জাতীয় ক্রিকেটাররা মাঠে নয় ফেসবুকে অবসরের সিদ্ধান্ত দেওয়ার উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিমের পর এবার মাহমুদউল্লাহ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বললেন ফেসবুক পোস্টে। বুধবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক পোস্টে এ সিদ্ধান্ত নেন মাহমুদউল্লাহ।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর থেকে মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ কবে অবসর নেবেন এ নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গনে। আসরের পরপরই স্টিভেন স্মিথ অবসরের ঘোষণা দেওয়ায় আলোচনার টেবিলে ঝড় ওঠে।
আরও কিছুদিন খেলে যাওয়ার ইচ্ছাটা তাই চাপা দিয়ে মুশফিকুর রহিম অবসর ঘোষণা করেন গত ৫ মার্চ। এর সাত দিন পর অবসর ঘোষণা করলেন মাহমুদউল্লাহ। এতে করে বাংলাদেশ ক্রিকেটে আনুষ্ঠানিক বাবে পঞ্চপাণ্ডবের যাত্রা শেষ হলো। এখন শুধু মাত্র মুশফিকুর রহিম টেস্ট খেলছেন। আর দেশের বাইরে থাকা সাকিব এখনও ওয়ানডেতে অবসর ঘোষণা করেননি।
নিজের ফেসবুক পেজের পোস্টে মাহমুদউল্লাহ লিখেছেন, “সর্বশক্তিমান আল্লাহর জন্য সকল প্রশংসা রেখে আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নিচ্ছি। আমার পুরো ক্যারিয়ারে যারা আমার পাশে ছিলেন সতীর্থ, কোচ, বিশেষ করে সমর্থকদের যারা আমাকে সমর্থন করেছেন তাদের ধন্যবাদ জানাই।”
মাহমুদউল্লাহ আরও লিখেছেন, “বড় ধন্যবাদ দিতে চাই আমার বাবা-মাকে, অবশ্যই আমার শ্বশুরকে এবং আমার বড় ভাই এমদাদ উল্লাহকে যিনি আমার ছোটবেলা থেকেই মেন্টর ও কোচের ভূমিকায় ছিলেন। সবশেষে অবশ্যই আমার সহধর্মীনি ও সন্তানদের ধন্যবাদ দিতে চাই যারা আমার উথান পতনে সবসময় পাশে ছিলেন। আমি জানি রাইদ (ছেলে) লাল সবুজ জার্সিতে আমাকে মিস করবে।”
শেষে লিখেছেন, “সব কিছুর শেষটা সবসময়ই সঠিক ভাবে হয়না তবুও হ্যা বলতে হয় এবং এগিয়ে যেতে হয়। বাংলাদেশ দল ও বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য শুভকামনা।”
মাহমুদউল্লাহর ক্যারিয়ারটা নাটকীয় উথান পতনের সঙ্গে অনায়াসে তুলনা করা যায়। ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে দল থেকে বাদ পড়ে হারিয়েই যেতে বসেছিলেন। কিন্তু তার জায়গা নেওয়ার মতো ব্যাটার না থাকায় আবার ফিরে আসেন জাতীয় দলে। এরপর ২০২৩ বিশ্বকাপে দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ২০২৪ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের নায়ক হয়ে দলকে দ্বিতীয় রাউন্ডে তোলেন।
এর আগে মাহমুদউল্লাহ ছিলেন আইসিসি ইভেন্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সেঞ্চুরিয়ান। ২০১৫ বিশ্বকাপে দুটি এবং ২০১৭ আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে একটি সেঞ্চুরি ছিল তার। ২০২৩ বিশ্বকাপে আরও একটি সেঞ্চুরি মিলিয়ে মাহমুদউল্লাহর আইসিসি ইভেন্টে শতকের সংখ্যা হয় চারটি।
ক্যারিয়ারে ৫০তম টেস্টে অবসর নেওয়া মাহমুদউল্লাহ ৯৪ ইনিংসে করেছেন ২৯১৪ রান। ১৬টি ফিফটির পাশাপাশি ছিল ৫টি সেঞ্চুরি। শেষ টেস্টেই সর্বোচ্চ ১৫০ রান করেছিলেন। এছাড়া ২৩৯ ওয়ানডেতে ২০৯ ইনিংস খেলা এই অলরাউন্ডার ৫ হাজার ৫৮৯ রান করেছেন ৩২টি ফিফটি ও ৪টি ওয়ানডে সেঞ্চুরিতে। এই চারটিই এসেছে আইসিসি ইভেন্টে। আর সাবেক টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক ১৪১ ম্যাচে ১৩০ ইনিংসে করেছেন ২ হাজার ৪৪৪ রান।