Beta
বুধবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৪
Beta
বুধবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৪

চেয়ারম্যান হতে পারলেন না প্রশ্নফাঁসে আলোচিত মাহবুবা, হারাচ্ছেন জামানতও

ss-mahbuba-nasrin-22052024
Picture of আঞ্চলিক প্রতিবেদক, বগুড়া

আঞ্চলিক প্রতিবেদক, বগুড়া

দু’বছর আগে অডিটর নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও দুপচাঁচিয়া উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মাহবুবা নাছরিন রূপা।

তবে ইলেকট্রনিক ডিভাইস, মোবাইল টেলিফোন, অডিটর পরীক্ষার প্রবেশপত্র এবং প্রায় দুই লাখ টাকাসহ গ্রেপ্তারের পর বাতিল হয় দলের সদস্যপদ, ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয় তাকে।

সেসময় মাহবুবার গ্রেপ্তার, অপরাধ ইত্যাদি নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। সেই মাহবুবাই এবার অংশ নিয়েছিলেন দুপচাঁচিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন চেয়ারম্যান পদে।

মঙ্গলবার ভোটগ্রহণ শেষে ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেল, পরাজিত তো হয়েছেনই সেই সঙ্গে মাহবুবা হারিয়েছেন জামানতও।  

নির্বাচনে মাহবুবা নাছরিন রূপা কাপ-পিরিচ প্রতীক নিয়ে লড়াই করেছিলেন। তিনি মোট ভোট পেয়েছেন ৭ হাজার ১৫০।

এই উপজেলায় মোট ভোটার ছিল ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৭১ জন। তিন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর ঝুলিতে মোট ভোট পড়েছে ৬৮ হাজার ৫৪৪। যার মধ্যে বৈধ ভোট ছিল ৬৫ হাজার ১২৫ টি।

নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের জন্য একজন প্রার্থীকে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অনুকূলে এক লাখ টাকা জমা দিতে হয়। আর ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের জন্য ৭৫ হাজার টাকা জমা দিতে হয়।

নির্বাচনী এলাকার প্রদত্ত ভোটের ১৫ শতাংশ ভোট যদি কোনও প্রার্থী না পান, তাহলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।

এই বিধি অনুযায়ী মাহবুবা নাছরিনকে জামানত রক্ষার জন্য পেতে হতো নূন্যতম ১০ হাজার ২৮২ টি ভোট। তা না পাওয়ায় নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া অর্থ খোয়াতে হচ্ছে তাকে।

সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও দুপচাঁচিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জান্নাত আরা তিথী জানিয়েছেন, এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আহম্মেদুর রহমান বিপ্লব। মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ৩৭ হাজার ৫৪৬ টি ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফজলুল হক প্রামানিক আনারস প্রতীকে ২০ হাজার ৪২৯ ভোট পেয়েছেন।

মাহবুবা নাছরিন রূপা ঢাকার ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। সেখানে ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০১৯ সালে দুপচাঁচিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০২০ সালের ২০ ডিসেম্বর তিনি বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্যপদ পান।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান থাকাকালেই অডিটর নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০২২ সালের ২১ জানুয়ারি ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার হন তিনি। ইলেকট্রনিক ডিভাইস, মুঠোফোন, অডিটর পরীক্ষার প্রবেশপত্র এবং নগদ ১ লাখ ৯৭ হাজার টাকাসহ সেসময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ২৩ জানুয়ারি তাকে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরের দিন উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিও তাকে বহিষ্কার করে। এরপর একই বছরের ৫ জুন ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে মাহবুবাকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার বিভাগ।

চলতি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় মাহবুবা জানিয়েছেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় ২০২৩ সালে অব্যাহতি পেয়েছেন তিনি।

হলফনামায় পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়। যেখান থেকে বছরে তার আয় ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এর মধ্যে বাড়ি ও দোকানভাড়া থেকে বছরে আয় দুই লাখ টাকা। নগদ এক লাখ টাকা, নিজের ১০ ভরি স্বর্ণালংকার এবং এক বিঘা আবাদি জমির ছাড়া আর কোনও স্থাবন সম্পদ নেই বলেও জানিয়েছিলেন।

এ ছাড়া আয়করের নথিতে নিট সম্পদ উল্লেখ করেছেন ১৭ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। যদিও হলফনামায় এই সম্পদের বিবরণ দেওয়া হয়নি।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত