Beta
বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫
Beta
বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫

ট্রাম্পের শুল্কনীতি এশিয়ার জন্য হতে পারে দুঃসংবাদ

Trump_Tax
[publishpress_authors_box]

মেক্সিকো, কানাডা ও চীন থেকে আমদানি হওয়া পণ্যের ওপর চড়া শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

সোমবার সোশাল মিডিয়ায় এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, তার দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম দিন থেকেই মেক্সিকো, কানাডা ও চীনের পণ্যে ব্যাপকহারে শুল্ক বাড়ানো হবে।

গত ৫ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই তিনি সব আমদানিকৃত পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

তার এই পদক্ষেপ বড় বাণিজ্য অংশীদারদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

বিশেষ করে এশিয়ার যেসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির মাধ্যমে অর্থনীতি সচল রাখে, তারা এই শুল্কের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানিয়েছে, জাপান গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে ১৪৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে, যা দেশটির মোট রপ্তানির প্রায় ২০ শতাংশ।

২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি বাজার, যেখানে ১১৬ বিলিয়ন ডলারের পণ্য বাণিজ্য হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া সবচেয়ে বেশি রপ্তানি করে চীনে।

তবে চীনা পণ্যের ওপর ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শুল্ক দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কিছু দেশের জন্য সুবিধাও বয়ে আনতে পারে। কারণ, অনেক কারখানা চীন থেকে এই অঞ্চলের অন্য দেশে স্থানান্তরিত হতে পারে।

জুতার ব্র্যান্ড স্টিভ ম্যাডেন সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছে, তারা ট্রাম্পের শুল্ক এড়াতে চীনে তাদের উৎপাদন অর্ধেক কমিয়ে দেবে। তারা কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, মেক্সিকো ও ব্রাজিলসহ অন্যান্য দেশে পণ্য উৎপাদন করাবে।

২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ছিল চীন, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, ভারত ও জাপানের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য।

এছাড়াও দক্ষিণ কোরিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের তৃতীয় বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য ছিল যুক্তরাষ্ট্র।

মোট আমদানির ক্ষেত্রে ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বেশি পণ্য এনেছে মেক্সিকো থেকে, এরপর চীন ও কানাডা থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের আমদানির শীর্ষ ১০ উৎসের মধ্যে ছয়টি দেশই এশিয়ায় অবস্থিত।

তবে এই পণ্য প্রবাহ পারস্পরিক নয়। যুক্তরাষ্ট্রের অনেক এশীয় দেশের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে, অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র এসব দেশ থেকে আমদানি বেশি করে এবং রপ্তানি কম করে।

২০২৪ সালের প্রথম নয় মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য ঘাটতি ছিল চীনের সঙ্গে। মেক্সিকো দ্বিতীয় এবং ভিয়েতনাম তৃতীয় স্থানে ছিল, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাটতি ছিল ৯০.৬ বিলিয়ন ডলার।

জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াও বাণিজ্য ঘাটতির শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় ছিল।

গত বছর চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি কিছুটা কমেছে। তবে ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডের সঙ্গে এই ঘাটতি বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর চেষ্টা করছে বলে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি সব আমদানির ওপর শুল্ক বাড়াতে চান, যাতে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো বা দূর করা যায়।

তবে অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করেছেন, এসব শুল্ক আসলে আমেরিকানদের জন্য এক ধরনের কর হয়ে উঠবে। কারণ, আমদানির খরচ বাড়লে কোম্পানিগুলো তা ভোক্তাদের ওপর চাপিয়ে দেবে, ফলে দেশীয় বাজারে পণ্যের দাম বাড়বে।

অটো জোনের সিইও ফিলিপ ড্যানিয়েল সেপ্টেম্বরের এক আয় প্রতিবেদন বৈঠকে বলেছেন, “বাড়তি শুল্ক আরোপ করা হলে আমরা সেই খরচ ভোক্তাদের ওপর চাপিয়ে দেব।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত