উরুগুয়ের কিংবদন্তি তিনি। দুই বার বিশ্বকাপ জেতা লাতিন দলটির হয়ে করেছেন সবচেয়ে বেশি ৬৯ গোল। লুইস সুয়ারেজকে ঘিরে অবশ্য ২০২৬ বিশ্বকাপের পরিকল্পনাও সাজাচ্ছিলেন না দলটির কোচ। তাই বলে হুট করে তিনি অবসর নিয়ে নিবেন সেটা ছিল অপ্রত্যাশিত। তবে হঠাৎ করে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় দল থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন ৩৭ বছর বয়সী সুয়ারেজ।
সংবাদ সম্মেলনে সুয়ারেজ জানালেন শুক্রবার প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচের পরই তুলে রাখবেন বুট জোড়া। ছলছল চোখে সুয়ারেস জানালেন, ‘‘আমি অবসর নিয়ে অনেক ভেবেছি। এরপর মনে হয়েছে এটাই সঠিক সময়। শুক্রবার প্যারাগুয়ের বিপক্ষে খেলেই অবসর নিব জাতীয় দল থেকে। পরের বিশ্বকাপে খেলা আমার জন্য কঠিন হতো। চোটের কারণে নয়, নিজের ইচ্ছায় অবসর নিচ্ছি। এটা অনেক বড় ব্যাপার।’’
২০০৭ সালে ১৯ বছর বয়সে উরুগুয়ের জার্সিতে অভিষেক হয়েছিল সুয়ারেজের। তখন ভাবেননি একদিন জাতীয় দলের হয়ে করবেন সর্বোচ্চ গোল। বিদায় বেলায় নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে সন্তুষ্ট তিনি, ‘‘২০০৭ সালে প্রথম ম্যাচের আগে যেমন রোমাঞ্চিত ছিলাম, শেষ ম্যাচটাও খেলব একইভাবে। জাতীয় দলের হয়ে স্মৃতিগুলো থেকে যাবে আজীবন। একটা সময় তো থামতেই হতো। সত্যিই ভবিনি, অবসর নিব উরুগুয়ের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে।’’
সবশেষ এ বছরের কোপায় খেলেছেন সুয়ারেজ। তৃতীয়স্থান নির্ধারণী ম্যাচে কানাডার বিপক্ষে লক্ষ্যভেদও করেছিলেন পেনাল্টি থেকে। ক্লাব ফুটবলে ইন্টার মায়ামির হয়ে সবশেষ ম্যাচেও করেছেন জোড়া গোল। শিকাগোর বিপক্ষে তার জোড়া গোলেই ৪-১ ব্যবধানে জিতেছিল মেসিহীন মায়ামি। এমন ছন্দে থাকতেই ছেড়ে দিচ্ছেন জাতীয় দল। তবে ক্লাব ফুটবলে আরও কিছুদিন খেলবেন নিঃসন্দেহে।
উরুগুয়ের হয়ে চারটি বিশ্বকাপ খেলেছেন লুইস সুয়ারেজ, খেলেছেন পাঁচটি কোপা আমেরিকা। ২০১১ কোপা আমেরিকায় সুয়ারেজের দ্যুতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল উরুগুয়ে। সেবার চার গোল করেছিলেন তিনি। এর দুটি সেমিফাইনালে অপরটি ফাইনালে। ১৯৯৫ সালের পর সেবারই প্রথম কোপা জিতেছিল উরুগুয়ে আর টুর্নামেন্ট সেরা হন সুয়ারেজ।
সেই কোপা নিয়ে বললেন, ‘‘আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সেরা মুহূর্ত এটি। কোনো কিছুর সঙ্গে আমি এটাকে বদল করতে রাজি নই।’’
২০০৭ সালে কলম্বিয়ার বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচে লাল কার্ড দেখেছিলেন সুয়ারেজ। ২০১০ বিশ্বকাপেও ঘানার বিপক্ষে দেখেছিলেন ‘বিখ্যাত লাল কার্ড’। কোয়ার্টার ফাইনালে ইনজুরি টাইমে ডমিনিক আদিয়ার প্রচেষ্টা ঠেকান হাত দিয়ে। তাতে পেনাল্টি পায় ঘানা আর সেই শট মিস করেন অসোমায়হ জিয়ান! ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে আর ১৯৭০ সালের পর প্রথমবার সেমিফাইনালের টিকিট পায় উরুগুয়ে। তাতে আসল অবদান লাল কার্ড দেখা সুয়ারেজেরই।