই দৈন্য গান ‘এসো হে দয়াল কান্ডারী’ পরিবেশন করেন নবীন, প্রবীন ও বিশিষ্ট বাউল শিল্পীবৃন্দ।
এরপর মো: মুক্তার হোসেন পরিবেশন করেন ‘এনেছে এক নবীন গোড়া।’ ‘সব লোকে কয় লালন কী জাত সংসারে’ পরিবেশন করেন শিরিন সুলতানা । ‘সাইর লীলা বুঝবি ক্ষ্যাপা’ পরিবেশন করেন শ্রীকৃষ্ণ গোপাল। এছাড়াও পরিবেশিত হয় ‘দাসের যোগ্য নাই চরণে’, ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’, ‘কোন নামে ডাকিলে তারে’, ‘খাচার ভিতর অচিন পাখি’সহ লালনের বিখ্যাত ও জনপ্রিয় গান।
সবশেষে নবীন, প্রবীণ ও বিশিষ্ট বাউল শিল্পীবৃন্দ পরিবেশন করেন লালন সাঁইয়ের জনপ্রিয় ‘মিলন হবে কত দিনে’। শনিবার উৎসব সমাপনী আয়োজনেও আলোচনা ও সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।