Beta
শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Beta
শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বিএনপি জোটে যাওয়া নিয়ে বলার সময় হয়নি : ইবরাহিম

বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম।
বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম।
Picture of খাইরুল বাশার

খাইরুল বাশার

বিএনপির জোট ছেড়ে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে জীবনে প্রথমবারের মতো এমপি হওয়ার স্বাদ পেয়েছিলেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে সংসদ বিলুপ্ত হওয়ায় সংসদ সদস্য পদ হারাতে হয়েছে তাকে।

তবে এ নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে কোনও আফসোস নেই বলে সকাল সন্ধ্যাকে জানিয়েছেন এই রাজনীতিক।

প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ায় পুরাতন রাজনৈতিক সঙ্গী বিএনপির জোটে আবার ফিরবেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, “সেটা এখনও বলার সময় হয়নি।”

জোটে আগ্রহ আছেন কি নাই—তা পরিস্কার না করে তিনি বলেন, “সকল রাজনৈতিক দল ও আন্দোলনকারীদের প্রতি শ্রদ্ধা থাকবে।”

গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসন থেকে প্রায় ৩০ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী হন ইবরাহিম। তিনি পান ৮১ হাজার ৯৫৫ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী একাদশ সংসদের সদস্য জাফর আলম পান ৫২ হাজার ৮৯৬ ভোট।

নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি পূরণ না হওয়ায় এ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপির। একই দাবিতে দশম সংসদ নির্বাচনেও যায়নি দলটি। সেই নির্বাচনে ইবরাহিমের কল্যাণ পার্টি ছিল বিএনপির জোটেই।

২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ভোটে ছিল। চট্টগ্রামের একটি আসনে জোটের মনোনয়নও পান তিনি। তবে জিততে পারেননি।

দলছুট হয়ে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়ী হলেও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে মেয়াদ শেষ করতে পারেননি সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান ইবরাহিম বলেন, “কোটি মানুষের সংগ্রাম এবং হাজারো শহীদের রক্ত সফল হয়েছে। তার জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই। আমি ব্যক্তিগতভাবে পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে ১৪ জুলাই রাত সাড়ে ৮টায় চ্যানেল আইতে ছাত্রদের বিষয়টিকে সমর্থন দিয়েছিলাম।

“হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলাম- পরিস্থিতি যেন খারাপ হতে না দেওয়া হয়। কিন্তু সরকারের অদূরদর্শিতায় সরকারি নির্মমতায় এই পরস্থিতি হয়েছিল। যার কারণে হাজার হাজার শহীদ হয়েছে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে, পঙ্গু হয়েছে।”

২০০৭ সালে তৎকালীন সেনাসমর্থিত সরকারের সময় নতুন দল ঘোষণা করে মেজর জেনারেল অব. সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। ২০০৮ সালেই নিবন্ধন পায় তার দল। পরে কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টে যুক্ত হয় কল্যাণ পার্টি। পরে বিএনপির জোটে অংশ নেয় তিনি।

বিএনপি ২০ দলীয় জোট ভেঙে দেওয়ার পর এই জোটের ১২ শরিক মিলে যে জোট গড়ে তোলে, তাতে যোগ দেয় ইবরাহিমের কল্যাণ পার্টি। এই জোট বিএনপির সরকার পতন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ‘এক দফা’ দাবির পক্ষে অবস্থান নেয়। বিএনপির সঙ্গে মিল রেখে যুগপৎ কর্মসূচিও পালন করতে থাকে। চলমান হরতাল ও অবরোধ তাদেরও কর্মসূচি ছিল।

নবম সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৭ আসনে অংশ নিয়ে প্রচারে বেশ মনও দিয়েছিলেন ইবরাহিম। তবে জামানত রক্ষার মতো ভোট পাননি তিনি। এরপর বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে জোটে চলে যায় তার দল।

অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা ইবরাহিম সকাল সন্ধ্যার আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং সামরিক বাহিনী ভূমিকা নিয়েছে, তার জন্য তাদের ধন্যবাদ এবং অভিনন্দন জানাই।

দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “তারা যেন সামরিক বাহিনীকে এবং অন্তর্বর্তীকালীন যে সরকার আসবে, সেই সরকারকে সহযোগিতা করে।”

তিনি বলেন, “আমার যারা সমালোচনা করতেন, তাদেরকেও কোনোদিন কটু কথা বলি নাই। এখনও বলব না। কারণ রাজনীতিতে সৎ অভিজ্ঞতা আগ্রহ থাকা প্রয়োজন।”

সংসদ সদস্য পদ হারানোর আক্ষেপ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমার কোনও আক্ষেপ থাকবে না। জনগণের মতামতই চূড়ান্ত মতামত। ১৯৯৬ সালে তিন মাস ছিল। ১৯৮৮ এবং ৮৯তে দেড় বছর ছিল। এবার ছয়মাস থাকল। সেজন্য আমার ব্যক্তিগত আফসোস নাই। যদিও অতি অল্প সময় হলেও আমার যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তা আমি কাজে লাগাতে চাই দেশ ও জনগণের উন্নয়ন ও কল্যাণে।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত