ম্যাজিক্যাল সম্ভবত একেই বলে! যা কিনা মুহূর্তে বদলে দিতে পরিস্থিতি। রিয়াল মাদ্রিদের পারফরম্যান্সকে তাই ‘ম্যাজিক্যাল’ বললে মোটেও ভুল বলা হবে না। যে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডকে হারিয়ে গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছিল, সেই দলটির কাছে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়েও তারা ভেঙে পড়েনি। বরং ঘুরে দাঁড়ানোর নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করে মন জিতে নিয়েছে ফুটবলপ্রেমীদের।
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে তাদের ফিরে আসার গল্পের নায়ক ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। এই ব্রাজিলিয়ানের হ্যাটট্রিকে ডর্টমুন্ডকে ৫-২ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে রিয়াল। ফলে এক ম্যাচ পর আবার চ্যাম্পিয়নস লিগে জয়ে ফিরল মাদ্রিদের অভিজাতরা। আগের ম্যাচে লিলের মাঠ থেকে হেরে ফিরেছিল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
গত মৌসুমের ফাইনালে ডর্টমুন্ডকে হারিয়েই চ্যাম্পিয়নস লিগের ১৫তম শিরোপা জিতেছিল রিয়াল। সেই হিসাবে লিগ পর্বের এবারের ম্যাচটি ছিল ফাইনালের ‘রি-ম্যাচ’। আগের দুই ম্যাচ জিতে আসা জার্মান ক্লাবটির জন্য ছিল প্রতিশোধের মঞ্চ। বার্নাব্যুতে গিয়ে প্রথমার্ধের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে প্রতিশোধ পর্বটা সেরে নেওয়ার পথেই ছিল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ভিনিসিয়ুসদের অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্সে মাদ্রিদে উড়ল রিয়ালের শ্রেষ্ঠত্বের পতাকা।
স্মৃতির পাতায় সাজিয়ে রাখার মতো ৪৫ মিনিট পার করেছে রিয়াল। ভিনিসিয়ুস কাটিয়েছেন রিয়ালের জার্সিতে তার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ম্যাচ। আনন্দে নেচেছেন মাদ্রিদের ক্লাবটির সমর্থকরা। কেন তারা চ্যাম্পিয়নস লিগের ‘বস’, সেটিই যেমন বুঝিয়ে দিল ডর্টমুন্ডকে মাটিতে নামিয়ে।
নতুন ফরম্যাটের চ্যাম্পিয়নস লিগে আগের ম্যাচে অঘটনের শিকার হয়েছিল রিয়াল। লিলের কাছে হেরে যাওয়াটা ছিল বড্ড বেমানান। ঘুরে দাঁড়ানোর মঞ্চ হিসেবে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুকে পেয়েছিল তারা, কিন্তু ঘরের মাঠে আরও বড় ধাক্কা লাগে রিয়ালের গায়ে। ৩৪ মিনিটে পিছিয়ে পড়ে ২-০ গোলে। ৩০ মিনিটে ডোনেল মালেনের গোলে এগিয়ে যায় ডর্টমুন্ড। ৪ মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন জেমি বাইনো-গিটেন্স।
শুধু গোলে নয়, প্রথমার্ধে সুযোগ তৈরিতেও পিছিয়ে ছিল রিয়াল। ঘুরে দাঁড়ানোর ব্রত নিয়ে দ্বিতীয়ার্ধ শুরু করলেও গোলের দেখা পাচ্ছিল না স্বাগতিকরা। অতঃপর ডিফেন্ডার আন্টোনিও রুডিগারের লক্ষ্যভেদে ডর্টমুন্ডের গোলের তালা খোলে কার্লো আনচেলত্তির দল।
এরপর শুধুই গোল উদযাপন রিয়ালের। ভিনিসিয়ুসের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ইউরোপে আরেকবার রিয়ালের দাপট। ৬২ মিনিটে প্রথম গোল পাওয়া ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ৮৬ ও ইনজুরি টাইমের তৃতীয় মিনিটে গোল করে পূরণ করেন হ্যাটট্রিক। মাঝে ৮৩ মিনিটে একবার জাল খুঁজে নেন লুকাস ভাসকেস।