Beta
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
Beta
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫

৬৩ ঘণ্টা পর সচল এলএনজি পাইপলাইন, বেড়েছে সরবরাহ

মহেশখালীর ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল।
মহেশখালীর ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল।
[publishpress_authors_box]

৬৩ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর কক্সবাজারের মহেশখালীর আনোয়ারা-ফৌজদারহাট পাইপলাইন দিয়ে জাতীয় গ্রীডে আবার তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ শুরু হয়েছে।

দুর্ঘটনার কারণে মঙ্গলবার বিকাল ৫টা থেকে এই পাইপলাইনে এলএনজি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। শুক্রবার সকাল আটটার দিকে ত্রুটি সারিয়ে পেট্রোবাংলার প্রকৌশলীরা এলএনজি সরবরাহ করা শুরু করেন।

এদিন সকালে আনোয়ারা থেকে চট্টগ্রাম শহরমুখি আলাদা পাইপলাইনে ২৩০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ দেওয়া হচ্ছিল। ত্রুটি সারানোর পর আনোয়ারা-ফৌজদারহাট পাইপলাইনে এলএনজি সরবরাহ শুরু হয়। বিকাল তিনটা নাগাদ দুটি পাইপলাইনে সরবরাহ বেড়ে ৫৮০ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত হয়।

রাত নাগাদ ৬শ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহে উন্নীত করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেডের কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (এলএনজি) প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহ আলম সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “ধীরে ধীরে সরবরাহ বেড়ে রাতেই গ্যাসের সরবরাহ ৬শ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত হবে। গত একমাস ধরেই এই পরিমাণ গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে।”

তিনি বলেন, “মঙ্গলবার দুর্ঘটনার পর বুধবার সকাল থেকে ২২০-২৩০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ দেওয়া হচ্ছিল। সরবরাহ বাড়ায় জাতীয় গ্রীডে গ্যাস যোগ হয়ে সরবরাহ বাড়বে। ফলে তিতাস এবং বাখরাবাদ এলাকায় গ্যাস সরবরাহে উন্নতি ঘটবে।”

কক্সবাজারের মহেশখালীর ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল থেকে দুটি পাইপলাইন দিয়ে চট্টগ্রাম এবং ঢাকায় এলএনজি সরবরাহ দেওয়া হয়। দুটি পাইপলাইন নির্মিত হয়েছে মহেশখালী-চকরিয়া-পেকুয়া-বাঁশখালী-আনোয়ারা এলাকার মাটির নীচ দিয়ে। আনোয়ারা থেকে একটি পাইপলাইন সাগরের নীচ দিয়ে ফৌজদারহাট পর্যন্ত গেছে। আরেকটি পাইপলাইন গেছে চট্টগ্রাম শহরে।

মহেশখালীতে জাহাজে করে এলএনজি আসে। মহেশখালীর ভাসমান টার্মিনালে ভিড়িয়ে জাহাজে থাকা এলএনজিকে গ্যাসে রূপান্তর করার কাজ করে দুটি টার্মিনাল। একটি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এক্সিলারেট এনার্জি এবং দেশীয় কোম্পানি সামিট এলএনজি। তারপর তারাই সেগুলো সরবরাহ করে। দুটি টার্মিনালের সর্বোচ্চ সরবরাহক্ষমতা ১১০০ মিলিয়ন ঘনফুট।

গত মে মাসে দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় রেমালের ধাক্কা সামলে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয় এলএনজি সরবরাহ। নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল হতে থাকলে দুর্ঘটনা রোধে কক্সবাজারের মহেশখালীর গভীর সমুদ্রে ভাসমান দুই এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হয়।

রেমালের পর পল্টুনের আঘাতে সামিট এলএনজি টার্মিনাল দুর্ঘটনায় পড়ে। এরপর সেটি মেরামতের জন্য সিঙ্গাপুরে গেলে জুনের শুরু থেকেই এলএনজি সরবরাহ সক্ষমতা কমে নামে অর্ধেকে। ১১০০ মিলিয়ন ঘনফুটের বিপরীতে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট সরবরাহ দেওয়া হতো। ৯ জুলাই দুর্ঘটনার কারণে পাইপলাইনে ছিদ্র হলে সরবরাহ আরও কমে ২২০ মিলিয়ন ঘনফুটে নামে। এতে বাখরাবাদ ও তিতাস এলাকার গ্রাহকরা গ্যাস সংকটে পড়ে যায়। এখন সরবরাহ বাড়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলেও কিছুটা উন্নতি হবে।

পেট্রোবাংলার হিসাবে, দেশে মোট গ্যাস সরবরাহ সক্ষমতা হচ্ছে ৩ হাজার ৮২৯ মিলিয়ন ঘনফুট। এরমধ্যে দেশীয় ১১৬টি কূপ থেকে গ্যাস সরবরাহ দেওয়ার সক্ষমতা আছে ২ হাজার ৭২৯ মিলিয়ন ঘনফুট। বাকি ১১শ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি হিসেবে আমদানি করা হয়।

২৪ ঘণ্টায় কতখানি গ্যাস সরবরাহ দেওয়া হলো প্রতিদিন তার তালিকা প্রকাশ করে পেট্রোবাংলা। ১১ জুলাই প্রকাশিত প্রতিবেদনে মোট গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছিল ২২৫৩ মিলিয়ন ঘনফুট। এর মধ্যে এলএনজি ২৪৩ মিলিয়ন ঘনফুট আর দেশীয় কূপ থেকে ২০১০ মিলিয়ন ঘনফুট।

এখন এলএনজি সরবরাহ ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত হলে সরবরাহ ২৬শ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত হবে বলে আশা পেট্রোবাংলার। ১৭ জুলাই নাগাদ মেরামত করা সামিটের এলএনজি টার্মিনাল দেশে পৌঁছলে সরবরাহ আরও বাড়ার আশা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত