তিনি একরোখা। বদমেজাজি। মন যা বলে তাই করে বসতেন ! মনু ভাকেরকে এরই খেসারত দিতে হয়েছিল গত টোকিও অলিম্পিকে। এরপর থেকে নিজেকে বদলাতে গীতা পড়েছেন মনু। মেজাজ ঠান্ডা রাখতে শিখেছেন বেহালা বাজিয়ে। কারণ শ্যুটারদের ভালো করার জন্য বরফ শীতল মাথা থাকা দরকার।
নিজেকে বদলে ফেলা বদমেজাজি সেই মেয়েটি আজ উজ্জ্বল করলেন ভারতের মুখ। প্যারিস অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ এনে দিলেন তিনি। ১০ মিটার নারী এয়ার পিস্তলে মাত্র ০.১ পয়েন্টের জন্য রুপা হাতছাড়া হয়েছে তার। ভারতের প্রথম মহিলা শুটার হিসেবে অলিম্পিক পদক পেলেন মনু। আর শুটিংয়ে অলিম্পিকে ভারতের ১২ বছরের পদক খরা কাটল তার হাত ধরে।
এমন সাফল্যের পর মনু জানালেন তার পদক জয়ের রহস্য, ‘‘আমি গীতা পড়েছি। ফাইনালের একেবারে শেষ মুহূর্তে সেই কথাই ভাবছিলাম। শুধু নিজের কাজটা করেছি। বাকিটা নিয়তির হাতে ছেড়ে দিয়েছি। গীতায় অর্জুন কৃষ্ণকে বলেছিলেন, ‘কর্ম করে যাও, ফলের আশা কোরো না।’ সেটাই করার চেষ্টা করেছি।”
গত টোকিও অলিম্পিকে শেষ দিকে পিস্তল খারাপ হয়ে গিয়েছিল মনুর। সাধারণত এত বড় টুর্নামেন্টে সবাই দুটি করে পিস্তল নিয়ে আসেন। মনুকে সেই পরামর্শ দেওয়া হলেও শোনেনি একরোখা মেয়েটি। ভরসার পিস্তলটিতে দ্বিতীয় সিরিজের মাঝামাঝি ইলেকট্রনিক ট্রিগারে সমস্যা দেখা দেয়। এরপর সেটা বদলে ফেললেও আর ফাইনালে পৌঁছানো হয়নি। কাঁদতে কাঁদতে শেষ হয় অলিম্পিক অভিযান।
টোকিও থেকে ফিরে মনু ঝামেলায় জড়ান কোচ যশপাল রানার সঙ্গে । এশিয়ান গেমসে সোনাজয়ী ভারতের সাবেক শুটারের অধীনে না খেলার ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। পরে মিটিয়ে নেন ঝামেলা।
বদমেজাজকে বশ মানাতে মনু গীতা পড়েছেন। বেহালা বাজানো শিখেছেন। এখন আর অতীত নিয়ে পরে থাকতে চান না মনু, “টোকিওতে খুব হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। সেই ধাক্কা কাটিয়ে ফিরেছি। পুরনো দিনের কথা আর মনে করতে চাইছি না। পদক জেতার জন্য আমার পরিবার ও যশপাল স্যারের বড় অবদান । এখনও অনেক ইভেন্ট আছে। সেখানেও পদক জেতার চেষ্টা করব।”