Beta
শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫
Beta
শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫

গ্রাউন্ডসম্যান থেকে বক্সিং কোচ

বিকেএসপির গ্রাউন্ডসম্যান হিসেবে চাকরি শুরু করা লিটন মাহমুদ বক্সিংয়ের কোচের পরীক্ষা দিচ্ছেন। ছবি: সংগৃহীত
বিকেএসপির গ্রাউন্ডসম্যান হিসেবে চাকরি শুরু করা লিটন মাহমুদ বক্সিংয়ের কোচের পরীক্ষা দিচ্ছেন। ছবি: সংগৃহীত
[publishpress_authors_box]

শুরুতে ছিলেন বিকেএসপির গ্র্যাউন্ডসম্যান। এরপর কম্পিউটার অপারেটর হিসেবেও দীর্ঘদিন বিকেএসপিতে চাকরি করেছেন লিটন মাহমুদ। যদিও এক ফাঁকে ভারতের পাতিয়ালায় বক্সিংয়ের কোচেস কোর্স সেরে এসেছেন। বর্তমানে রাজশাহী বিকেএসপিতে সহকারী কোচের দায়িত্বে আছেন। সেই লিটন মাহমুদ এবার হতে চলেছেন বিকেএসপির বক্সিং কোচ।

আগামী শনিবার ১৪ জুন বিকেএসপির বক্সিং কোচ পদে নবম গ্রেডের স্থায়ী চাকরির জন্য পরীক্ষা দেবেন তিনি। যদিও লিটনের কোচ হওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে এরই মধ্যে প্রশ্ন তুলেছেন বক্সিং অঙ্গনের অনেকে।    

কখনও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বক্সিং খেলেননি লিটন। কোনও গেমসে অংশ নেওয়া তো দূরের কথা। বক্সিং রিংয়ে ওঠার অভিজ্ঞতা নেই। কিন্তু বিকেএসপিতে কোচদের পাশে পাশে থেকে যা শিখেছেন সে সবই কাজে লাগান বক্সারদের শেখাতে।

লিটন মাহমুদকে কখনও বক্সিং খেলতে দেখেছেন? এমন প্রশ্নে বিস্ময় প্রকাশ করে বক্সিং ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য জহির ভূঁইয়া বলেন, “আমার ৪০ বছরের সংগঠক ক্যারিয়ারে লিটনকে কখনও বক্সিং খেলতে দেখিনি।”

যদিও লিটন দাবি করেছেন, তিনি একবার স্বাধীনতা দিবস বক্সিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন। 

মূলত বিকেএসপিতে গ্রাউন্ডসম্যানের কাজ করতে করতেই লিটনের এক সময় সুযোগ মেলে কম্পিউটার অপারেটরের চাকরির। কিন্তু তার স্বপ্ন ছিল বক্সিং কোচ হওয়ার। তাই বিকেএসপি থেকে অনুমতি নিয়ে পাতিয়ালাল কোচিং কোর্স করে এসেছেন ২০১৮-১৯ সেশনে। এরপর ভারতে ইন্টার্নশিপও করেছেন।

লিটন নিজেই স্বীকার করেছেন তিনি জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে কখনও খেলেননি, “আমি আসলে ন্যাশনালে চান্স পাইনি। তবে কোচিংটা আমার ধ্যানজ্ঞান। গলফার সিদ্দিকুর রহমানও তো এক সময় বল বয় ছিলেন।”

তিনি বলেন, “বিকেএসপি ছোট পোস্টে জব করতাম। শুরুতে ছিলাম বক্সিংয়ের গ্রাউন্ডসম্যান। সেটা ২০০০ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত করেছি। এরপর খুলনা বিকেএসপিতে ২০১০ সাল পর্যন্ত অফিস তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে ছিলাম। কিন্তু সেখানে ফ্রিতে বাচ্চাদের বক্সিং শিখিয়েছি।”

খুলনা বিকেএসপিতে অফিস তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে চাকরি করে ফ্রিতে বাচ্চাদের বক্সিং শিখিয়েছেন লিটন মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত

তিনি জানান, “আমাদের বিকেএসপিতে লোকবল কম। কখনও রেফারি, কখনও জাজিংও করতে হয়েছে। এমনকি রিং অফিসিয়ালও হয়েছি। এছাড়া কোচদের ট্রেনিং সিডিউল, স্টপ ওয়াচ ধরা ও পার্টনার ট্রেনিং করিয়েছি।”

বক্সার না হয়েও কিভাবে পাতিয়ালায় কোর্স করলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, “সেখানে ১১ দিনের একটা পরীক্ষা হয়। গেমস থাকে। ফিজিকাল গেমের সঙ্গে রানিং। এরপর লটারিতে বিভিন্ন দেশের বক্সারদের সঙ্গে খেলার পর বাছাইয়ে টিকতে হয়।”

 রাজশাহী বিকেএসপিতে বর্তমানে সিনিয়র দলের কোচ আরিফুল করিম ও এলিট দলের কোচ মাইনুল হাসান। আর বেসিক কোচিংটা শেখান জুনিয়রদের লিটন। বিকেএসপির সম্মানীভিত্তিক মাসিক কোচ হিসেবে কাজ করছেন তিনি। এবার স্বপ্ন দেখছেন স্থায়ী কোচ হওয়ার।

কিন্তু লিটনের যোগ্যতা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন এরই মধ্যে। কারণ লিটনের বাস্তব অভিজ্ঞতা একদম নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিকেএসপির এক বক্সার বলেন, “ভারত থেকে উনি পাতিয়ালা বক্সিংয়েরে ওপর ডিগ্রি নিয়ে  এসেছেন । এই কোর্স করতে গেলে যেসব ক্রাইটেরিয়া লাগে যেমন জাতীয় চ্যাম্পিয়ন, আন্তর্জাতিক চ্যাম্পিয়ন, কমনওয়েলথ গেমস, এশিয়ান গেমস, অলিম্পিক গেমসে অংশ নেওয়া। উনি তো কোনদিন বক্সিংয়ের রিংয়ে ওঠে নাই। বক্সিং খেলেননি। তাহলে কিভাবে এটা সম্ভব?”

ওই বক্সারের দাবি ফেডারেশন থেকে টাকা দিয়ে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করেছেন লিটন। সেই সার্টিফিকেট দিয়ে পাতিয়ালায় ট্রেনিং করে এসেছেন।

যদিও বক্সিং ফেডারেশনের সদস্য জহির ভূঁইয়া জানান, “আমরা ফেডারেশন থেকে এ ধরনের কোনও সার্টিফিকেট কখওন দেয়নি।”

আরও পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত