Beta
বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৫

জমি দখলের অভিযোগে গোলাপের বিরুদ্ধে ৫ মামলা

আব্দুস সোবহান গোলাপ।
আব্দুস সোবহান গোলাপ।
[publishpress_authors_box]

জমি দখলের অভিযোগে মামলা হয়েছে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, মাদারীপুরের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সোবহান গোলাপের বিরুদ্ধে।

পাঁচ ব্যক্তির করা আলাদা এসব মামলায় গোলাপের বিরুদ্ধে জমি দখল করে তার নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের অভিযোগ করা হয়েছে।

গোলাপ এমপি থাকা অবস্থায় এই ঘটনা ঘটলেও ভয়ে মামলা করতে পারেননি জানিয়ে এখন ন্যায়বিচার আশা করছেন মামলাকারীরা।

গোলাপ অবশ্য তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, তাকে হেয় করতেই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এই মামলা করেছে। তিনি কারও জমি দখল করে প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেননি।

মঙ্গলবার মাদারীপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাজিদুল হক চৌধুরীর আদালতে ভূমি আইনে মামলাগুলো করেন সাকিব হাসান, এ বি এম সালাউদ্দিন, এ বি এম নুরুল আলম, রেহেনা বেগম ও মাসুম বেপারী।

আদালত আগামী ৩০ দিনের মধ্যে পিবিআইকে অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী আল আমিন প্রিন্স।

মামলার আসামিদের মধ্যে গোলাপ ছাড়াও রয়েছেন ড. আবদুস সোবহান গোলাপ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সভাপতি, অধ্যক্ষ এবং আনারনেছা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের সভাপতি ও অধ্যক্ষ, উত্তর রমজানপুর মডার্ন একাডেমির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক এবং তৈয়ব আলী, শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক।

গোলাপ একাদশ সংসদ নির্বাচনে মাদারীপুর-৩ আসন থেকে জয়ী হন। এমপি থাকা অবস্থায় কালকিনির উত্তর রমজানপুর নিজ গ্রামের সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এবছর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের কাছে হেরে যান তিনি। ভোটের পাঁচ মাসের মধ্যে তার বিরুদ্ধে এই মামলা হলো।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, সংসদ সদস্য থাকাকালে গোলাপ জোর করে নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নামে এলাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। জমি লিখে না দেওয়ায় হত্যা ও মামলারও ভয় দেখানো হয়।

একটি মামলার বাদী সালাউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, “আমার পৈত্রিক সম্পত্তি জোর করে দখলে নিয়ে ভবন নির্মাণ করেছে সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সোবহান গোলাপ। ভূমি দখল প্রতিকার আইন অনুযায়ী আমরা পাঁচজন আট ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছি। আশা করছি, আদালত ন্যায়বিচার করবে।”

আরেকটি মামলার বাদী বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আলম বলেন, “গোলাপ মিয়া ক্ষমতায় থাকাকালে তার রাজনৈতিক শক্তির কারণে আমরা কেউ জমির কাছাকাছিও যেতে পারিনি। তার তাণ্ডবের কারণেই অনেক মানুষ বাড়িঘরেও থাকতে পারেননি। যখন তার ক্ষমতা কমতে থাকে, তখন এলাকার লোকজন বাড়িতে আসে।

“গোলাপ মিয়া যে জমিগুলো দখলে নিয়েছে, সেখানে তার বা তার প্রতিষ্ঠানের নামে কোনও জমি নাই। একজন এমপি অন্যের জমি এভাবে দখল করবে, এটা কখনই কাম্য নয়।”

মামলাকারী আরেকজন সাকিব হাসান বলেন, “আমাদের জমি আদালতের মাধ্যমে ফেরত চাই। কারণ আমরা তাকে প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করার জন্য কোনও জমি দিইনি।”

বাদীপক্ষের আইনজীবী আল আমিন প্রিন্স জানান, মামলাকারী সবাই কালকিনির উত্তর রমজানপুরের বাসিন্দা। আর একই মৌজায় দখল হওয়া জমির পরিবার পাঁচ একর ৭৪ শতাংশ। চারটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত আটজনকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে পিবিআইকে ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

মামলার প্রতিক্রিয়ায় গোলাপ সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “যাদের জমি রয়েছে, সেসব জমি অর্থের বিনিময়ে অথবা কেউ স্বেচ্ছায় দান করেছে। জমির পরিবর্তে কিছু ব্যক্তিকে অন্য জমি দেওয়া হয়েছে।”

এর আগেও নিজের জমি দাবি করে অনেকে আদালতে মামলা করেছে এবং আদালত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে রায় দিয়েছে জানিয়ে ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা বলেন, “আবারও এই মামলা উদ্দেশ্যমূলক। আমাকে হেয় করতেই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ মামলা করছে।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত