চলতি মৌসুম শেষেই অ্যানফিল্ডকে বিদায় বলবেন ইয়ুর্গেন ক্লপ। জার্মান কোচের শেষটা সুন্দরভাবে রাঙাতে সম্ভাব্য সব চেষ্টাই করছেন লিভারপুলের খেলোয়াড়রা। সবশেষ দুই ম্যাচ সেটির প্রমাণ। ক্লপের বিদায় ঘোষণার পর দুই ম্যাচেই দাপুটে পারফরম্যান্স লিভারপুলের। যার সবশেষটিতে চেলসিকে উড়িয়ে দিয়েছে ৪-১ গোলে। প্রিমিয়ার লিগের এই ম্যাচে আলো ছড়িয়েছেন ২০ বছরের এক তরুণ।
বুধবার রাতের ম্যাচটিই শুধু নয়, গত চার ম্যাচেই কোনও না কোনও ভাবে অবদান রেখেছেন কনর ব্র্যাডলি। অ্যানফিল্ডে চেলসিকে উড়িয়ে দেওয়ার পথে তার এক গোলের পাশাপাশি দুই অ্যাসিস্ট। রাইট ব্যাক পজিশনে খেলা এই তরুণ নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছেন ক্লপকে। কারণ এই পজিশনে শুধু লিভারপুল নয়, বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় ট্রেন্ট অ্যালেক্সান্ডার-আরনল্ড। তার অনুপস্থিতিতে ২০ বছর বয়সী ব্র্যাডলির আগুনে পারফরম্যান্স।
A great night at Anfield.
— Liverpool FC (@LFC) February 1, 2024
There's plenty of #LIVCHE content to enjoy over on @LFCTV GO 📺
প্রিমিয়ার লিগের এই ম্যাচটির আগে এফএ কাপের চতুর্থ রাউন্ডে লিভারপুল খেলেছে নরউইচ সিটির বিপক্ষে। এই ম্যাচেও ছিল ব্র্যাডলির চোখজুড়ানো পারফরম্যান্স। গোল পাননি যদিও, তবে অলরেডদের ৫-২ গোলের জয়ের পথে দুটিতে সহায়তা করেছিলেন তিনি। হয়েছিলেন ম্যাচসেরা। তিন দিনের মধ্যে আলো ছড়িয়ে আবারও জিতলেন ম্যাচসেরার পুরস্কার।
২০০৩ সালে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের কিলেনে জন্ম ব্র্যাডলির। ৯ বছর বয়সে স্থানীয় ক্লাব সেন্ট প্যাট্রিকস এফসি দিয়ে তার ফুটবল জীবনে প্রবেশ। ওই বয়সেই লিভারপুলের নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টারে অনুশীলন শুরু করেন। পরে ডুঙ্গানন সুইফটস হয়ে ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান লিভারপুল যুব দলের দুই বছরের স্কলারশিপ প্রোপামের মাধ্যমে। এক বছরের মাথায় পেয়ে যান লিভারপুলের পেশাদার চুক্তি।
২০২১ সালে লিভারপুলের মূল দলে অভিষেকও হয়ে যায় ব্র্যাডলির। নরউইচ সিটির বিপক্ষে লিগ কাপের ম্যাচে নেমে একটা কীর্তিও গড়ে ফেলেন এই রাইট ব্যাক। ১৯৫৪ সালে সবশেষ নর্দার্ন আইরিশ খেলোয়াড় হিসেবে লিভারপুলে খেলেছিলেন স্যামি স্মিথ। দীর্ঘ ৬৭ বছর পর আবার দেশটির কোনও খেলোয়াড় গায়ে তোলেন অলরেডস জার্সি।
Special night at Anfield ! +3 ⚽️🅰️🅰️ pic.twitter.com/yV5boHdw6r
— Conor Bradley (@conorbradley03) February 1, 2024
যদিও পরের বছরই ব্র্যাডলিকে ধারে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বোল্টন ওয়ান্ডারার্সে। সেখানেও উজ্জ্বলতা ছড়ান তিনি। ইংলিশ লিগ ওয়ানের দলটিতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে জেতেন ক্লাবটির উদীয়মান বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার। চলতি মৌসুমে ফিরেছেন লিভারপুলে। গত ২১ জানুয়ারি হয়েছে প্রিমিয়ার লিগে অভিষেক। এর পর থেকে চমক দেখিয়ে চলেছেন ব্র্যাডলি।
সবশেষ চেলসির বিপক্ষে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন। এই তরুণের স্মরণীয় রাতে হতাশায় ডুবেছেন তার সতীর্থ দারউইন নুনেস। দুর্ভাগ্য তাকে এমনভাবে আষ্টেপৃষ্ঠে ধরেছিল যে, চেলসি ম্যাচে তার শট চারবার ফিরেছে পোস্টে লেগে! তাতে একটা ইতিহাসও গড়েছেন উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার। ২০০৩ সাল থেকে ফুটবলের পরিসংখ্যান সংরক্ষণ শুরু করা ‘অপটা’র তথ্য অনুযায়ী, প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে প্রিমিয়ার লিগে এক ম্যাচে চারবার বল পোস্টে মেরেছেন নুনেস!