চার শিক্ষার্থীকে যৌন নির্যাতনের দায়ে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল।
২০২০ সালের একটি মামলার তদন্ত, শুনানি শেষে রবিবার এ আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক জ্যেষ্ঠ জেলা জজ জয়নাল আবেদিন।
দণ্ড পাওয়া ব্যক্তির নাম নাছির উদ্দিন (৩৫)। তিনি কক্সবাজারের চকরিয়া থানার কৈয়ারবিল ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ছোট ভেওলা গ্রামের বাসিন্দা। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার একটি মাদ্রাসার হোস্টেল সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় শিশুরা তার নির্যাতনের শিকার হয়।
রায় ঘোষণার সময় নাছির উদ্দিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে কড়া নিরাপত্তায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি জিকো বড়ুয়া বলেন, “নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (১) ধারায় ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।”
মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের ১৯ অক্টোবর চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার একটি মাদ্রাসায় চার শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ এনে ভুক্তভোগী এক শিশুর বাবা বাদী হয়ে শিক্ষক নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ৪ জুলাই নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
২০২২ সালের ২৪ জানুয়ারি নাছিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত। মোট ১১ জনের সাক্ষ্য শেষে রবিবার রায় ঘোষণা করা হয়।
আদালতের দেওয়া পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে জিকো বড়ুয়া বলেন, “আদালত বলেছেন, আসামি একজন ‘সিরিয়াল রেপিস্ট’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন। ভিকটিমদেরকে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষাদানের পরিবর্তে আসামি নিজেই ধর্ষণের মত ঘৃণিত ও জঘন্য অপরাধে জড়িয়েছেন। দিনের পর দিন ভিকটিমদের ভয়ভীতির মধ্যে রেখে জোর করে বলাৎকার করেছেন, যা তার স্বাভাবিক অভ্যাস হিসেবে পরিলক্ষিত হয়েছে।
“যা আসামির ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারার জবানবন্দি এবং ভিকটিমদের ২২ ধারার জবানবন্দি পর্যালোচনায় সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। এসব বিষয় পর্যালোচনায় আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত।”
মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করার আগে পাঁচ বছর বিদেশে ছিলেন নাছির। এসব অপরাধের কথা প্রকাশ পেলে ২০১৮ সালে সন্তানকে নিয়ে আলাদা হয়ে যান তার স্ত্রী।