Beta
শুক্রবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৫

আন্দোলন বাদ দিয়ে নির্বাচনটা শেষ করতে দিন : ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি
[publishpress_authors_box]

বিভিন্ন দাবিদাওয়া তুলে দেশটাকে বিশৃঙ্খলার দিকে ঠেলে না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপির এক মতবিনিময় সভায় উপস্থিত সাংবাদিকদের মাধ্যমে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের প্রতি তিনি এ আহ্বান জানান। এসময় তিনি এসব আন্দোলন বাদ দিয়ে জাতীয় নির্বাচন শেষ করতে দেওয়ার আহ্বানও জানান।

প্রথম আলো জানিয়েছে, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে গড়েয়া ইউনিয়ন বিএনপি।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, “দয়া করে দেশটাকে বাঁচান। এখন আর বিভাজন সৃষ্টি করবেন না। এখন বিভিন্ন দাবিদাওয়া তুলে দেশটাকে বিশৃঙ্খলার দিকে ঠেলে দেবেন না। যারা বিভিন্ন দাবি তুলছে, তাদের উদ্দেশ্য ভালো নয়। তারা নির্বাচনটাকে বন্ধ করতে চায়। কিন্তু দেশের মানুষ ভোট দিতে চায়। দয়া করে এসব আন্দোলন বাদ দিয়ে নির্বাচনটা শেষ করতে দিন।”

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে।

বিএনপি দ্রুত নির্বাচন চাইলেও জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ইসলামী দল এবং অভ্যুত্থানকারীদের গড়া দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জুলাই সনদ প্রণয়ন করে তার ভিত্তিতে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে। জামায়াত সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিও জানাচ্ছে। অন্যদিকে এনসিপি জোর দিচ্ছে সংস্কারে।

মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা নির্বাচিত হলে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করব। প্রতিটি পরিবারকে একটি করে ফ্যামিলি কার্ড দেওয়া হবে। সেই কার্ডের মাধ্যমে তারা বিভিন্ন সেবা পাবেন। স্বাস্থ্যসেবাকে উন্নত করব, শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়াব। কারিগরি শিক্ষার প্রতি জোর দেব। আমরা আগে সরকারে ছিলাম; সরকার কীভাবে চলে আমরা তা জানি। সরকারে থেকে কীভাবে ভালো কাজ করতে হয়, তা-ও জানি।”

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার দুপুরে উপজেলার গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে। ছবি : প্রথম আলো

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য আমরা লড়াই-সংগ্রাম করেছি; যে জন্য আমাদের ছেলেরা প্রাণ দিয়েছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনগণ যেটা চাইবে, সেটাই হবে। এই ব্যবস্থাটায় এবার কিছুটা পরিবর্তন হচ্ছে। এখন থেকে দুইটা পার্লামেন্ট থাকবে- একটা নিম্নকক্ষ, আরেকটা উচ্চকক্ষ। নিম্নকক্ষে যারা যাবেন, তারা আপনাদের ভোটে নির্বাচিত হবেন।

“আর দলের যে প্রতিনিধি সংখ্যা থাকবে, সেই সংখ্যা অনুযায়ী তারা উচ্চকক্ষে যাবেন। এরপরও বিভিন্ন সেক্টরের মানুষকে সেখানে মনোনয়ন দেওয়া হবে। এভাবে এমন একটি পার্লামেন্ট তৈরি করা হবে, যেখানে সত্যিকার অর্থে জনগণের প্রতিনিধিত্ব থাকবে। কোনও দলের একক কর্তৃত্ব থাকবে না। ফ্যাসিজম থেকে আমরা মুক্তি পাব।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “৫ আগস্ট স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর আমাদের সামনে নতুন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সুযোগ এসেছে। এখন আমরা দেশটাকে সুন্দর করে সাজাতে চাই। আমাদের মধ্যে অনেক মত আছে, এই মতগুলোকে এক জায়গায় আনতে হবে। আর সেই জায়গাটা হলো পার্লামেন্ট। এখানে তর্ক হবে, বিতর্ক হবে, সেখান থেকে আমরা সিদ্ধান্ত পাব।”

তিনি বলেন, “হিংসার রাজনীতি আমরা আর চাই না। আমরা হিন্দু-মুসলিম, বৌদ্ধ-খ্রিষ্টানের মধ্যে কোনও বিভেদ সৃষ্টি করতে চাই না। হিংসার রাজনীতিকে প্রশ্রয় দিতে চাই না, চাই শান্তির রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে।”

নতুন বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, “মুক্তিযুদ্ধকে আমরা কখনও ভুলব না। কারণ, এই দেশের স্বাধীনতা আমাদের অস্তিত্ব। এটাকে ভুলে যাওয়ার কোনও সুযোগ নেই। একইভাবে ৫ আগস্টকে আমরা ভুলব না। কারণ, সেই সময় আমাদের ছেলেরা বুকের রক্ত দিয়ে দেশ থেকে স্বৈরাচারকে তাড়িয়েছে। এই যে একসঙ্গে নিয়ে চলা, এটাই নতুন বাংলাদেশ।”

তিনি বলেন, “দেশকে আর ভাগাভাগি করবেন না। বহুত ক্ষতি হয়ে গেছে, আর ক্ষতি চাই না। সবাইকে নিয়ে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ দেখতে চাই।”

গড়েয়া ইউনিয়ন মতবিনিময় সভা শেষে উপজেলার শুখানপুকুরী ও বালিয়া ইউনিয়নে সুধী সমাবেশ ও মতবিনিময় সভা করেন মির্জা ফখরুল।

এ সময় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন, গড়েয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রেজওয়ান শাহ চৌধুরীসহ বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত